হয়ত ফিরে আসা

হয়ত ফিরে আসা

আমি তাহাসান আমার খুব খারাপ একটা অসুখ হয়েছে। বর্তমানে খুব নাকি একটা হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি রোগটা নাকি ক্যানসার কোন একদিন শুনে ছিলাম ক্যান্সার নাকি বড়লোকের রোগ এখন কথাটা মনে হচ্ছে সত্যি। কি আজব এক রোগ যার কোন ওষুধ নেই। অবশ্য বিষয়টা নিয়ে তেমন মাথা ব্যাথা নাই আমার কারণ বেচে থাকার কোন ইচ্ছা আমার নেই। প্রতিটা দিন আমার কাছে একি রকম মনে হয়। কাগজে কলমে আমার বয়ষ এখন ১৮ বছর আর বাস্তবে ২০ বছরের কাছা কাছি। আর এই কথাটা সত্যি কি না জানি না তবে পৃথিবীর সব রিচম্যান ক্যান্সার হয়ে মরেছে।

সে হিসেবে আমি ও ক্যান্সার হয়ে মারা যাব কারণ আমিও রিচম্যান কত টাকা যে আমার আছে আমি জানি না আমার বাবা এই দেশের সেরা বিজনেস ম্যানের একজন ছিল। আমার যখন ১৫ বছর বয়স তখন আমার বাবা-মা এক কার এক্সিডেন্টে মারা যায় ভাই বোন না থাকা তে আমি একা হয়ে পড়ি। তারা মারা যাওয়ার পরে অনেক আত্মীয়স্বজন আমার কাছে আসতে থাকে কিন্তু হটাত করেই সবাই আবার দূরে সড়ে যায় কারণ টা পরে বুঝতে পারি। কারণ হল আমার বাবার অবর্তমানে সমস্ত সম্পদের মালিক আমি তবে সেটা বিশ বছর পূর্ণ হওয়ার পরে। আর তাদের অবর্তমানে আমার দেখা ভরন-পোষণ ও পড়াশুনার খরচ চালাবে একটি ট্রাষ্ট। তাই যখন শুনেছে কেউ কিছু পাবে না ওমনি সব আত্মীয়রা দূরে চলে গেছে।

হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে কথা গুলো ভাবি। অনেকে হয়ত জানেই না আমার যে অসুখ হয়েছে। এত দিনে হয়ত আমার চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর চলে যেতাম কিন্তু ট্রাষ্ট জনিত সমস্যার জন্য দেরি হচ্ছে। আমার কলেজের অল্প কিছু বন্ধু জানে আমার অসুখের খবর টা প্রথম প্রথম তারা খবর নিত কিন্তু এখন আর নেয় না। সারাদিন আমার কাছে অফুরন্ত সময় সারাদিন শুধু ভাবি আর ভাবি। ও ভুলে গিয়েছিলাম আমার এক ফুপি আছে সে যেন কি ভাবে যেনে গেছে আমার অসুখের কথা। সে আসছিল আমার সাথে দেখা করতে।

দেখা করতে এসে শুধু কেদেছে কোন কথা বলে নাই। বাবা- মা মারা যাওয়ার পরেও সে শুধু কান্না করেছে কিছু বলে নাই। তার পরেও আমার কাছে অনেক বার সে এসেছিল দেখা করতে আমি দেখা করব না বলে না করে দিয়েছি কারণ আমার মার চেহারা আর তার চেহারা এক রকম দেখলেই কান্না চলে আসে। যত টুকু জানি আমার এই ফুপি আমার বাবার সৎ বোন তাই বাবা তেমন খোজ নিত না আর তারা অনেক গরিব তাই আমাদের সাথে মিশত নাহ। তবে আমি সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে কিছু কাজ করে যাব উকিল চাচ্চুর সাথে সেই বিষয় কথা হয়েছে।

খুব বড় রকমের একটা চেক দেওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে আমার সেই ফুপিকে। চাচ্চু অনেক ভাল লোক সেই সব ব্যাবস্থা করে দিয়েছে। আর ৪ দিন পরে আমার সিঙ্গাপুর যাওয়ার ফ্লাইট। আমি এখন আমার গ্রামের বাড়ি সেই ফুপির কাছে যাচ্ছি।কথা ছিল চেকটা কার মাধ্যমে পাঠাব হাটাৎ করে সিধান্ত বদল করলাম ইচ্ছা হল দেখি এত গুলো টাকা পেয়ে সে কি করে তার অবাক হওয়া মুখটা দেখতে মন চাইল। ফুপি আমাকে দেখেই দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করল আমি চেকটা দিতে গিয়েও পারলাম না। সেদিনি ফুপিকে ও তার বাচ্চাদের নিয়ে ঢাকা চলে আসলাম উকিল চাচ্চু মাত্র ২ দিনে আমার সাথে আমার ফুপির সিঙ্গাপুর যাওয়ার ব্যাবস্থা করে ফেলল।

ফুপির একটা ছেলে আর একটা মেয়ে আছে আমার। যাওয়ার সময় আমাকে এমন ভাবে ভাইয়া বলে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করল আমি কেঁদে ফেললাম ছোট বাচ্চাটার বয়স ১০ বছর হবে ওর মাথা ছুয়ে আমাকে প্রমিস করতে হল আমাকে ফিরত আসতেই হবে। এতদিন বেচে থাকার কোন ইচ্ছাই ছিল না তবে এখন বাচতে খুব ইচ্ছা করছে খুব হয়ত এমন ও তো হতে পারে সিঙ্গাপুর গিয়ে শুনব আসলে রোগটা ক্যান্সার না অন্যকিছু এমন কিছু যার চিকিৎসা আছে। আচ্ছা আবার কি আসতে পারব ফিরে……..

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত