এই যে বোন আপনি কি লিখালিখি করেন। জ্বি আপু। তো কয়টা বই বের করেছেন আপু?? একটাও না বোন। বলেন কি আপনি তো খুব ভালো লিখেন অথচ একটাও বই বের করেন নি? কিন্তু কেন? একটা বই বের করার মত সামর্থ্য আমার নেই আপু তাই। ওহ আচ্ছা। আচ্ছা আপু পরে কথা হবে আল্লাহ হাফেজ।
এটা ছিল আমার এক পাঠকের সাথে কয়েক মিনিটের আলাপচারিতা। এবার আমার এক লেখক ভাইকে আমি মেসেজ দিলাম। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন ভাই? ওয়া আলাইকুমুস সালাম। এই তো ভালো। তোমার কি খবর? আমার আর কি খবর ভাই খবর তো এখন আপনার। বই মেলায় আপনার বই কেমন বিক্রি হচ্ছে ভাই? সেটা প্রকাশনী থেকে বিক্রি হচ্ছে আমার ঠিক জানা নাই। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি ৩০০ কপি বিক্রি করবো। তা মেলা তো প্রায় শেষ হতে চললো কত কপি বিক্রি করলেন ভাইয়া??
আরে বোন বলো না পাঠক গুলো আমার সাথে বেঈমানি করলো। সবাই এক সময় কবে বই বের করবো এটা জিজ্ঞাস করে ইনবক্স কাঁপিয়ে দিত, কমেন্ট বক্সে ও একটা বই বের করার হাজারো আবদারে আমি ধার-দেনা করে অনেক কষ্টে একটি বই বের করেছি অথচ আজ আমার সেই পাঠকগুলোর বই কেনার কোন আগ্রহ নেই। মাত্র ৩০ কপি বই বিক্রি করেছি।
আপনি এত ভালো লিখেন ফেসবুকে অথচ আপনার প্রকাশিত বইয়ের কিনা এই দশা। আসলে ভাই ফ্রি তে সব কিছুই ভালো। ফেসবুকে সবাই গল্প পড়ে বাহবা দিবে। কিন্তু সত্যিকারে পাঠক খুব অল্পই আছে যারা আপনার এই শ্রম কে শ্রদ্ধা করবে ভালোবেসে আপনার বই কিনবে। হ্যা বোন একদম ঠিক কথা বলেছো।
আসলে ভাইয়া টাকা হলেই পত্রিকায় লিখা ছাপানো যায়, বই বের করা যায় কিন্তু মানুষের হৃদয়ে জায়গা করতে পত্রিকায় লিখা দেওয়া কিংবা বই বের করার প্রয়োজন পড়ে না। অনেকেই আমাদের মত ফেসবুক রাইটারদের অনেক তুচ্ছ করে কথা বলে। কিন্তু একটা লিখা পত্রিকায় বের হওয়া কিংবা বইতে প্রকাশ পাওয়া মানেই সেই লিখাটি খুব ভালো এটা ভাবার কোন কারণ নাই কারণ টাকা হলেই লিখা প্রকাশ করা যায়। আবার প্রকাশিত লিখাগুলো যে খারাপ আমি তা বলছি না। ভালো খারাপ দুইটাই আছে। তবে লিখা কোন পত্রিকা কিংবা বইতে প্রকাশিত করা হয় না মানেই লিখা খারাপ তাও কিন্তু নয়।
আমরা ফেসবুক রাইটাররা অনেকেই টাকার অভাবে বই বের করতে পারে না অথবা পত্রিকায় প্রকাশ করতে পারেনা প্রয়োজনীয় সোর্সের অভাবে। আমরা ফেসবুকে গল্প লিখে শুধু মাত্র মানুষের কাছে একটু ভালোবাসা পেতে আর মানুষেকে কিছু ভুল থেকে সঠিক পথে আনতে, কিছু ভালো মেসেজ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। কেউ যখন গল্প পড়ে নিজের জিবনের ভুল কে শুধরানোর অনুপ্রেরণা পায়, নতুন কিছু করার শক্তি আর উৎসাহ পায় সেখানেই আমরা লেখার স্বার্তকতা খুঁজে পাই। আমরা ফেসবুকে লিখি মানে এই নয় যে আমাদের লিখা পত্রিকায় কিংবা বইতে প্রকাশ করার মত নয়, বরং আমরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
হুম বোন একদম ঠিক কথা বলেছো। একজন লেখক তখনই স্বার্থক যখন তার লিখা থেকে পাঠক কিছু শিখতে পারে। তার ভুলটা শুধরাতে পারে। এর চেয়ে বড় আর কিছু হতে পারে না। আর বই প্রকাশ করে এই কাজটা করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না টাকার অভাবে, প্রয়োজনীয় সোর্সের অভাবে কিংবা নানান সমস্যার জন্য কিন্তু ফেসবুক রাইটাররা হাজার হাজার মানুষের উপকার করে তাদের লিখা দিয়ে। জ্বি ভাইয়া। কিন্তু এটা বোঝার মত ব্যক্তি খুব কমই আছে। যারা পত্রিকায় লিখা দিয়ে কিংবা বই বের করে অন্যকে তুচ্ছ করে কথা বলে আর যাই হোক তারা কখনো বিবেকবান মানুষ হতে পারে না।
একদম ঠিক বলেছো। ওকে বোন ভাইয়া একটু কাজে যাবো এখন পরে কথা হবে। ওহ ভাইয়া বলতেই ভুলে গেছি আপনার বইটি আজ হাতে পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ্। সত্যি গল্পগুলো অসাধারণ। আপনার বইয়ের জন্য শুভ কামনা রইলো। আল্লাহ হাফেজ। অনেক ধন্যবাদ তোমাকে বোন। আল্লাহ হাফেজ।











