উইল

উইল

দুজন সফল বন্ধুর মধ্যে পুরুষত্ব নিয়ে ঝগড়া বেধে গেলো। দুজনেই আবার একটা কোম্পানির সম-স্বত্বাধিকারী। তো কে আসল পুরুষ সেটা প্রমাণ হবে, যে নিজের বৌকে বেশি পিটাইতে পারে! নিজেরাই নির্ধারণ করে নিলো।

প্রথম দিন চুল ছোট বন্ধু এসে বললো।

“আজকে আমি আমার বৌকে একটা থাপ্পড় দিছি অনেক জুরে! ”

চুল লম্বা বন্ধুও কম নয়। সেও গিয়ে নিজের বৌকে দুটো থাপ্পড় মারলো! বেচারি বৌ বললো।

“থাপ্পড় মারলা কেনো? ”

“ওলে ওলে, রাগ করে না। থাপ্পড় মারার পরে তোমার গাল কেমন লাল হয় তা একটু দেখতে চাইছিলাম! ”

বৌ আবার মাটির মানুষ। কথা মেনে নিলো। দ্বিতীয় দিন চুল ছোট বন্ধু বললো।

“আজকে আমি বৌকে একটা লাথি মারছি! ”

আবারোও চুল লম্বা বন্ধু কেনো পিছনে থাকবে? সেও গিয়ে নিজের বৌকে দুটো লাথি মেরেছে! বৌ বললো।

“কী ব্যাপার? লাথি মারলা কেনো? ”

“ওলে ওলে, রাগলে তোমাকে কেমন সুন্দর লাগে তা দেখার জন্য। তুমি কিছু মনে কইরো না। আমার লক্ষ্মী, আমার ময়না। ”

বৌ ভেবে নিলো জামাই আসলেই মনে হয় এজন্য লাথি মারছে। মেনে নিলো, কিছু বললো না।

তৃতীয় দিন চুল ছোট বন্ধু এসে বললো।

“আজকে আমি যা করেছি। তুই তা কখনোই করতে পারবি না। আমিই আসল পুরুষ। ”

“ভাই করছিস টা কী বল? তুই যা পারস, আমি তা দিগুণ পারি! ”

“আজকে আমি বৌয়ের মাথায় ব্যাট দিয়ে বারি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিছি। এখন ও হাসপাতালে। ”

চুল লম্বা বন্ধুও কম যায় না। তাঁর বাড়িতে ব্যাট ছিলো না তাই যাওয়ার সময় একটা কিনে নিয়ে গেছে। ব্যাট নিয়ে বৌয়ের সামনে যাওয়ার পর সে বললো।

“সারাদিন থাকো অফিসে। ব্যাট দিয়ে করবা কী? ”

লোকটা তখনই বৌয়ের মাথায় দিলো জুরে বারি! কপাল বেয়ে রক্ত পড়ছে বৌয়ের। লোকটা বলছে।

“ওলে ওলে, আমি আসলে তোমার মাথার রক্ত কাঁচা লাল না পাঁকা লাল তা দেখতে চাইছিলাম। আর কিছু না! রাগ করে না। আমার সোনা, আমার টুনটুনি! ”

বৌ তখন ফল কাটছিলো। হাতে ছিলো ছুরি! জামাইয়ের গলায় চালিয়ে দিয়ে সে বললো।

“ওলে ওলে, আমার বাজপাখি, কুটুমপাখি। আমি আসলে ছুরিতে ধার আছে কিনা দেখছিলাম। আর কিছু না। কিছু মনে করে না সোনা! ”

জামাইয়ের আর কিছু মনে করার সময় আছে? সে তো পরপারে চলে গেছে মুহূর্তেই!

পরক্ষণেই বৌ লোকটার চুল ছোট বন্ধুর কাছে ফোন দিয়ে বললো।

“কাজ শেষ। কিন্তু শালায় বেশি জুরেই মারছে মাথায়। রক্ত বের হয়ে গেছে। যাহোক, তোমার বৌ কী মরছে? ”

চুল ছোট বন্ধু বললো।

“দরজা খুলে দেখো। আমার বৌয়ের লাশ তোমার বাসায় পৌঁছে গেছে। ”

চুল লম্বা বন্ধুর বৌ দরজা খুলেই দেখে পুলিশ! জামাইকে খুন করার অপরাধে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে! ওদিকে চুল ছোট বন্ধু বৌয়ের কুলে মাথা রেখে বলছে।

“এরকম আরো দুয়েকটা গাধা গাধি পাইলে তো ভালোই হইতো! ”

তাঁর বৌ বড় আবদারি কণ্ঠে বললো।

“এখন কোম্পানির একমাত্র মালিক তো তুমিই না? ”

লোকটা জবাব দিলো।

“হ্যাঁ, উইলে তাই লেখা আছে। ওর আর ওর বৌয়ের কিছু হয়ে গেলে সমস্ত কিছুর মালিক আমিই! ”

“তারমানে এখন তুমি মারা গেলে সব কিছুর মালিক আমি হবো? ”

লোকটা অবাক হয়ে বললো, “ আমি মারা যাবো কেনো? ”

বৌ সঙ্গে সঙ্গেই বালিশের নিচ থেকে পিস্তলটা বের করে লোকটার কপালে গুলি করলো! শেষ বারের মতো লোকটা শুনতে পেয়েছিলো। বৌ কানের কাছে এসে বলছে “যুদ্ধে কাউকে বিশ্বাস করতে নাই!”

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত