আপনাকে বলেছিলামনা শাড়ী পরে আসতে। তা শাড়ী পরেননি যে?’ আমার কথাটা বোদহয় মেয়েটির কান পর্যন্ত পৌঁছোলো না। মেয়েটি তার চুল গুলো আলগা করে দিয়ে বলল….
–আজকের আবহাওয়াটা বেশ সুন্দর তাইনা?
-হুম! উপভোগ করার জন্য পারফেক্ট।
–এর আগে কখনো উপভোগ করেছিলেন?
-হয়তো, কিন্তু আজকের মতন উপভোগ না।
–উপভোগের বুঝি আলাদা পার্থক্য থাকে?
-হুম থাকেতো, একাএকা থাকলে কিন্তু বেশি একটা জমেনা।
–আবার একা থাকলেও কিন্তু দুহাত প্রসারিত করে নিজের মতন করে উপভোগ করা যায়, সবকিছু একদম নিজের নিঃশ্বাসের সাথে মিলিয়ে. নেওয়া যায়।
-অপরপাশে আরেকজন থাকলে ব্যাপারটা মন্দ হতনা।
–সেটা কেমন?
-কেউ একজন মুগ্ধ নয়নে দেখতো আপনাকে, তাকিয়ে থাকলো অপলক। কখন বিকেল, সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত চলে আসতো বুঝতেই পারত না।
–যাহহহ! এমনটা হয় নাকি?
-প্রাকটিকালি পরীক্ষা করবেন?
–উহু! মানুষটা দুষ্টু আছে, সে যদি আমায় ফেলে রেখে চলে যায়? রাত হলেতো নির্জন জায়গায় ভয় পাব।
-মানুষটার কথা কেন শুনলেন না?
–সে বুঝি খেয়াল করেছে আমাকে?
-হু করেইতো, সেই কবে থেকেই।
মেয়েটা হাসলো। জগতে মানুষের প্রত্যেকটা হাসির পিছনে রহস্য লুকিয়ে থাকে। কিন্তু এই মেয়েটার হাসিতে তেমন রহস্য খুজে পাচ্ছিনা৷ গোয়েন্দা হলে মেয়েটার হাসি নিয়ে অনেক গবেষণা করতাম। এর রহস্য খোঁজার জন্য আলাদা একটা টিম গঠন করতাম। কিন্তু আফসোস আমি গোয়েন্দা না। মেয়েটি মুচকি হেসে বলল….
–আপনাকেও বলেছিলাম সানগ্লাস পরবেন না, তবে চোখে সানগ্লাস কেন?
-নিজের কথার বরখেলাফ করে আমায় যুক্তি দিচ্ছেন?
–এই গোমড়ামুখো, একদম গোমড়ামুখে থাকবেননা বলে দিচ্ছি। কেমন বাজে দেখায়।
-আমার কি আর সোনার টুকরা মুখ?
–আবোলতাবোল বললে ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দিব হু।
-হাহাহাহা….
–যাক বাবা হাসতেও পারেন দেখছি।
-পারিতো, না পারার কি আছে?
–রোজ এই হাসিমাখা মুখটাকে ছুতে ইচ্ছে করে কেন?
-ছুয়ে দিন, না করেছি।
–ধ্যাত কেমনে বলে। লজ্জা লাগে যে….
-আচ্ছা আমার কথাও শুনতে হবে।
–রোজ এক শাড়ি পরলে ভালো লাগবে?
-এককাজ করবেন, শাড়ি রাতে বালতিতে রং মিশিয়ে চুবিয়ে রাখবেন একেকদিন একেক কালার। দারুন না?
–হয় হয়, দারুণই তো দুনিয়ার যত কুটনামি বুদ্ধি সব আপনার মাথায়।
-যান পরতে হবেনা শাড়ি, খুশি।
মেয়েটি কোমড়ে হাত দিয়ে চোখ বড়বড় করে তাকায় আমার দিকে। আমি চোখ টিপ মারি। সে হাসে। মুচকি হেসে অন্য দিকে তাকায়। আবার ফিক করে শব্দ করে হেসে দেয়। যার অর্থ ‘পাগল আমি রোজ শাড়ি পরব, নাতো করিনি, কি রাগ। হায় আল্লাহ হিহি।’ এভাবে ছোটছোট খুনসুটি চলে আমাদের। চলুকনা, মন্দ কি।