দোস্ত আজকে সাদিয়ার বিয়ে! নিলয়ের কথাতে মাথার মধ্যে একটা চোক্রর দিয়ে উঠলো! বলে কি আজ নাকি আমার সাদিয়ার বিয়ে। হঠাৎই এই কথাটা শুনে বুঝে উঠতে পারছিলাম না কি করবো! লুঙ্গী পড়ে ছিলাম লুঙ্গীর দিকেও খেয়াল নেই। ভাগ্যিস রুমে আমি বাদে কেউ ছিলো না! সাদিয়া হলো আমার একমাত্র আপন গার্লফ্রেন্ড।
অনেক কস্টে আমার জীবনে সাদিয়াকে পেয়েছিলাম। টাকা ছিলো না বলে নিজের বাপের পকেট থেকে টাকা নিয়ে ঘুড়তে গেছি সাদিয়ার সাথে! নিজের প্যান্ট শার্ট সাদিয়াকে পড়তে দিয়েছি! এর বলদে আমি কখনো সাদিয়ার থেকে কিছু পাইনি! নিজে ফুচকা না খেয়ে সাদিয়াকে দিয়েছি! আর শুধু পড়ে থাকা টকটুকু আমি খেয়েছি! আর আজকে সেই সাদিয়ার বিয়ে!? আমাকে না জানিয়ে সাদিয়া বিয়ে করছে!? কেম্নে সম্ভব এটা!?
নিলয়ের সাথে কথা শেষ করে সাদিয়াকে দিলাম ফোন। কিন্তু বার বারই নাম্বার ব্যাস্ত দেখালো! মনে হয় আমাকে ব্লক লিস্টে ফেলে দিছে! তাহলে এই ছিলো সাদিয়ার মনে!? মনের মধ্যে যেনো এপাশের ঢেউ ওপাশে গিয়ে পড়তে লাগলো! যদিও পানি নেই মনে হয় রক্ত বারি খাচ্ছিলো! হঠাৎই কানে একটা গানের শব্দ এলো! বন্ধু যখন বউ লইয়া আমার বাড়ির সামনে দিয়া হাইটা যায় বুকটা ফাইটা যায়। গানটা শুনে আজকে বুঝতে পারলাম, মমতাজ আন্টি কতো দু:খ নিয়ে গানটি গেয়েছিলেন। রাগে বেগুনে জ্বলে চলে এলাম সাদিয়ার বাড়িতে! ইয়া বড় একটা গেট সাজানো! আবার গেটের সামনে লিখা সাদিয়া প্লাস আক্কাজ আলী! নাম শুনেই বুঝতে পারলাম এই হালায় অনেক বুড়া!! বাবা কাকাদের নাম এগুলা!!
গেট থেকে বাসায় ঢুকতেই দেখি সাদিয়া বধু সেজে বসে আছি! পাশে বসে আছে আমার সাবেক কিছু সালী! যাদের সাদিয়া সালি বলেই পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো! আজ থেকে তারা আমার সাবেক সালি হয়ে যাবে! আহা ভাবতে ভাবতেই কানে একটা গানের আওয়াজ এলো” আজ আমার গার্লফ্রেন্ডের বিয়াআআয়া! তুমি তলে তলে টেম্পু চালাও আমি উঠলেই চাক্কা টাল। গানের এই লাইনটি শুনা মাত্রই প্রিতমের মতো সাদিয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমাকে দেখে সাদিয়া আমার চোখের দিয়ে তাকিয়ে রইলো! মনে হয় কতোদিন না খাওয়া মেয়েটি! মুখখানা একদম শুকনো! আমিও সাদিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি! তখনই কে যেনো একটা গান ছেড়ে দিলো” ও মাইয়া ও মাইয়া রে তুই অপরাধী রে আমার যন্তেগড়া ভালোবাসা দে ফিরাইয়া দে! আজকে আরমান আলিফের গানের মর্মটা বুঝতে পারলাম।
আস্তে আস্তে সাদিয়ার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম” এটা তুমি কেনো করলে সাদিয়া! কি কমতি ছিলো আমার যে আমাকে ভুলে তুমি চলে গেলে! তখন সাদিয়া বলবো” আসলে আফরান হয়ছে কি কাল কোন ঘটক যেনো আমার বাবাকে একটা সুন্দর বিসিএস ক্যাডার ছেলে দেখিয়েছে! আর আমার পরিবারের সবাই তাকে পছন্দ করছে! তাই আমিও না করতে পারি নি! ছেলেটার বয়স একটু বেশি তবে কিন্তু বিসিএস ক্যাডার সে। সাদিয়ার কথাতে আমি আর কিছুই বললাম না!
বুঝতে পারলাম সাদিয়ার বিসিএস ক্যাডার রোগে ধরেছে! এ রকম তো কতো ছেলেরি এই বিসিএস ক্যাডারের জন্য প্রেমটা কলনালিশ হয়ে গেছে! তাই সাদিয়ার সাথে কথা না বলে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম।
এমন সময় পিছে থেকে একজন এসে জিজ্ঞেস করতেছে ” আচ্ছা ভাইয়া আপনি কি বর!? তোখন আমি তার কথায় বললাম” না ভাইয়া আমি সেমিফাইনালে আউট হয়ে গেছি! তাই আজকে ফাইনাল দেখতে আসছি! তবে আম্পায়ার টা কথায় বলতে পারবেন? আমার কথাতে ছেলেটি মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো” ভাইয়া আম্পায়ার কে!? আমি বললাম এই বিয়ের ঘটক সাহেব। তখন ছেলেটি আমাকে ঘটক সাহেবকে দেখিয়ে দিলো!
ঘটক সাহেব কে দেখি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পানি খাচ্ছে! পিছে থেকে গিয়ে পাছার উপর দিলাম একটা লাতঠি! আমার লাতঠি খেয়ে ঘটক খেলো দুই উল্টান!! যেই না আরো একটা দিতে যাবো তখনই দেখি ঘটক টা হলো আমার বাবা!! আব্বা লাতঠি খেয়ে চোখ বন্ধ করে পরে আছে! এখনো মনে হয় আমাকে দেখে নাই! আব্বাকে রেখে দিলাম এক দৌড়!! সাদিয়া কেন এখন নাদিয়া আসলেও এই দৌড় কেউ থামাতে পারবে না! কস্ট একটাই আমার প্রেম আমার বাপেই শেষ করে দিলো!?