ভীতু বউ

ভীতু বউ

কোলবালিশ জড়িয়ে শুয়ে আছি। আমার স্ত্রীর নাম সিদরাত। ও পাশের রুমে শুয়ে আছে। নিজের বউ যদি এই গুলা করে ক্যামনে কি? আগে কোলবালিশ নিয়ে ঘুমালে তেমন কিছু হত না, বউয়ের অভাব কিছুটা দুর হয়ে যেত। আর বউ থাকা সত্ত্বেও যদি কোলবালিশ নিয়ে ঘুমাতে হয় ব্যাপারটা কেমন দেখায়।

চোখে ঘুম নেই। সকালে ওর সাথে টুকটাক ঝগড়া হয়েছে। তাই পাশের রুমে শুয়ে আছে। আসলে এই রকম একটা ঘটনা ঘটে যাবে আমি ভাবতেও পারিনি। এমনিতে চোখে ঘুম আসছে না। একবার ভাবলাম ওকে গিয়ে আবার স্যরি বলি। অন্তত ৮০ বারের চেয়ে স্যরি বলা হয়েছে। কোন কাজ হয়নি। তাই আর গিয়ে স্যরি বলতে ইচ্ছে হয়নি।

চোখে যখন ঘুম আসছে না তখন মোবাইলটা নিয়ে ফেবুতে লগইন করে দেখি সিদরাতও নেটে আছে। ভাবলাম ওকে নক দেই। আর কিছু না ভেবে যেই মেসেজে কিছু লিখে নক করতে যাব কিন্তু ব্যাক স্পেস চেপে আবার মুছে দিলাম। প্রায় আধাঘন্টা নেটে থাকার পর লগ আউট করে ফেললাম। কয়েকটা স্ট্যাটাস পড়তেই চোখে ঘুম চলে আসছে। কথায় আছে ঘুম না আসলে পড়তে বসো, ঘুম না ঘুমের রাজা সহ হাজির হয়ে যাবে। চোখটা যখন একটু লাগল ঠিক তখন দরজার ভিতরে সিদরাত ঢুকে আমার সামনে এসে বলল “আমি নেটে ছিলাম চোখে দেখোনি? আমাকে দেখেও নক করো নি কেন? আমি কি বলব কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি বললাম…

“তুমি যখন দেখছো। তুমিই বা নক করো নি কেন?
“রাগটা কি আমি করেছি নাকি তুমি করেছো?
“তুমি
“তাহলে রাগ ভাঙ্গাবে কে?
“আমি তো সেই কখন থেকে চেষ্টা করেই যাচ্ছি। কোন সফল হইনি।

ও কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বিছানায় ঝট করে উঠে শুয়ে বলল “চুপ চুপ একদম চুপ। রাগ ভাঙাতে ব্যার্থ হয়েছো তাই এটার শাস্তি আমি এখানে ঘুমাবো। আমি শুধু হাসলাম। সত্য বলতে কি ও রাতে একা ঘুমাতে পারে না। ওর নাকি ভয় করে। ও আবার বলল “এই ছুবে না একদম ছুবে না।

আমি আবারও হাসলাম। আমি তো কিছুই করছি না। ওকে ছুইও নি। ওকে ছুবো না মানে কি? ও নিশ্চয় ইশারা দিচ্ছে ওকে ছোয়ার জন্য। আমি আর কিছু না ভেবে ওর কোমড়ে হাত রাখতেই বলল “চালাক হয়ে গেছো তাই না? উল্লুক কোথাকার। এইটা বলেই বেড সুইচটা অফ করে দিল। লাইট অফ করতেই পুরো রুম অন্ধকারে তলিয়ে গেল। আমি একটু হেসে মনে মনে বললাম যাক অবশেষে আসল কোলবালিশ পাওয়া গেলো…

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত