রাইড-লেখা

রাইড-লেখা

সকাল বেলা, ৭টা কী ৮টা হবে। আামি একটা সাইকেল নিয়ে টাজ হোটেল এর সামনে দাড়িয়ে।

সাথে কেউ নেই একা একা দাড়িয়ে আছি, কালকে রাতরে ৯টার সময় একটা কবিতা পোষ্ট করেছিলাম,

জানি না editor ঐটা পেজ এ পোষ্ট করেছে কী না, পেজ এর নাম স্বপ্নছোয়া ভালোবাসা।

লেখক হওয়ার শখ ছোট বেলা থেকেই কিন্তু বাবা বলেন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে তাই গল্প টল্প লেখার বেশি টাইম পাই না কোচিং আর স্কুল এর জন্য,

তারপরও আশা ছাড়িনী, জানি না কবিতাটা editor এর পছন্দ হয়েছে কী না।

হঠাৎ পেছন থেকে,- এই, রাজ?

– কী?

– আর কেউ এসেছে?

– না খালি তুই আর আমি।

– কই সব?

– কে জানে, একটা ফোন দেতো।

– হ্যা, দিচ্ছি।

– ওই হালার হালাইন তোমরা কই? (ফোনে)

– আরে এই তো আইতা ছি। (ফোনে)

– তাড়া তাড়ি আয়,,,,,বলেই ফোনটা কেটে দিল।

– আসতেছে, তুই কোন সময় আইসোস?

-এই তো আধা ঘন্টা আগে।এর মধ্যই তারা সব চলে এল।

– এত সময় লাগে তোদের আসতে?(আমি)

– আরে আর বলিস না সকাল বেলা যে রাস্তায় কুকুর থাকে জানতাম না।

-কুকুর?- আরে ব্যাটা রাস্তা দিয়ে আসার সময় কয়েক টা পাগলা কুকুর করল তাড়া, সাইকেল না থাকলে তো দিতাম ভো-দৌড়, গিয়ার টা ৪ এ ফেলেই দিলাম টান,

কুকুরও তার টান বাড়িয়ে দিল, তার উপর দিয়ে আবার কয়েকটা মেয়ে যাচ্ছিল সামনে তাদের দেখে হিরো হতে তো ইচ্ছে করবেই,

হিরো হতে গিয়ে সাইকেলটা সালার এমন ঘুড়ানোই ঘুড়ালাম চকাটা slip খেয়ে সোজা ড্রেনের ভিতর গিয়ে ঢুকে পড়লাম।

যাহহহ,, আমার তো সব্বনাশ হলোই তার উপর আবার টাইমেরও বারোটা বাজলো। তাই আসতে এতো লেইট।

– হইছে, হইছে চলো

– হ্যা,, এই সবাই সিড়িয়াল এ পিছনে যা

– হু্মম, হইছে এখন সবাই টান দেও।সবাই সাইকেল চালাতে শুরু করলো সিড়িয়ালে, আমি ছিলাম দ্বিতীয় নম্বরে।

জীবনে প্রথম অনেক দূরে রাইডে যাচ্ছি তাই একটু ভয়ও করতে ছিল। আমরা টাউন ছেড়ে পেড়িয়ে এসেছিলাম খুবই তাড়া তাড়ি যেটা মোটেই ভালো কথা নয়।

কারন তাড়া তাড়ি করলে প্যাডেল দিতে হয় বেশি, আর বেশি প্যাডেল দিলে energy নষ্ট হয় যার ফলে কিছু পথ যাওয়ার পরেই ক্লান্ত হয়ে পড়তে হয়।

আমাদের সাথেও তাই হলো। ফাইব স্টার হোটেলের সামনে গিয়েই সব ক্লান্ত হয়ে পড়লো। আমি যাহহহহ, এতটুকু এসেই ক্লান্ত তাহলে বাকি পথ যাবে কী করে।

আরে দোস্ত যাওয়া যাবে নে একটু দম লইতে দে। ঠিক আছে তোমরা জিরাও আমি একটু রাউন্ড মাইড়া আসি। আমি অবশ্য ক্লান্ত হই নি তখন।

সাইকেলটা নিয়ে সামনে গেলাম আার কত সুন্দর জঙ্গল দেখলাম, গাছপালা দেখলাম কিন্তু বেশি দূর যেতে পারলাম না,

আমারও ক্লান্তি এসে গিয়েছিল তাই বেশি দূর আর গেলাম না। সাইকেলটা ঘুড়িয়া আবার প্যাডেল দিতে লাগলাম।

আসার পথে সামনে দেখি একটা মেয়ে হাত নারাচ্ছে, আমি দেখে সাইকেলটা ব্রেক মাড়লাম…

-আমাকে একটু লিফ্ট দিতে পাড়বেন? (মেয়েটা)

– কোথায়?

– এই তো সামনে একটা বাগান আছে ঐটার ভিতরে ঢুকে একটু সামনে গেলেই আমার বাড়ি।

– আচ্ছা আমার সমস্যা নেই কিন্তু আপনি সাইকেল এ বসে যেতে পারবেন তো?

– হ্যা পারবো।মেয়েটা আমার কাধে হাত দিয়ে সাইকেল এ উঠলো আর আমিও সাইকেল এ প্যাডেল দিলাম।

– তোমার নাম কী?

– দেখুন আমি আপনাকে আপনিও আমাকে আপনি করে বলুন plzz।

– বাবারে আপনি কী প্রথম কোন মেয়ের সাথে কথা বলছেন?

– জি।

– ওও, আচ্ছা আপনার নাম টা কী…?

– রাজ

– কোথায় থাকন?

– শহরে।

– ওও, তা এখানে কী করছেন?

– রাইডে এসেছি।

– ওও, আচ্ছা, থামান আমার বাসা এসে গেছে।

– এইটা আপনার ঘড়?

– হ্যা, কেন বাজে দেখতে?

– না না আমি এইটা বলতে চাই নি, একটু পানি পাওয়া যাবে?

– হ্যা,of course.-আপনি ইংরেজিও জানেন?

– হ্যা, কেন গ্রামের মেয়েরা ইংরেজি বলতে পারে না?

– না, অবশ্যই কেন বলতে পারবে না।

– আপনি একটু wait করেন আমি পানি নিয়ে আসতেছি।

– আচ্ছা, সে ভিতরে চলে গেল। কিছু সময় পর একটা গ্লাসে পানি নিয়ে এল। মাটির গ্লাস।

– নিন ধরুন।

– জি, আমি পানিটা খেলাম খাওয়ার পরে একটা লম্বা শ্বাস ফেললাম। আর সেআমার দিকে তাকিয়ে রইলো হা করে।

– কী দেখচ্ছেন?

– না কিছু না, আপনার আর পানি লাগবে?

– না। thanks

– welcome. এখন কী চলে যাবেন?

– হু্মমম।

– ওও আচ্ছা, পরে আবার আসলে এই দিকে আসবেন।

– আচ্ছা। চলি।আমি সাইকেল ঘুরিয়ে টান দিলাম তখন মেয়েটা আমায় চিৎকার করে ডাকদিল,,

– এই রাজজজ,,আমি সাইকেলটা থামিয়ে পিছনে ফিরে তাকালাম অমনি সে দৌড় দিয়ে এসে আমায় জড়িয়ে ধরলো…

– আরে আরে কী করছেন?

– আপনি তো আমায় একবারও জিঞ্জেস করলেন না আমার নাম কী?

– ওহ হ্যা,, কী আপনার নাম?

– তারা,….বলেই আমার দিকে যেভাবে তাকালো আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।

-আবার আসবে তো? (তারা)

– দেখি চেষ্টা করব।বলেই আমি সাইকেল টা ধরে টান দিলাম পিছনে ফিরে তাকালাম না কারন তাকালে জানি আমার চোখ থেকেও পানি আসবে।

খুব তাড়া তাড়ি সাইকেল চালালাম। গিয়ে দেখি তারা আমার জন্য বসে আছে। তারা বলল কোথায় ছিলি তুই….

– এই তো সামনে দেখতে গিয়েছিলাম কিন্তু বেশি গভীরে ঢুকে গিয়েছিলাম।

– ওকে চল ফিরে যাই সন্ধা হয়ে গেছে রাইড আর হলো না।

– ওকে চল কালকে আবার আসবো

– হু্মম, চল চল।বাসায় এসে fb তে ঢুকে দেখলাম পোষ্ট হয় নি। মনটা একটু খারাপ হলো তারপর ভাবলাম কী দেওয়া যায়। ভাবলাম রাইডটাই লেখে ফেলি।

এবার আশা করব editor এর পছন্দ হবে, কারন আগে কবিতা দিয়েছিলাম জানিনা কয়জন আমার নাম মনে রেখেছে ,

কিন্তু এইবার তারা আমার নাম মনে না রাখলেও গল্পটা মনে রাখবে। কারন নাম মুখুস্ত করতে হয় কিন্তু গল্প শুধু imagine করতে হয়।

আর আমি তারাকে imagine করব সকাল না হওয়া অব্দি।।।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত