হার্জন

হার্জন

ফুফাতো ভাইয়ের বিয়েতে খাজিন্দারের দায়িত্ব পেয়েছিলাম। অর্থাৎ যারা মেহমানদের খাওয়া দাওয়া করায়৷ তো সেই হিসেবে কপাল গুনে আমার দায়িত্ব পরেছিলো মেয়েদের রুমে। কি এক্টা ভাবরে আমার তালোই কইলে বিশ্বাস করবেননা। কিছু সময়ের জন্য হলেও মনে হয়েছিলো, ‘আজ আমি একা নাগর, আমার সামনে একঝাঁক প্রেমিকা সাগর।’

চোখ বুলিয়ে মেয়ে গুলোকে দেখছিলাম একেক করে। সবাইকে স্মার্ট লাগছে। লবন, পানি, সালাত দেওয়া আমার দায়িত্ব। সবাইকে খাবার দেওয়া হয়েছে। আন্টি টাইপ মহিলারা গপাগপ খাচ্ছে আর ইয়াং পুংটামি করা মাইয়া গুলো এমন ভাবে খাচ্ছে মনে হচ্ছে বাদাম খাচ্ছে। লিপস্টিক বাঁচাতে তাদের কতই ফন্দি। মনডায় চায় সবগুলারে ধইরা পাখির খাঁচায় করি বন্দি। একটা মেয়ে ন্যাকামি করে ডাক দিলো….

-অ্যাইইই যে পানিওয়ালা ভাইয়া একটু অ্যাই দিকে আসেনতো।

উরিব্বাশ, কি স্টাইলে কথা৷ এক্কেরে জগ দিয়া ঢিল মারুম খাচ্চুন্নি। মনের খায়েশ মনে রেখে চলে গেলাম মেয়েটার কাছে। বললাম….

–কি লাগবে?
-সালাত আছেনা, সেখান থেকে একটু হশা দিন। আমি অবাক হয়ে গেলাম, হোয়াট হশা? বললাম…..
–হশা কি?
-আরে সালাতে যে থাকে!
–শসা, গাজর, টমেটো এসবই থাকে।
-ঐতো শসা দিন।

আমি শসা দিলাম। আমার মাথায় ঢুকলোনা এত স্মার্ট একটা মাইয়া শসাকে হশা বলল। যাজ্ঞে ব্যপারনা, খালি কলসি বাজে বেশি। এক মেয়ের কাছে গিয়ে বললাম….

–খান বেয়াই সমস্যা নাই, তরকারি লাগবে আরো দিব।
-আমরা কি ভাইসা আইছি? আমগোরে দিবেননা? (পাশের মটু মেয়েটা)
–হ্যাঁ হ্যাঁ সবাইকেই দিব, আপনাকেও দিব। (আম)

বলেই বিনিময় হাসি দিলাম। বেয়াই বলা মেয়েটার উপর তৎক্ষনাৎ ক্রাশ খেয়ে বসলাম। মনে মনে বললাম…’ললনা তুম মেরা জানুহে, কলিজা হে, ফুসফুস হে। আর তোমার পাশের মটু ও খাচ্চুন্নি হে, বানরী হে।’খাওয়াদাওয়ার শেষে পান দেওয়ার দায়িত্বটাও আমি নিলাম। সেই ক্রাশকে খুঁজছি পান দেওয়ার জন্য। পেয়েও গেলাম, কাছে গিয়ো বললাম….

–এই নিন বেয়াই পান খান।
-আমি পান খাইনা।
–আরে আমার হাতের মিষ্টি পান, খাইলে মজা৷ খাইয়া লন।

মেয়েটা আর কিছু বললনা, মুচকি হেসে পান নিলো৷ তখনই একটা ছেলে এসে মেয়েটির পাশে দাঁড়ালো বলল চলো। মেয়েটি সাথেসাথেই বলল….

–বেয়াই চলে যাই, থাকেন।

কিছু বলার আগেই তারা বাইকে করে গেলো৷ বুঝলাম এরা স্বামীস্ত্রী। এক্কেবারে বিবাহিত ছ্যাঁকা খেলামরে তালোই। এই সমস্ত ডিপ্রশনে মানুষ সুসাইড খায়। আমি সুসাইড খেলামনা। হশা বলা মেয়ে টা পাশে আসলো, বলল…..

-ভাইয়া আপনাদের টাট্টি টা কোথায়?
–টাট্রি মানে?
-আরে টয়লেট কোথায়?
–টাট্টি কে টয়লেট বলেন?
-জি কোথায় বলুন?
–ঐ ঘরটার পিছে গেলেই পাবেন যান হার্জন।
-মানে?
–এইযে টয়লেট কে টাট্টি বললেন সেই হিসবে হাগু বিসর্জন দেওয়ার জায়গাকে আনি হার্জন বললাম। টাট্টি, হার্জন একইতো।

মেয়েটি কথা না বাড়িয়ে রাগ করে দ্রুতই চলে গেলো। প্রকৃতির ডাক বড়ই অদ্ভুত। কেউ দেরি করতে চায়না। নতুন শব্দ শিখলাম এই বেশ ‘টাট্টি।’ আর আবিষ্কার করলাম, ‘হার্জন।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত