বিয়ের পর একদিন মেয়ে তার বাবাকে একটা চিঠি লিখল।
> চিঠি পড়ছেন তার বাবা- বাবা ফুলসজ্জা রাতে আমি বুঝতে পারি আমার স্বামী আমাকে কতটা ভালোবাসে।কতরকম কথা দিল কথা নিল।সুখ দুঃখের সাথী হয়ে থাকবে তোমাদের জামাই।আমি যখন কান্না করছিলাম তোমার জামাই শান্তনা দিচ্ছে আর বলছে ধুর পাগল এক বাবা মাকে ছেড়ে আসছ এখানে আর এক বাবা মা পেয়েছ।আমি আছি তোমার দেবর আছে ননদ আছে।তুমি কান্না করার সময়ই পাবে না দেখো।আমি জানি বাবা তুমি খুব খুশি হচ্ছ আমার চিঠিটা পড়ে।
তবে আমি তোমাকে চিঠি লিখেছি অন্য একটা কারনে।বাবা,তুমি কেন এদের এখনো যৌতুক দিলে না?এই ৭টা পশুর জংগলে আমাকে কেন রেখে গেলে।বিয়ের পরেরদিন সকাল হতে হতে শাশুড়ি মা তোমাদের দুজনকে গালি দিচ্ছে বিশ্রি ভাষায়। আমি তোমার জামাইকে জিজ্ঞেস করলে বলে মা’র সাথে কি আমি ঝগড়া করব?ও হ্যা,তার পরের দিন প্রথমবারের মত শাশুড়ি আমার মুখে চড় মারল।বাবা তুমি কি কখনো আমাকে গায়ে হাত দিয়েছ?মা হাত দিয়েছে?আমি কান্না করে তোমার জামাই কে সব বললাম সে সন্ধ্যা নাগাদ ফিরল ঘরে।সে আমাকে খানকি মাগি বলে বলল এখন কি তুই আমাকে আমার মাকে মারতে বলছিস?যৌতুকের টাকা দিয়ে দিলেই তো সব ঝামেলা শেষ হয়ে যায়।তোর বাবা মাকে বল। বাবা তুমি কিছু একটা কর। মেয়ের বাবা মা চিঠি হাতে বসে কাঁদছে। একমাত্র মেয়ে তার।যৌতুক কোথা থেকে দিবে কিছুই যে নেই তার।মেয়ে রুপবতী দেখে নিয়ে গেল আর এখন আমার মেয়েটাকে মারধর করছে।মেয়েটার জন্য পরাণ ফেটে যাচ্ছে।
এক মাস পর আর একটি চিঠি এলো- বাবা,কতদূর কি করলে।আমি এতো মাইর আর সহ্য করতে পারছি না।শশুড় নোংরা নোংরা কথা বলে।শাশুড়ি যখন গায়ে হাত দিচ্ছে।দু বেলস খাচ্ছি।ভালো কিছু দিন ভর রাঁধছি কিন্তু কিছুই এরা খেতে দিচ্ছে না।বাবা তুমি এবার যখন যৌতুকের টাকা নিয়ে আসবে তখন বড় দেখে একটা ইলিশ মাছ নিয়ে আসবে।মাংস ও নিয়ে আসবে।এসব এখানে আমি রান্না করি কিন্তু খেতে দেয় না।বলে বাপ কে বল কিনে আনতে।তারপর খাবি।ও বাবা ওবাবা কবে আসবে?কতদিন তোমাদের দেখিনা।বাবা আসার সময় যৌতুকের টাকাটা আনতে ভুলে যেওনা। মেয়ের বাবা আর মা আজও চিঠি ধরে কাঁদছে।
দুইদিন পর আরও একটা চিঠি এলো- বাবা তুমি জানো আজ আমাকে ৬জন মিলে মেরেছে।আমি দুইদিন উঠানে পড়ে আছি।কেউ ডাকেনি।তোমার জামাই বেল্ট দিয়ে মেরেছে।নাকে ঘুষি দিয়েছে।রক্ত জমে গেছে।দম নিতে কষ্ট হচ্ছে।দেবর আর ননদ ধরে রেখেছে।শাশুড়ি মুখ চেপে রেখেছে যাতে চিৎকার করতে না পারি।আর তোমার জামাই শুধু মেরেই গিয়েছে।জানো বাবা,আমার চিৎকার এখন আর গলা দিয়ে বের হয় না।ছাইচাপা চুলার মত। ভিতরেই থেকে যায়।বাবা আমি এখন ভাতের থেকে মাইর বেশি খাই।বাবা এ তুমি কোথায় রেখে গেলে?বাবা যৌতুকের টাকাটা নিয়ে যত তাড়াতাড়ি পারো চলে আসো। ২০দিন পর আর একটি চিঠি এলো- বাবা হয় যৌতুকের টাকা নিয়ে এসো,নইলে এখান থেকে আমাকে নিয়ে চলে যাও।আমি আর মাইর সহ্য করতে পারছি না।সারা গায়ে রক্ত জমে গেছে।
মেয়ের বাবা তার বসত-ভিটা সব কিছু বিক্রয় করে মেয়ের বাড়ি আজ যাচ্ছে।বাবা তার আজ খুব খুশি।ইলিশ, মাংস,তরিতরকারি যা যা নেওয়ার সব নিয়ে হাস্যউজ্জল চোখ মুখ করে মেয়ের শশুড় বাড়ি যাচ্ছে।যৌতুকের টাকা নিয়ে বাবা উপস্থিত। অনেক দিন পর আজ মেয়েকে দেখবে। মনের উল্লাস আসমানচুম্বি। দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখে কোলেপিঠে করে বড় করা আদরের মামুনি আজ দঁড়িতে ঝুলছে!