প্রাকট্রিক্যাল থেরাপী

প্রাকট্রিক্যাল থেরাপী

অফিস থেকে বাসায় এসে দেখলাম, নীলা বাসায় নাই! বারবার ফোন দেওয়া সত্ত্বেও বউটা আমার ফোন রিসিভই করছেনা! ম্যাসেজ পাঠাইছে, “তোমার মতো আনরোমান্টিক আর ঘুমপাগল একটা মানুষের সাথে আমার সংসার করা পসিবল না, আমি বাড়িতে চলে আসছি!”

আজব মাইডি! আমি নাহয় একটু বেশিই ঘুমাই, তাই বলে কি আমাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে? বিয়ের মাত্র দুইমাস হইসে, এখনই এই অবস্থা! এই মেয়ের সাথে সংসার করতে গেলেতো আমার ঘুমটাকেই বাদ দিতে হবে! উঁহু, এখন এইসব চিন্তাভাবনা করে লাভ নাই।এখন নীলাকে পটিয়ে পাটিয়ে যেভাবেই হোক বাসায় নিয়ে আসতে হবে!

শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতেই শ্বশুরের মুখোমুখি হলাম। আমার শ্বশুরকে আমি মোটেও ভয় পাইনা। যদিও আমাদের প্রেম চলাকালীন সময়ে উনাকে অনেক ভয় পেতাম!কিন্তু, কোন এক অজানা কারণে আমার মনে হয়েছে, এই শ্বশুরকে আমার ভয় না পেলেও চলবে!

আমার ধারণাটা নিছক মিথ্যা নয়! উনি আমাকে দেখেই খুব সুন্দর একটা হাসি দিয়ে ড্রয়িংরুমে বসিয়ে আমার কুশলাদি জিজ্ঞেস করতে লাগলেন! একটু পরেই নাস্তা নিয়ে আসলো শ্বাশুরী! আমি শুধু নীলাকেই খুজতেছি! কিছুক্ষণ পরে সে’ আসলো! আমার দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়েই আমাকে ভস্ম করে দিতে চাইলো! কিন্তু, আমি ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করতে লাগলাম! একটা হাসিহাসি লুকিং দিয়ে বউকে রাগলে এতো সুন্দর দেখায় ক্যানো, এইটাই ভাবতে লাগলাম।

সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে অনেকক্ষণ আগেই। শুয়ে শুয়ে ফেসবুকিং করতেছি! প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে! তবুও জেগে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আর বেশিক্ষণ হয়তো পারবোনা! আরও দুইঘণ্টা আমাকে জেগে থাকতেই হবে, নাহলে আর বউকে আমার বাসায় নেওয়ার স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে যাবে!

নীলা ঘরে ঢুকতেছে! আমি নীলার পায়ের শব্দ শুনলেই বুঝতে পারি! আসলে আমি অনেক বুদ্ধিমান! কিন্তু নীলা আমাকে ভাবে, আমি আস্ত একটা গর্দভ! কিন্তু, আমি মোটেও ওর ধারণার মতো নই! হঠাৎ করেই কারেন্ট চলে গেলো! অন্ধকার হয়ে গেছে! নীলা অন্ধকারকে দারুণ ভয় পায়!

দারুণ একটা বুদ্ধি এসেছে মাথায়! শোয়া থেকে কোন শব্দ না করেই উঠে দাঁড়ালাম! নীলা দরজার কাছ থেকে চলে যাচ্ছে,। উঁহু, যেতে দেওয়া যাবেনা! পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেই রোমান্টিক স্টাইলে একটা চুমু খেলাম নীলার গালে! আমি শিওর, চুমুটা বেশ ফলদায়ক হবে! আমি যে, মোটেও আনরোমান্টিক নই, সেটাই প্রমাণ হয়ে যাবে!

হঠাৎ বাম গালে মোক্ষম একটা চড় খেয়ে মাথা ঘুরে উঠলো! দুইটা দাঁত আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে মেবি!
শ্বাশুরীর বজ্রকন্ঠ শুনতে পেলাম, “হারামজাদা, নিজের বউরেও চিনিসনা!” বাকিটুক ইতিহাস।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত