আমার এক্সের বিয়ে হয়েছে একটা বয়স্ক লোকের সাথে শুনে বেশ আনন্দিত হলাম। যা এবার বোঝো। আমায় ব্রেকআপ দিয়েছিলে তাই না এটাই তার অভিশাপ। কিন্তু আমার আনন্দ ঠিক এরকম রইল না। আরো বেড়ে গেল। শুনলাম সেই লোক নাকি বাইরে থাকে মানে বিদেশ। শুনে আমার আনন্দের সীমা নেই। বিয়ের পর যখন জামাই বিদেশ চলে যাবে, শূন্য ঘরে একা একা থেকে থেকে তখন আমার কথা ভেবে তার অশ্রু ঝরবে চোখ থেকে। ভাবতেই ভালো লাগছে। বোঝো ঠেলা। ১১ মাস পর হঠাৎ করেই আমার এক্স অর্থাৎ তমা আমাকে কল দিলো। কল দিয়ে আকুতি-মিনতি করে বললো, “প্লিজ আকাশ তুমি একবার আমাদের বাড়িতে আসো। প্লিজ। ”
আমি মনে মনে বললাম জানতাম তুমি আমাকে খুঁজবে, ওকে আমি আসছি, তোমার দুঃখ দুর্দশা দেখে মন খুলে হাসার জন্য আসছি। আমি একবুক সুখ আর মুখ ভরা হাসি নিয়ে ওদের বাড়ি গেলাম পরদিন। ওদের বাড়ি ফাঁকা দেখে মনে হল ও নিশ্চিত আমায় নিয়ে পালানোর চিন্তাভাবনা করে রেখেছে। কিন্তু আমি এই ভেবে আনন্দিত হলাম যে যখন ও আমার হাত ধরে কান্না করবে আমি না করে দিবো। প্রতিশোধ। নিব। হাহাহা।
ঠিক দুপুর বেলা। চারপাশ নিরব। আমি যেতেই তমা বলল,” আকাশ শোনো তোমাকে একটা অনুরোধ করতে চাই। প্লিজ রাখবে।” আমি অবাক হয়ে বললাম “কী অনুরোধ বলো বলো? ” আমি অবশ্য মনে মনে বুঝেছি ও বলবে, “আকাশ আমাকে আমি তোমার হাতে তুলে দিলাম। অনুরোধ করি আমায় নিয়ে পালাও।” কিন্তু তখন আমি বলবো পালাবোনা। আহ বেচারি।
ও কথাটা বলতে যাবে তখনি ওদের বাড়ির সামনে একটা চোখ ধাঁধানো প্রাইভেটকার এসে থামলো। ও আমার হাত ধরে ঝাঁকি দিয়ে বলল, ” শোনো, তাড়াতাড়ি শুনো। আসলে আমি আমার পরিবারসহ আমার স্বামীর সাথে আমেরিকা চলে যাচ্ছি। ওরা সবাই চলে গেছে ঢাকা। আমি শুধু ছিলাম তোমার জন্য। কিন্তু আমার স্বামী তো কিছুতেই মানছেন না। বউ পাগল লোক একটা। দেখোনা ড্রাইভার দিয়ে গাড়ি পাঠিয়েছে। যাই হোক তোমায় একটা কথা বলার জন্য আমি ডেকেছি।
তমা একটু হেঁটে বাইরে গিয়ে বললো,” এ কি আমি তো বলেছিলাম নীল কালারের গাড়িটা পাঠাতে। লাল কালারেরটা পাঠালো কেন? হয়তো মুকুল (তমার স্বামী) শুনতে ভুল করেছে। আচ্ছা যাই হোক তোমার সাথে আবার কবে দেখা হয় জানিনা। আমাদের এই বাড়িতে কালকে থেকে ভাড়াটিয়া আসবে। ওদের বলে দেয়া হয়েছে তুমি মাস শেষে ভাড়ার টাকা হিসেবে ১৫০০০টাকা এদের কাছ থেকে নেবে। আর হ্যাঁ তুমি নিজে এটা খরচ করিও।
শুনেছি তুমি আবারও ইয়ার ড্রপ খেয়েছো। টিউশনির বাচ্চাগুলো নাকি আর পড়তে চায় না তোমার কাছে। প্লিজ এই টাকাগুলো নিবে প্রতিমাসে। এটা আমার অনুরোধ রইল।” এসব বলেই তমা চলে যেতে লাগলো। আমি হা করে তাকিয়ে আছি। আমার চোখের সামনে ও গাড়িতে ঢুকে শব্দ করে গাড়ীর দরজাটা লাগালো। একটা দামী শব্দ হলো।