-হ্যালো, কে?
– কে মানে, আপনি আমার নাম্বারটা এখনো সেইভ করেননি?
-না।
-কেন?
– নাম্বারটা সেইভ করে ফেললে তুমি হয়ে যেতে বাকী কন্টাক্ট নাম্বারগুলোর মতন অর্ডিনারি। খুব স্পেশাল কারোর নাম্বার মুখস্থ করে রাখতে হয়।
-আচ্ছা, আপনি কোন ধরণের মানুষ বলেন তো, আজকে আমাদের প্রথমবার দেখা হল। সারাটাক্ষণ আমি একাই পাগলের মতন বকবক করে গেলাম। আপনার সব প্রিয়/অপ্রিয় জিজ্ঞাসা করলাম। আপনি কেবল নিজের উত্তরটাই দিলেন একবারো পালটা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন না। আপনার কি জানতে ইচ্ছে হয়নি?
-না।
-কেন?
– আমি সব জানি।
-জানেন, কচু৷
– তোমার কপালের যেখানটায় টিপ পর তার ঠিক উপরে দুই ইঞ্চি বামে দু গাছি চুলের নিচে একটা ছোট্ট তিল আছে। আমি তিলটার নাম দিয়েছি পায়রা৷ এখনো আকীকা দেইনি। তবে ভাবছি খুব শিঘঘির ই দিয়ে ফেলব।
– এএএহ! আন্দাজে বলে দিয়েছেন।
– তোমার কালো রঙ ভীষণ প্রিয়। তবে মেরুণ ও ভালবাস।
– কিভাবে জানলেন? আমি কী বলে ফেলেছি কোনভাবে? মনে তো হয়না, বলেছি।
– তুমি একা হলে খুব কাঁদ। এক চাপা কষ্ট তোমায় আকড়ে ধরে আছে বহুবছর। যে কষ্ট কাউকে বলা যায়না। বুক ভার হয়ে থাকে তোমার।
– আপনি কি নিজেকে জ্যোতিষী প্রমাণ করতে চাইছেন? সেক্ষেত্রে আপনি ঠিকঠাক আগাচ্ছেন। বলে যান প্লিজ।
– সব বলে দিতে হয়না। থাকুক কিছু কথা। যা আমি জানি, তা তুমি জেনে ফেললে নীরবতা গ্রাস করে নেবে একসময়। নীরবতায় ভাল চিন্তাদের পাপ ছুয়ে দেয়৷ আর পাপে মরে যায় সম্পর্ক।
– ধ্যাত! আপনি এত কঠিন কেন? একটু সহজ হতে পারেন না? আচ্ছা, আমি যদি অনুরোধ করি তাহলে কি আমাদের আবার দেখা হবে? আপনি আসবেন?
– নাহ।
– কেন?
– তুমি আমার প্রতি মুগ্ধ। আমি চাই তোমার এই মুগ্ধতা হারিয়ে না যাক৷ আবার কখনো দেখা হলে আমার কোন একটা পাপ ধরা পড়বে তোমার চোখে৷ তাতে মুগ্ধতা কমে যাবে, সেই সম্ভাবনাই বেশি।
– এমনোতো হতে পারে, আমি আরো বেশি মুগ্ধ হয়ে গেলাম! আপনার নতুন কোন পূণ্য দেখে।
– খুব বেশি মুগ্ধ হলে মেয়েরা প্রেমে পড়ে যায়। আমি চাইনা তুমি আমার প্রেমে পড়।
– কেন?
– এই পৃথিবীতে সব কেনর উত্তর হয়না। আমি যদি তোমাকে জিজ্ঞাসা করি এত বিশাল একটা আকাশ একা কেন? তুমি কি পারবে উত্তর দিতে?
– না।
– নীহারিকা।
– জ্বি!
– তোমার ভেতরের স্বত্তাটা সুন্দর! ঐটাকে বাঁচিয়ে রেখো নিজের পরিচর্যা করে। তুমি কি জানো তোমার সবচেয়ে পরম বন্ধু কে?
– বই। বুকস আর মাই অনলি বেস্ট ফ্রেন্ড। এদের ছাড়া আমি বাঁচবোইনা।
– ভুল বললে। তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড তুমি নিজেই। খেয়াল করে দেখ তো তুমি তোমাকে ছেড়ে কখনো এক সেকেন্ডের জন্যে পালাতে পারো কিনা! কি পারবে? আর তুমিতো জানই যে ভাল বন্ধু সে কখনো ছেড়ে যায় না। নিজেকে ভালবেসো।
– হ্যালো…. হ্যালো…. শুনছেন। হ্যালো। আমার একটা কথা ছিল। হ্যালো। প্লিজ ফোনটা কাটবেন না।