প্রতিশোধ

প্রতিশোধ

ইউনিভার্সিটি থেকে বাসে করে বাসায় ফিরছিলাম।বাসে উঠার পরই যার সরনাপন্ন হলাম তাকে দেখে শরীরের সমস্ত রক্ত মাথায় গিয়ে জমা হলো।যার কথা বলছি তিনি আমার এক্স মশাই। যিনি আমার জীবন টা ত্যানা ত্যানা করে ছিড়ে মাঝ রাস্তায় ফেলে রেখে নতুন আইটেমের সাথে রিলেশন চালাচ্ছে।বাসে শুধু আমার এক্স না এক্সের সাথে এক্সের নতুন হাতা মানে তার নতুন গফ ও আছে।যাই হোক বাসের পিছন দরজা দিয়ে উঠছিলাম বলে এক্সের পিছনে দাড়িয়ে আছি আমি সেটা সে এখনো টের পায়নি।আমার সামনে সে তার নতুন হাতার সাথে ঢলাঢলি করছে। এত মানুষের সামনে এভাবে গা ঢলাঢলি করতে এদের বিবেকে বাধছেনা?

ভাবতেই গা ঘিনঘিন করতে লাগলো আমার।কি দেখে যে কাল সাপটার ফাঁদে পা ফেলছিলাম আল্লাহ মাবুদ জানে এ কথা বলেই কপালে দুই চার টা চড় বসালাম।বহুদিনের শখ আমার, জীবনে যদি কখনো আমার সামনে এক্স এসে পড়ে তাহলে তাকে আমি গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে ঠাস করে এক চড় মেরে বলব কি রে ব্যাডা ভাবছিলি তোকে ছাড়া আমি মরে যাব?দেখ, এখনো আমি বেঁচে আছি আর বেঁচে থাকবো তুই আমার জীবনটা যেভাবে নষ্ট করছিস তার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য। ভাবিস না ইচ্ছে করে ছেড়ে যাবি বলে আর পাঁচটা মেয়ের মত আমি কেঁদে কেঁদে তোর জন্য দোয়া করব।জীবনের বারো টা বাজাবি আবার দোয়া ও পাবি এত ভালো আমি না সোনা চান্দু।মনে মনে মনের বাসনা গুলো বলছিলাম আর ভাবছিলাম কিভাবে এক্স আর ওর হাতারে শায়েস্তা করবো।

বাসে ভীড় প্রচুর সিট খালি নাই,আমার পিছনে এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে আর আমি এক্সের সিট ধরে দাঁড়িয়ে আছি।এক্স একটু পর পর তার গফের চুলগুলোতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।এটা দেখে আমার মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে প্রচুর।আমি জ্বলছি না, ঠকানো মানুষগুলোর প্রতি একসময় ভালোবাসা আর সম্মান দুটোই চলে যায়। কার যায় না যায় জানিনা তবে আমার চলে গেছে ভালোবাসা, সম্মান দুটোই।একসময় এই মানুষটর জন্য দিনরাত কেঁদেছি এখন সেই কান্নার কথা মনে পড়লেই নিজেকে নিজেই থাপড়াই।কি এক ঘোড়ার ডিমের জন্য আমি কেঁদেছিলাম ছিহ ভাবতেই এখন ঘৃণা লাগে। যে মানুষটি এখন মরলে আমার কিছুই আসে যায় না সেই মানুষটি অন্যকাউকে স্পর্শ করুক বা জাহান্নামে যাক তাতে আর আমার কিছুই আসে যায় না।

এক্স আর রঙ্গলীলা চালিয়ে যাচ্ছে এদিকে এক্সকে ঠাস করে এক চড় মারার জন্য আমার হাত চুলকাচ্ছে।এক্সমশাই এখন তার গফের গাল টানছে।এটা দেখে আর হাত সামলে রাখতে পারলাম না। সাথে সাথে পিছন থেকে ঠাস করে এক্সের মাথার পর পানি ভরা বোতল দিয়ে গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে বাড়ি মেরে নিজের জায়গা থেকে সরে ঘাড় ঘুরিয়ে খানিকটা দূরে দাড়ালাম।বোতলের বাড়ি খেয়ে এক্স ওমা বলে চিক্কুর দিলো। ব্যাডা টের পেয়ে যাবে কিনা ভেবে ভয় পাচ্ছিলাম।

পিছনে কি হচ্ছে এখন আমি জানিনা,পিছনে তাকানোর সাহস পাচ্ছিনা।এক্সের চিৎকার শুনছি খালি। ব্যাডা খালি বলছে আমাকে কে! কে মারলো? কেউ আমার বাড়ি দেয়া দেখেনি, তাই সবাই সবার মুখের দিকে চেয়ে আছে।আমি এক পৈশাচিক আনন্দে ভেতরে ভেতরে লাফাচ্ছি।কিছুক্ষণ পর সামনে বাস স্ট্যান্ডে বাস থামালে সেখানে নেমে যাই। বাস থেকে নেমে এক্সের জানালার পাশে এসে একটা চিরকুট ঢেল মারি,তাতে লেখা ছিলো কি রে ব্যাডা কেমন লাগলো? খুব লেগেছে না, হা হা হা আমারো লেগেছিলো।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত