ভালোবাসা

ভালোবাসা

অনেক বছর প্রেম করার পর উপায় না পেয়ে বাবা মায়ের পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করা মেয়েগুলোকে আমি ঘৃণা করি না। বরং তাদের সন্মান করি এই জন্য যে তারা তাদের প্রথম ভালোবাসার সন্মান রেখেছে। প্রথম ভালোবাসা মানে বাবা-মাকে বুঝিয়েছি।

আমি ঘৃণা করি সেই মেয়েদের যারা কারনে অকারনে নিয়ম মাফিক প্রেমিক বদলায়।বান্ধবী মহলে গর্বের সাথে বলতে থাকে অমুক গাধাটাকে ভাঙিয়ে খেয়েছি,তমুক গাধাটাকে ছেড়ে দিয়েছি। আবার অনেক মেয়ে আছে যারা প্রেমিককে ভাঙিয়ে খেয়ে বড়লোক জামাই দেখে বিয়ে করে নেয়। এদের আমি শরীর বেঁচে পেট চালানো পতিতাদের সাথেও তুলনা করিনা। তবে কথা হচ্ছে অনেক বছর প্রেম করার পর উপায় না পেয়ে বাবা মায়ের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করা মেয়েগুলো কেনো ছলনাময়ী নয়। এখানে একটা ব্যাপার বুঝে নেয়া উচিত সেটা হচ্ছে, “উপায় না পেয়ে”!!

একটা মধ্যবিত্ত ঘরের বেকার ছেলে,যে কিনা কোনো ভাবেই নিজের পায়ে দাড়াতে পারছে না। প্রেমিকের অবস্থা দেখে প্রেমিকার পরিবারও মেনে নিচ্ছে না।ওদিকে তার প্রেমিকা একের পর এক বিয়ের কাজ ভেঙে দিচ্ছে বিভিন্ন অজুহাতে! কিন্তু কত দিন? কত বার? একটা সময় মেয়েটাকে যেকোনো একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হবে!এক্ষেত্রে মেয়েটির কাছে ৩টি পথ খোলা থাকে। প্রথমত বাবা মায়ের সন্মান নষ্ট করে ভালোবাসার মানুষের হাত ধরে পালাতে হবে। দ্বিতীয়ত বাবা মায়ের পছন্দ মতো ছেলেকে বিয়ে করে প্রেমিকের কাছে ছলনাময়ী হতে হবে। তৃতীয়ত বাবা-মা আর ভালোবাসাকে জিতিয়ে দিয়ে নিজেকে শেষ করতে হবে।

এক্ষেত্রে সব থেকে ভালো সিদ্ধান্তটা হচ্ছে বাবা মায়ের পছন্দ মত ছেলেকে বিয়ে করে নেয়া। এতে করে কাউকে তার প্রথম ভালোবাসার সাথে বেঈমানী করতে হবে না।কাউকে তার প্রথম ভালোবাসাকে কষ্ট দিতে হবে না। জীবনটা রোমান্টিক মুভি কিংবা রুপকথার গল্প নয় যে ইচ্ছা হলেই গাছ তলায় রাত কাটিয়ে দেয়া যাবে।কল্পনার সংসার কল্পনাতেই ভালো মানায়, বাস্তবে তা ভীষন শক্ত! “তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না” কথাটা যখন “তোমাকে বিয়ে করা ছিলো আমার জীবনের সব থেকে বড় ভুল” টাইপ হয়ে যাবে তখন পবিত্র ভালোবাসা পাপোষ হয়ে পায়ের নিচে পিষে মরবে। তাই কল্পনায় সংসার আঁকতে আঁকতে হাত ধরে পালিয়ে যাবার আগে সুস্থ মস্তিষ্কে ভালোবাসাটাকে আকাশে উড়িয়ে দাও।ভালোবাসতে হলে একই বিছানায় শুয়ে থাকার প্রয়োজন হয় না,দূর থেকেও ভালোবাসা যায়!!

হয়তো একটা প্রশ্ন আসবে তাহলে সম্পর্কে যাবার আগে কেনো ভাবেনি।আসলেই কি এত ভেবে সম্পর্ক হয়।ভবিষ্যতে ভেঙে যাবে ভেবে কেউ সম্পর্ক গড়ে না।বিয়ের মতো শক্ত একটা বন্ধনও অনেক সময় ভেঙে যায়।কিন্তু কেউ কি বিয়ে করার আগে ভাবে বা চায় যে সম্পর্কটা ভেঙে যাক।পরিস্থির চাপে পড়ে অনেক সময় অনেক কিছু করতে হয়,যেটা আগে থেকে চিন্তা করে করা সম্ভব না। আর যে মেয়েটা তোমাকে পাবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলো! যাকে তুমি তোমার ব্যর্থতার কারনেই হারিয়ে ফেলেছো,প্লিজ নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে তাকে ছলনাময়ী বলো না! সে ছলনাময়ী নয়!

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত