রাস্তার পাশ থেকে কেউ একজন সালাম দিয়ে উঠলো, “আসসালামু আলাইকুম।” তাকিয়ে দেখি, নিতু (আমার এক ছাত্রী।)
– ভাইয়া ভালো আছেন?
– হ্যা ভালো। কিন্তু তুমি এখানে?
– আপনার সাথে একটু কথা ছিলো।
– হ্যা বলো….!
– আমি না আপু। নীতুর পাশে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দেখতে মাশাআল্লাহ্ অনেক সুন্দর। মেয়েটি বলতে লাগলো
– আসলে ভাইয়া কিছুদিন পর আমার ইয়ার-চেন্জ. পরীক্ষা! কিন্তু লেখাপড়ার যা অবস্থা সো আমাকে যদি একটু হেল্প করতেন।
মেয়েটার ভাবভঙ্গি আমার কাছে ভালো ঠেকছে না। তবুও রাজি না হয়ে উপায় নেই। কারন ২টা টিউশনি করিয়ে খুব হিসেব করে চলতে হয়। তাই এখন একটু সচ্ছল হওয়া যাবে। ছোটবোনকে সকালে পড়াই আর বড় বোনকে বিকালে। ভালোই চলছিলো কিছুদিন! প্রায় দু-সপ্তাহ পর! একদিন মেয়েটি আমাকে বললো, – স্যার আজকে বাসায় কেউ নেই। তাই আপনার জন্য নুডুলস রান্না করছি। খাবেন? না করতে পারলাম না। কেউ কষ্ট করে কিছু রান্না করলে ভালো হোক কিংবা মন্দ হোক প্রশংসা করা বাঞ্চনীয়।
– “খুব ভালো হইছে।” মেয়েটা একটু লজ্জা পেয়ে তারপর বললো,
– স্যার আপনাকে আজকে একটা কথা বলবো। রাগ করবেন না প্লিজ।
– হ্যা বলো! একটু সময় নিয়ে বললো,
– I am in love with you আমি ক্ষনিকের জন্য থমকে গেলাম। তারপর বললাম,
– মাথা ঠিক আছে তোমার?
– জ্বি স্যার!
কথাটা শুনেই বাসা থেকে বেরিয়ে চলে আসলাম। হাঁটতে হাঁটতে ভাবতেছি, “অতি লোভে তাতি নষ্ট, সচ্ছল হতে চেয়ে এখন দুটো টিউশনিই হারালাম। ২দিন পর আমার মোবাইলে একটা টেক্সট আসলো।
“সরি স্যার! আসলে আপনাকে আমি অনেক আগে থেকেই পছন্দ করি। আপনার চলাফেরা, আপনার সবিনয়ে কথা বলার স্টাইল, আপনার আত্নবিশ্বাস সবকিছু আমাকে অনেক আগেই মুগ্ধ করেছিলো। তাই বাবাকে বলে, নিতুর জন্য আপনাকে টিচার করে আনি। কেন জানেন? আপনাকে জাস্ট একটু দেখব বলে।
যাক সবকিছুর জন্য আমি অনেক দুঃখিত। আপনি নিতুকে পড়াতে আসেন। আমি বাসা ছেড়ে কলেজ হোস্টেলে চলে যাচ্ছি। ভালো থাকবেন।” টেক্সট টা পাওয়ার সাথে সাথে আমি ওর বাসায় চলে গেলাম। গিয়ে দেখি, হোস্টেলে যাওয়ার জন্য ব্যাগে কাপড়চোপড় ঘুচাচ্ছে। আমাকে দেখেই মেয়েটি চমকে উঠলো! আমি জিজ্ঞেস করলাম,
-কোথায় যাও?
– কলেজ হোস্টেলে!
– তাহলে আমি পড়াব কাকে?
সাথে সাথে ঠোঁটের কোণে মৃদ্যু হাসির আভা এটাই “ভালোবাসি!”