সাক্ষী থাকুক ঝরা পাতা

সাক্ষী থাকুক ঝরা পাতা

চৈতীর দু’চোখে বিস্ময়। গ্রাম বাংলার দুঃস্থ অসহায়, অনাথ মানুষ গুলো যেখানে বাস করে, সেই বস্তি এলাকায় বাস করে চৈতী। বয়স খুব জোর চৌদ্দ পনের হবে। বস্তির একটা কুঁড়ে ঘরে বাস করে ওরা- মা, বাবা আর ছোট এক ভাইসহ।

বাবা কলিম মিয়া রিকশা চালায়। ওদের বস্তি থেকে কিছু দুরে বড় বড় গাছগুলো সূর্য্যরস্মির প্রবেশ পথ রোধ করে থাকে। মানুষ চলাচলকালে পদতলে পিষ্ট হয়ে পড়ে থাকা শুকনো পাতা গুলো ছড়িয়ে পড়ে এদিক ওদিক। ওরা শুকনো পাতা কুড়িয়ে নিয়ে যায় প্রতিদিন। গতকাল ঝড় হয়ে গেছে। প্রচুর পাতা পড়ে আছে। অবাক হয়ে যায় চৈতী। এত্তো পাতা একসাথে দেখে ওর দু’চোখে বিস্ময় তৈরী হয়েছে। একমনে পাতা কুড়াতে থাকে ও। হঠাৎ একটা কন্ঠস্বর ভেসে আসে পিছন থেকে।

– কেডা ওইহানে, চৈতী না?”
পাতা কুড়াতে কুড়াতে চমকে ফিরে তাকায় চৈতী।
মাহাবুব ভাই। বস্তির উত্তর দিকে থাকে। ছোট একটা মনোহারি দোকান আছে। বয়স বাইশ তেইশ হবে।
লম্বা একহাড়া গড়ন। অদ্ভুত বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা।
– হ, আমি। কেমুন আছো, মাহাবুব ভাই?”
– ভালা! ত’র বাজান ভালা আছে তো?”
– হ, আছে।”
নিজ মনে পাতা কুড়াতে থাকে চৈতী। দুচোখে বিস্ময় নিয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মাহাবুব ওর দিকে।

আড় চোখে দ্যাখে চৈতী। লজ্জা পায় ও।
– কি দ্যাখো মাহাবুব ভাই?”
– ত’রে দেখি রে চৈতী।”
– আমারে বুঝি আগে দ্যাখো নাই?”
– দ্যাখছি তয়….. ”
থেমে যায় মাহাবুব। কী যেন ভাবে ও একমনে।
– কী ভাবতাছো মাহাবুব ভাই?”
– কিছু না রে। থাক, আমি যাইগা। শহর থাইকা মাল আনন লাগবো। বেচাকেনা কম। দিন চলবার চায় না। একলা রান্ধন বাড়ন কইরা দোকান চালান
বড়ই অসুবিধা রে বুঝলি!”
– একডা বিয়া কইরা ফ্যালাও না ক্যান!”

বলেই নিজ মনে হাসতে থাকে চৈতী। অপূর্ব পাগল করা সেই হাসিতে অনেক আগেই মুগ্ধ হয়েছিল মাহাবুব। ভীষণ ভালো লাগে মেয়েটাকে।

পরীর মতো সুন্দর মেয়ে চৈতী। দেহলতা যেন একটি কিশোরীর সদ্য ফোটা যৌবন। গৌরাঙ্গী টানা টানা চিত্রিত আখি যুগল বনহরিণীর মতো মায়াময়। দু’গালে লাবন্যের ঢল। যে কোন শিল্পীর আঁকা ছবি। মাহাবুব বলে,
– আমগো আবার বিয়া! নিজে ভালা মতো খাইতে পাইনা, বউরে খাওয়ামু কী? তয় তর মতন একখান বউ পাইলে চিন্তা থাকতো না। কি কস?”

– যাও, তুমি বড় ইয়ে….. ভীষণ লজ্জা পায় চৈতী।
তারপর ছুটে পালিয়ে যায় ওখান থেকে।

একদৃষ্টিতে ওর চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে থাকে মাহাবুব আলী।

মাহাবুবকে প্রথম দেখার পরই ভালো লেগেছিল চৈতীর। বিষণ্ন প্রতিটি সকাল দুপুর রাত নিজেকে নিঃসঙ্গ, একাকী মনে হয় ওর। দুচোখে মাহাবুবের স্বপ্ন এসে ভীর করে সারাক্ষণ। ওর বুকে কথার ব্যথা জমে জমে পাহাড় হয়ে উঠেছে। মাহাবুবকে মুখ ফুটে বলতে পারে না, মনের সেই কথাগুলো। সেই ছোটবেলা থেকে দেখে আসছে ওকে। সারাদিনের ক্লান্তির পর বিছানায় শুয়ে মাহাবুবের কথা ভাবতে ভাবতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ে চৈতী।

-মাইয়া বড় হইতাছে, বিয়া দেওন লাগবো না?”
বলে কলিম মিয়ার স্ত্রী জয়তুন বিবি ।
– ‘ হ , হেই কথা ভাইবা দেখছি। ভালা পোলা খুঁজতাছি। দ্যাখি কি করন যায়।”

কথাগুলো বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে কলিম মিয়া।

সন্ধ্যা নেমে এসেছে। রিকশা নিয়ে ঘরে ফিরছিলো কলিম মিয়া। সূর্যটা সামনের দীঘির বুকে শেষ সোহাগ চিহ্ন একে দিয়ে বিদায় নিয়েছে কিছুক্ষণ আগে। হঠাৎ তানভীর ব্যাপারী পথ আটকায়, কলিম মিয়ার।
– কেমুন আছো চাচা? শরীর ভালা তো?”
কিছুটা অবাক হয়ে কলিম মিয়া বলে,
– আছি আর কি, আমগো ভালা থাকা! আপ্নে এদিকে ক্যান ব্যাপারী সাব! কিছু কইবেন?”
– তোমার বাড়িতেই যাইতাছিলাম চাচা। তো রাস্তায় যখন দেখা হয়েই গেল ,আর যামু না।”
অবাক হয়ে ভুরু কুঁচকায় কলিম মিয়া। কারণ তানভীর ব্যাপারীরে সবাই ভয় পায়। বেশ নাম ডাক এলাকায়। অবস্থাও বেশ ভালো। থানা পুলিশ, নেতা সব হাতে রাখে এই লোক।
– তো হঠাৎ এই গরীবের বাড়িত কিয়ের লাইগা!
ব্যাপার কী?”
– চাচা, তুমি তো জানোই আমার প্রথম স্ত্রী মারা গেছে , বিয়ার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই। দ্বিতীয়ডা এক পোলার লগে ভাইগা গেল। হের পর থাইকা তো আর বিয়া শাদী করাই হলো না। আর কতদিন এম্নে চলে কও! তোমার মাইয়াডা তো ডাঙর হইছে। বিয়া দিবা নাহ্?”
– হ, বিয়া তো দেওনই লাগবো।”
– চাচা, কইছিলাম কী চৈতীরে আমি ঘরে নিবার চাই। সুখে থাকবো, কুনো অসুবিধা হইবো না।”
– কন কী ব্যাপারী সাব! আপ্নে চৈতীরে বিয়া করবেন! কিন্তু……..”
– কোনো কিন্তু নাই চাচা! আপনি রাজি থাকলেই হইবো।”
– তয়, চৈতী রাজি কিনা কে জানে?”
– দ্যাহ চাচা, তুমি আমারে ভালা কইরাই চিনো। দেখতে আমি খুব একটা সুন্দর না। তয় ট্যাকা পয়সা, জমি জমা বহুত আছে। তোমার মাইয়া রাজরানীর মতো থাকবো।”
– ঠিক আছে, আমি আর কি কমু। আপনি সব ঠিক ঠাক করেন। আপনাগো কথাই তো শ্যাষ কথা।”

কলিম মিয়া চলে যায় কিছুটা খুশি মনে। মেয়েকে নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিল।
কলিম মিয়া চলে যাওয়ার পর ঘরে ফিরে যায় তানভীর ব্যাপারী। আলমারির ভেতর থেকে বোতল বের করে। কর্ক খুলে গড় গড় করে পেটে চালান করে দেয় বোতলের তলানী পর্যন্ত। এক সময় ক্লান্ত দেহটা বিছানায় এলিয়ে দেয় তানভীর। চোখে তার রঙিন স্বপ্ন।

