প্রেমপত্র প্রদান অতঃপর

প্রেমপত্র প্রদান অতঃপর

পাশের বাসায় নতুন ভাড়াটিয়া আসছে ।ভাড়াটিয়া
সেটা বড় কথা নয়, উনাদের একটা কলেজ পড়ুয়া সুন্দরী
মেয়েও আছে। তো প্রথম দেখাতেই তার প্রেমে পড়ে
গেলাম। তাড়াতাড়ি তার সাথে প্রেম না করতে পারলে
হয়তো অন্যের প্রেমিকা হয়ে যাবে কারন প্রথমদিনেই
তার প্রতি গলির অনেক ছেলেই ক্রাশ খাইছে।
তো আমি তার কাছে আমার মনের কথাগুলো প্রকাশ করার
জন্য একটা চিঠি লিখলাম। চিঠিটা নিজে তার কাছে
দিতে পারলাম। তাই গলির একটা পিচ্চি ছেলের কাছে
চিঠি দিয়ে বললাম,
-এই প্রেস্ক্রিপশনটা ওই বাসার নতুন ভাড়াটিয়া মেয়ের
কাছে দিবা। আর বলবা,’আপনাদের পাশের বাসার ভাইয়া
দিছে এইটা।
-আচ্ছা ভাইয়্যা।
-আর হ্যা. ওই মেয়ের কাছেই দিবা কিন্তু, আর কেউ যাতে
না যানে।
-আচ্ছা
-এই নেও ১০ টাকা । চকলেট কিনে খাবা।
তারপর পিচ্চিটা টাকা পেয়ে খুশি হয়ে চলে গেল।

পরদিন পিচ্চিটার কাছে জিজ্ঞাসা করলাম দিছো তো
ওই কাগজটা তোমার ওই আপুরে?
-হ্যা দিছি।
-গুড, কেউ দেখিনি তো?
-নাতো ।
-আচ্ছা তাহলে তুমি যাও এখন।

এর পরেরদিন ভার্সিটি খোলার কারনে এই শহর ছেড়ে
আবার ঢাকায় যেতে হবে।সাদিয়ার সাথে প্রায় প্রেমের
শুরু হতে যাচ্ছিলো আর শ্লার এই মুহূর্তেই আবার
ভার্সিটিতেতে যেতে হবে। আর মনে মনে ভয় হচ্ছিল যদি
আমার প্রেমে না পড়ে আর গলির কোনো ছেলের সাথে
তার প্রেম হয়ে যায়। তবুও এক বুক কষ্ট নিয়ে ভার্সিটিতে
আসা লাগলো। প্রথম কয়েকদিন তার কথা খুব ভাবতাম, পরে
আস্তে আস্তে একটু স্বাভাবিক হলাম।
…আজ ৪ মাস পর ভার্সিটি থেকে বাসায় আসলাম।কিন্তু
তাকে কোথাও দেখলাম না।পরেরদিন দুপূর বেলায় গলি
দিয়ে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি সে একটা লোকজনহীন
ফাকা জায়গা থেকে আমাকে হাত নেড়ে ইশারা করে
ডাকছে।আমার ভয় হতে লাগলো যদি সে চিঠির
ব্যাপারে ‘না’ করে দেই। আমি ভয়ে ভয়ে তার কাছে
গেলাম।।শরীরের ভিতর যেন ৪৪০ ভোল্টেরকারেন্ট বইতে
লাগলো।
তার কাছে যেতেই সে হাসিমুখ নিয়ে বলল,-ভার্সিটির
ছুটিতে আসছেন ভাইয়্যা?
(সাদিয়া)
-হুম-
(আমি)
-আপনাকে কয়েকদিন ধরে খুজছিলাম । কিছু কথা বলা খুব
দরকার ছিলো।
(আমি এবার নিশ্চিত হলাম সে আমার প্রেমে পড়ে
গেসে।তবুও আমি কিছু না বোঝার ভান করলাম )
-কি বলবা?
-এখানে বলা সম্ভব না। আপনার ফেবু আইডি দেন, রাতে নক
করে সব বলব।
-এইটা আমার আইডি, রিকু দেও পরে কথা বলব। (পকেট
থেকে ফোনটা বের করে)
-আচ্ছা ভাইয়া।এরপর সে চলে গেল।আমিও চলে গেলাম
তবে খুশিতে মনে হচ্ছিল একটা ড্যান্স দিই।তা আর
দিলাম না।
রাতে এফবিতে ডুকে দেখি সাদিয়ার আইডি থেকে রিকু
আসছে।সাথে সাথেই গ্রহন করলাম।২০ মিনিট পর দেখি
সে নক দিছে.
-হাই (সাদিয়া)
-হ্যালো (আমি)
-আপনাকে একটা কথা বলব কিন্তু কিভাবে যে বলব খুব
লজ্জা লাগছে।(লজ্জা নারীর ভূষন।মেয়েদের বুক ফোটে
তবুও মুখ ফোটে না।কিন্তু তাকে যে বলতেই হবে)
-আচ্ছা বল
-আপনি যে কথাটা কিভাবে নিবেন ভয় করছে।
-আরেহ বল সমস্যা নেই।কিছু মনে করবো না।
(আমার এদিকে ধর্য্যের বাধ ভাঙার মত উপক্রম)
-আমি না আপনার
,-কি? বল ।
কিন্তু অনেক্ষন দেখি সে সিন করে টাইপিং করেতেছে।
ভাবলাম মনে হয় সে প্রবন্ধ আকারে প্রেমের কথা
লিখতেছে।হঠাৎ দেখি একটা বড় মেসেজ।আগ্রহ নিয়ে
মেসেজটা পড়া মাত্রই আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে
পড়ল।সে লিখছে,,
-আমি আপনার ছোট ভাইকে ভালোবাসি।আমাদেরপ্রায়
৪ মাসের রিলেশন কিন্তু কয়েকদিন আগে তার সাথে
ঝগড়া হইছিলো।তাই সে আমার এখন ফোন রিসিভ করে
না, কথা বলে না আর আমাকে দেখলেই এড়িয়ে চলে যাই।
আপনি একটু তাকে বুঝায়বেন? সে আপনার কথা নিশ্চয়
শুনবে।একটু হেল্প করেন প্লিজ প্লিজ ভাইয়্যা।
আমি হতভম্ব হয়ে মেসেজটা পড়ে চুপ করে রইলাম।তারপর
মনের দুঃখে লিখলাম,
-আচ্ছা আমি ওকে বুঝাইয়ে বলবোনে।তুমি টেনশন কর না।
(আসলে পিচ্চিটার কাছ থেকে সাদিয়া চিঠি পেয়ে
মনে করছে পাশের বাসায় আমার ছোট ভাই চিঠি দিছে)
অতঃপর ……

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত