স্বপ্নের বাধ্য বর

স্বপ্নের বাধ্য বর

সকাল বেলা ই দেখি আমার লক্ষী বরটা দুই ব্যাগ বাজার নিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।আমি তো খুশিতে গদগদ।যাক এই মাসের খরচের টাকা থেকে আমি কিছু টাকা সরিয়ে রাখতে পারবো।বাঁচবে কিছু টাকা আমার। কিন্তু ব্যাগ খুলেই মুখ টা আমার বাংলার পাঁচের মত হয়ে গেলো।ওমা একি? এত আলু কেন?আর ইয়া বড় এক ইলিশ মাছ।

-ওই তুমি জানোনা আমি ডায়েটে আছি?আলু খাওয়া নিষেধ আমার।এত আলু কেন এনেছো?
-আলু তো আমি আমার জন্য এনেছি।আলু আমার কত্ত পছন্দ জানোনা?আলুর ভর্তা,আলুর দম,আলু ভাজি,আলু ফ্রাই।ওহ কি ইয়ামি।

-আর ইলিশ মাছ এনেছো কেন?জানোনা ইলিশ মাছ খেলেই আমার চোখ নাক লাল হয়ে যায়?মুখ টা ফুলে এত্ত বড় হয়ে যায়।আর আহ কি চুলকানিই না শুরু হয়। তবুও কেন এনেছো শুনি?

-আরে বাবা,তোমার জন্য কি আমি ইলিশ মাছও খেতে পারবোনা? মনে মনে ভাবলাম নিশ্চয়ই অন্য ব্যাগে আমার পছন্দের কিছু এনেছে। অপর ব্যাগ খুলতেই দেখি দুই দুইটা হাঁস।

-ওই মিয়া,হাঁস আনছো কেন তুমি?জানোনা আমি হাঁসের মাংস খাইনা?
-তোমার জ্বালায় দেখছি নিজের পছন্দের কিছুই খাওয়া যাবেনা।হাঁস তো আমি আমার জন্য এনেছি।ঝাল করে রান্না করে খাবো।উফ কি যে মজা।

লাফ দিয়ে বরের হাত টেনে ধরে বললাম, এক্ষুণি চল আমার সাথে, বরকে নিয়ে গেলাম বাজারে,গিয়ে দুই কেজি গরুর মাংস দুইটা মুরগি,এক কেজি পোলাওর চাউল কিনে নিয়ে আসলাম। সবই বরের টাকায়। আহ কি শান্তি! এ মাসে দেখছি আমার আর খরচ ই হবেনা। বরকে বাসায় এসে বললাম,সব কিছু আজ তুমি রান্না করবে।আর আমি পায়ের উপর পা তুলে বসে বসে খাবো। বর আমার বাধ্য স্বামীর মত মুরগীর রোস্ট,গরুর মাংস,পোলাও রান্না করে আমার সামনে নিয়ে আসলো।

আমি তাকে অর্ডার করলাম,এবার আমাকে মুখে তুলে খাইয়ে দাও।আর খাওয়াদাওয়া শেষ করেই আমরা ঘুরতে বের হবো। আমার বাধ্য বরটা রানওয়ালা রোস্ট টা আমার মুখের সামনে ধরে বল্লো হা করো।হা করো।আর আমিও তাড়াতাড়ি করে হা করলাম যেই না আমি রোস্টটাতে কামড় দিবো আর আম্মুর ডাক। আর কত ঘুমাবি কুহু? কত বেলা হয়েছে খেয়াল আছে? উঠ তাড়াতাড়ি।নইলে কিন্তু পানি ঢেলে দিবো।

আমি এখন দু হাত দিয়ে চোখ ডলতে ডলতে বিছানায় বসে ভাবছি, কই আমার মুরগীর রোস্ট? আর কোথায় গেলো আমার বাধ্য বর। আর মনে মনে বলছি,আম্মুউউউ তুমি আমায় আরেকটু পরে ডাকতে পারলেনা? না হলো আমার বাধ্য বরের হাতে মুরগীর রোস্ট খাওয়া।আর না হলো আমার স্বপ্ন-বরের সাথে ঘুরতে বের হওয়া।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত