বাবা ক্যামেরা কিনে না দিলে আমি পরীক্ষা দিবো নাহ।
-তুই যদি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করো,তাহলে তোকে ক্যামেরা কিনে দেবো।
-আচ্ছা মনে থাকে যেন।
আলবি বাবা’র কাছে কথা দিছে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে দেখাবে। দিনরাত এক করে সারাদিন পড়াশুনা করেছে সে। সকালবেলা যথাসময়ে পরীক্ষা হলে পৌঁছায়। পরীক্ষা হলে আলবির পিছনের সিটে একটা মেয়ে বসছিলো। মেয়েটা দেখতে সুন্দর আর একটু হাই প্রোফাইলের। কিন্তু পড়ালেখার বেলায় একেবারে শুন্য।অনেক রিকুয়েস্টের পর আলবি সাহায্য করে। মেয়েটিকে সাহায্য করার কারনে আলবি বাবা’র আশানুরূপ রেজাল্ট করতে পারে নি।
হালকা বাতাস বইছে,গাছের সবুজ পাতাগুলো নড়ছে। আলবি বাসার ছাদে বসে আছে,মন খারাপ করে।নীল রঙের জিন্সটির পকেট থেকে নিকোটিনের বক্স বের করে ধোঁয়া ছাড়তে লাগলো। দিনকাল গুলো উদাসীন ভাবে কাটাচ্ছে। আলবির উদাসীনতা ভাব দেখে বাবা টাকা দেয় ক্যামেরা কেনার জন্য।বাবার দেয়া আর নিজের জমানো কিছু স্বল্প পরিমান টাকা দিয়ে কোনো রকম একটা ক্যামেরা আর লেন্স কেনে।
বিকেলবেলা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে আর নতুন ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলছে। কলেজে ওই মেয়েটিকে মনে মনে আলবি পছন্দ করতো। মেয়েটির নাম ছিলো প্রভা। আলবি প্রভাকে ভালবাসে কিন্তু আজ অবদি বলতে পারে নি তার ভালবাসার কথা। ইদানীং কলেজে ভালোই নাম আলবির। অপরিচিত মানুষ গুলো নিজে নিজে এসে পরিচিতো হয়। এমনকি প্রভা বিভিন্ন বাহানা দিয়ে আলবির সাথে কথা বলে। বেশ ভালো কাটাচ্ছে ওর দিনগুলো প্রভার সাথে। হঠাৎ একদিন প্রভার ফোন আসে।
প্রভা:-হ্যালো আলবি!ক্যামেরা টা নিয়ে একটু বাসার ছাদে আসতে পারবা।
আলবি:-কখন?
প্রভা:-বিকেলবেলা।
আলবি:-আচ্ছা ঠিক আছে।
ছবি তোলার জন্য প্রভা খুব সুন্দর করে রেডি হয়ে ছাদে আলবির জন্য অপেক্ষা করছে।যথাসময়ে আলবি ছাদে আসে, প্রভাকে দেখে স্তম্ব হয়ে যায়।প্রভাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে। বিভিন্ন দিক থেকে আলবি প্রভার ছবি তুলছে। ছবি তুলতে তুলতে একবারে ছাদের প্রান্তে এসে পরে প্রভা।হঠাৎ পা ফোসকে পরে যেতে থাকে প্রভা। প্রভাকে বাঁচাতে গিয়ে আলবির হাত থেকে ক্যামেরাটা নিচে পরে যায়।নিচে পরার সাথে সাথে ক্যামেরাটা ভেঙে যায়।কিছুদিন মন টা খারাপ থাকে।
ধীরে ধীরে নিজেকে গুছিয়ে নেয়। কলেজে আসে, কিন্তু আগের মত চেনা মানুষ গুলোর কাছে অচেনা হয়ে গেলো আলবি। সেই অচেনা মানুষদের ভিড়ে প্রভা ছিলো একজন। প্রায় সময়ই আলবিকে ইগনোর করে প্রভা।শেষমেশ বন্ধুত্বটা ভেঙে যায়,আর আলবির ভালবাসা মনেই থেকে যায়।