গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার এক গ্রামের দর্জির নাম শাহিন।পেশায় সে একজন দর্জি হলেও অধিকাংশ সময়েই সে বিভিন্ন রকমের নেশা করে বেড়ায়।রাত ভর নেশা করে বাড়ি ফেরা তার নিত্য দিনের অভ্যাস। গ্রামের বাজারে তার একটা দর্জির দোকান ছিল এবং সেখানেই সে কাজ করতো। কাজ শেষে সেদিনও সে নেশা করে বাড়ি ফিরছিল,পুরো অন্ধকার রাস্তা। শাহিন কিছুটা মাতাল হয়ে রাস্তায় হাটছে।হঠাৎ সে দেখতে পায় একটা ঘোড়া পিছন থেকে জোড় বেগে ছুটে আসছে, আবার কিছুক্ষণ পর সে দেখল একটা কুকুর তার পাশে উচু গলায় ঘেউ ঘেউ করে ডাকছে!! শাহিন চমকে উঠলো।
সে ভাবলো হয়তো সে আজ একটু বেশিই নেশা করে ফেলেছে তাই এসব আবল তাবল দেখছে,কিন্তু না!! শাহিন আবার সামনের দিকে তাকাতেই দেখতে পেল একটা কালো কুচকুচে বিড়াল তার দিকেই এক জঘন্য ভয়ানক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে!! শাহিন এবার সামান্য ভয় পেলেও এক লাথি দিয়ে বিড়াল টাকে সরিয়ে দেওয়ার বৃথা চেষ্টা করল কেননা তার লাথি দেবার পূর্বেই বিড়াল টা উধাও হয়ে গেল! শাহিন আর কিছু না ভেবেই বাড়ির উদ্দেশ্যে দৌড় দিল।সেই রাতেই শাহিন তার সাথে ঘটা এই পুরো ঘটনা তার পরিবারেকে জানায়।তবে কিছুদিন পরেই এর চেয়ে আরো ভয়ানক এবং নির্মম ঘটনা ঘটে শাহিনের সাথে।পরের দিন সকালেই শাহিন কাজের উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যায় তবে সে আর ঘরে ফিরে আসেনি।
টানা তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর শাহিনের মরদেহ পাওয়া যায় তাদের গ্রামেরই এক খালের পানিতে!! দীর্ঘক্ষণ পানিতে থাকার দরুণ শাহিনের লাশটা বিকৃত রুপ ধারণ করেছিল।তার পুরো শরীর ফুলে উঠেছিল।হাতে পায়ে নানান ধরণের পোকা মাকড় এবং মাছের কামড়ের চিহ্ন ছিল।শরীরের রংও অনেকটা বদলে গিয়েছিল।হাত পা পুরো না পচলেও তা পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিল।একটা লাশ পচা গন্ধে পুরো এলাকাটা ভারী হয়ে উঠেছিল।সব মিলিয়ে তা ছিল এক ভয়ানক দৃশ্য যা দেখতে হয়েছিল পুরো গ্রামবাসীকে।বিশেষ এক পন্থায় লাশটাকে পানি থেকে তোলা হয়।
তবে পুলিশ লাশটির ময়নাতদন্তের জন্য রাজি হয়নি অথবা লাশটির ময়নাতদন্তও করা হয়নি বলে জানা যায়।এই ভয়াবহ দৃশ্যের পাশাপাশি শাহিনের পরিবারের করুণ আহাজারিও দেখেছিল গ্রামবাসী তবে তাদের শান্তনা দেওয়ার মত কোনো বাক্য কারো মুখে ছিল না।কারণ এটা কি খুন নাকি আত্মহত্যা তা জানা ছিল না কারো।পুরো ঘটনাটাই একটা বিরাট বড় রহস্য ছিল আর যেই রহস্যের পর্দা আজও উন্মোচন হয়নি।শাহিনের সেই ভয়াবহ লাশের বিকৃত দৃশ্য আজও অনেকের মনে ভয়ের এক শিহরণ জাগিয়ে তোলে তারই একজন “তুষার ভাই”যার কাছ থেকেই গল্পটি শোনা।আন্তরিক কৃতজ্ঞতা তার প্রতি।
(সমাপ্ত)