দাগ

দাগ

আমার প্রাক্তন প্রেমিকার সাথে পতিতালয়ে দেখা; ওকে দেখে খুব স্নিগ্ধ লাগছিলো। ‘শাড়ি বেশ কুচি দিয়ে পরা শিখে গেছো দেখছি।’ ও আলতো করে হেসে দরজাটা বন্ধ করে দিলো। বিছানায় বালিশটা ঠিক করতে করতে বললো, ‘শুধু শাড়ি না এখন পুরুষ মানুষকেও কুচি দিয়ে পরতে পারি।’ শার্টের একটা একটা বোতাম খুলছিলাম আর দেখছিলাম ওকে। আমার সামনে দাঁড়িয়ে বলল, ‘চুল কি খোঁপা করেই রাখবো নাকি ছেড়ে দিবো?’

আমি ওর হাতটা ধরে কাছে টানলাম। এই হাতে আজ কত পুরুষের গন্ধ। কোন সাড়া নেই। নেই কোন আহ্লাদ। বললাম, ‘চোখে গাঢ় করে কাজল দাও।’ ও আমার হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলল, ‘আমি চোখে কাজল পরতাম প্রেমিকের জন্য। খদ্দরের জন্য আমি কাপড় খুলি।’

ঘরটা অনেক এলোমেলো। কোথাও যত্নের ছাপ নেই। দেয়ালে পানের পিচকারি। কিছু কিছু জায়গায় লিপস্টিকের দাগ। আমি শার্ট খুলে ওর সামনে দাঁড়িয়ে মুখটা দুই হাতে আঁজলা ভরে ধরলাম। ও আমার হাত ওর বুকে নিয়ে বলল, ‘বাসায় গিয়ে স্ত্রীর মুখ ধরবেন। এখানে কাজ করতে আসছেন। কাজ করবেন চলে যাবেন। এক ঘন্টার জন্য আমি আপনার। যা ইচ্ছা করেন।’

আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম। ওর চুলে কেমন যেন একটা গন্ধ। সেই আগের মতো মিষ্টি গন্ধ নেই। একবার ওকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার সময় জড়িয়ে ধরে ওর ঘাড়ে নাক গুঁজেছিলাম। সেই থেকে ওর চুলের গন্ধ নেওয়ার নেশা হয়ে গিয়েছিলো আমার। আজ সেই গন্ধ নেই। এমন সময় ওর ফোনে কল আসলো, ‘জি বলেন… আচ্ছা দেড় ঘন্টা পরে আসেন… জি আসেন… কাজ করার আগে টাকা খালাকে দিবেন তাইলেই হবে… আমি এখন কাজ করতেছি… আসেন আপনি।’

কথা শেষ করে ও বিছানায় গিয়ে শুয়ে গেলো। বুকের উপর থেকে আঁচলটা ফেলে দিয়ে আমার দিকে একটা নিরোধের প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে বলল, ‘কাজ শুরু করেন। আমার কাস্টমার আসতেছে।’ আমি শার্টটা গায়ে দিয়ে বোতাম লাগাতে লাগাতে বললাম, ‘আমি যাই।’ ও শোয়া থেকে উঠে বসে বললো, ‘একটা জিনিস দেখবেন?’ আমি বললাম, ‘কি?’ ও ব্লাউজের দুইটা বোতাম খুলে ব্লাউজটা একটু সরাতেই দেখতে পেলাম একটা কালচে দাগ। সারা শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেলো।

একদিন ওর বাসায় গিয়েছিলাম। কেউ ছিল না বাসায়। খালি বাসায় ওকে পেয়ে মাথায় শয়তান জেগে উঠেছিলো। পাগলে পাগলে ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছিলো সব। ওর বুকে দাঁত দিয়ে কামড়ে দিলাম। ও ব্যথায় কুঁকড়ে গেল। কিন্তু আমাকে জড়িয়ে কানের পাশে ফিসফিস করে বলল, ‘আমার বুকে যেখানে কামড় দিয়েছ। এখানে দাগ বসে যাবে। এই দাগ আমি সারা জীবন রেখে দিবো!’ আমি ওর চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞাস করলাম, ‘কি করে রাখবে? কয়দিন পরেই তো মিলিয়ে যাবে? সারাজীবন আমিই কামড় দিবো এইখানে। আর কেউ যদি কামড় দেয় খুন করে ফেলবো।’ ও শুধু বলল, ‘ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি।’

আমার কেমন যেন সব এলোমেলো লাগছিলো। সবকিছু চোখের সামনে ভাসছে। সব কথা কানে বাজছে। ও ব্লাউজের বোতাম লাগিয়ে আঁচল দিয়ে বুক ঢেকে আমার সামনে দাঁড়িয়ে বলল, ‘আমি কথা রাখছি। বুকের এইখানের দাগ আমি মিলিয়ে যেতে দেই নাই। আমার কাস্টমারদের দিয়ে এখানে আজো কামড় দেওয়াই। দাগ একটু হালকা হলেই কামড় দেওয়াই। আমার কথা আমি রাখছি। আপনার কথা রাখবেন না? খুন করবেন না আমাকে?’

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত