এক লোক মজা করে তাঁর স্ত্রীকে অফিসের সহকর্মীর নাম্বার থেকে ম্যাসেজ দিলো।
“ আনিকা, আমাকে মনে আছে তোমার? ” খুব স্বাভাবিক উত্তর আনিকার।
“ হ্যাঁ, তুমি সজিব না? ”
“ না। আমাকে চিনতে পারলে না তুমি? আনিকা নামে শুধু তোমাকে আমিই ডাকতাম। ”
“ রাফিন তো? কী খবর তোমার? বিয়েটিয়ে করেছো? তুমি তো বিয়ের পাগল ছিলে। ” লোকটা চমকে গেলো।
“ কী যে বলো আনিকা। রাফিন হতে যাবো কেনো? তুমি আমাদের মুহূর্তগুলো ভুলে গেলে? আমরা কক্সবাজার গিয়েছিলাম মনে নেই? ” “ আগে বললেই পারতে। তুমি নাহিদ তো? তোমার নাক ডাকার অভ্যাসটা গেছে? ”
লোকটা নড়েচড়ে বসলো। তাঁদের পারিবারিক বিয়ে। তাঁর বৌ বলেছিলো সে নাকি বিয়ের আগে কোনো প্রেম করেনি।
“ না আমি নিশাচর আনিকা। সিগারেট ছাড়া যার এক মুহূর্ত চলে না। এবার বলো চিনতে পারছো কী না? ”
“ আরেহ শুভ তুমি? গাঞ্জা খাওয়া ছেড়ে দিছো? হোটেলের ভিতরে তুমি যেভাবে গাঞ্জা খেয়েছিলে! উফ আমার মনে হলেই গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। ” লোকটা সিগারেট ধরালো। গরম চা নিজের মাথায় ঢেলে শান্ত হওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখলো। “ খুব কষ্ট পেলাম আনিকা। তোমাকে সবসময় নামিদামি মেকাপ বক্স উপহার দিতাম আমি। কেনাকাটা করে দিতাম প্রতি সপ্তাহে। ”
“ মনে পড়েছে, আসিফ তুমি এখনো কেমন যেন রয়ে গেছো। কী অবস্থা তোমার? বিয়ে করেছো? ” লোকটা চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না! কান্নায় ভেঙে পড়লো। “ হ্যাঁ করেছি বিয়ে। কিন্তু আমি আসিফ না। তোমার হতভাগা জামাই। ” বলেই বাড়ির দিকে রওনা দিলো। মিথ্যা বলার কারণে বৌকে গিয়ে পিটাবে। বেশিদূর না অফিস থেকে বাড়ির দূরত্ব।
সরাসরি গিয়ে জিজ্ঞেস করলো।
“ তুমি এতো প্রেম করেছ বিয়ের আগে? বললে কী আমি তোমাকে মেনে নিতাম না? ” বৌ উল্টে ঝারি দিয়ে বললো।
“ তোমার ফোন বাড়িতে রেখে গেছিলে কেনো? তোমার সাথে নিয়ে গেলে তো আমি দুঃখ পেতাম না। ”
“ ক্যান আবার? কী হয়েছে? ”
“ লাবনী ফোন করেছিলো। তোমার শরীর সাস্থের খবর নিতে। লাবনী কে? ”
“ ওহ, বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। আমার প্রাক্তন প্রেমিকা। ”
“ ওহ, তাহলে ঝুমুর কে? যার নামে আপনার ফোনের লক? ”
“ ও আমার যাষ্ট ফ্রেন্ড। ”
“ খুব ভালো, ফেসবুকে যে মেয়েকে নিয়ে রোজ কবিতা লিখতেন সে কে? ”
“ ও প্রেমে ছ্যাকা খেয়েছে তাই শান্তনা দিতাম। ”
“ সেন্ট মার্টিন সান হোটেলের রুম নাম্বার তেরো। মেয়েটাকে নাম আমি বলবো? ”
“ এটা আর তেমন কী বিষয়? ওর শরীর খারাপ তাই ওখানে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেছি। ” দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আনিকা বললো।
“ আর কতো লুকাবেন? ”
“ কতো লুকানোর কী আছে? আমি তোমার মতো না। সবার কথা তো বলেই দিলাম। আর শুধু তিশার সাথে তিন মাসের সম্পর্ক ছিলো। ওর বান্ধবীর সাথে এক মাস। স্যারের মেয়ে বেশি কথা বলতো তাই বাদ দিয়ে দিছিলাম। জিনিয়া, মৌমিতা, লামিয়া আর সেতুর সাথে একবার করে মাত্র ঢাকার বাইরে ঘুরতে গেছি। মিম, রীমা, সনিয়া, স্বর্ণালী, আর কবিতার সাথে তো জমার আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। নাবিলা, মাহমুদা, তানজিনা, রাত্রি, ইসরাত লিজা তো আমাকে ছ্যাকা দিয়ে চলে গেছে এটুকুই। আর তুমি? ”
আনিকা ঠাস করে মাটিতে পড়ে গেলো। অজ্ঞান হওয়ার আগে বললো। “ আরেহ তুমি যে তোমার কলিগের নাম্বার থেকে ম্যাসেজ দিবে তা উনি তখনই বলে দিয়েছিলো ফোন করে। তাই মজা করেছিলাম। কিন্তু তুমি? আমার বুঝি আর বেঁচে থাকা হলো না আম্মু! ”