চৈতীকে দেখেছে অনেকবার। জিনিস একখান। প্রথম কাজ হলো ঐ বেটা দোকানদার মাহাবুব আলীরে সরাতে হবে। তার সাথে নাকি প্রেমনীলা চলছে মেয়েটার। গ্রামের লোকজন তো তাই বললো।

গভীর রাত। ঠক্ ঠক্ শব্দে ঘরের বেড়ায় ঠোকা পড়ায় ঘুম ভেঙে যায় মাহাবুব আলীর। মনে মনে বলে, এত রাইতে কোন হালায় আবার জ্বালাইবার আইলো। বেড়ার ফুটো দিয়ে চৈতীকে দেখে বিস্মিত হয়ে যায় মাহাবুব। সেই সাথে সমস্ত শরীর রোমাঞ্চিত হয়ে উঠে। প্রবল উত্তেজনায় শরীর টান টান হয়ে যায়। বিছানা ছেড়ে অতি সন্তর্পণে দরজা খুলে দেয় মাহাবুব। বলে,
– চৈতী, তুই এত রাইতে?”
– আমারে বাঁচাও মাহাবুব ভাই, বাজান আমার বিয়া ঠিক করছে ওই বদমায়েশ তানভীর ব্যাপারির লগে। কালকা বিদসুৎবার বিয়া!”
খবরটা শুনে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে যায় মাহাবুব। ওর সব স্বপ্ন বুঝি মিছে হয়ে যায়। সামলে নিয়ে বলে,
– তুই যা! দেহি আমি কী করবার পারি।”
– না আমি যামু না। তুমি আমারে খ্যাদায়া দিও না। আমারে তুমি…………!”
– আহা পাগলামি করিস না তো! এত রাইতে ত’রে এইহানে দ্যাখলে মাইনষে কী কইবো! তুই যা আমি সব ব্যবস্থা কইরা ফেলামু, চিন্তা করিস না।”

বিষণ্ণ মনে চলে যায় চৈতী নামের সদ্য যুবতী হওয়া অপ্সরী যেন একটা। রাতের ঠাণ্ডা হাওয়া সা সা করে ছুটে যায় খোলা মাঠের দিকে। অন্ধকারে চৈতীর চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে থাকে মাহাবুব। ওর ছায়াটা অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার পর দরজা লাগিয়ে দেয় ও। কি করা যায়, কি করতে পারে ও। তানভীর ব্যাপারীর লগে টক্কর দিয়ে কী জেতা যাবে! একটা যন্ত্রণার ঝলক মুচড়ে মুচড়ে উঠে ক্ষতবিক্ষত করে দেয় মাহাবুবের মনটাকে। যেভাবেই হোক কিছু একটা করাই লাগবে।
নইলে চৈতীরে নিয়া পলায়ে যাইতে হবে।

আবারও দরজায় টোকা পড়ে। চমকে উঠে মাহাবুব।
– আবার ক্যান আইলি?”
দরজা খুলতেই একেবারে স্তম্ভিত হয়ে যায় মাহাবুব। দরজায় দাড়িয়ে ইউনিফর্ম পড়া দুজন পুলিশ। মুখে কৌতুক পূর্ণ হাসি।
– কি হে, আছিস তাইলে! তো ফেনসিডিলের বোতলগুলো কই রাখছিস?”
– কিয়ের কথা কইতাছেন? আমি তো কিছুই বুঝবার পারতাছি না!”
– তা বুঝবার পারবা ক্যান, ভালো চাস তো বোতল গুলো বাইর কইরা দে!
ওই জোবায়ের ওর ঘর সার্চ করে দ্যাখ তো!”
জোবায়ের নামের পুলিশটা ভেতরে ঢুকে পড়ে। চৌকির নিচ থেকে বের করে আনে একটা কাপড়ের পোটলা।
ওটা খুলতেই বেরিয়ে আসে চার-পাঁচটা ফেন্সিডিলের বোতল। ধরে নিয়ে যায় ওরা মাহাবুবকে। কিছুই বুঝতে পারে না সহজ সরল মাহাবুব আলী। ভাবে, চৈতীর সাথে ওর সম্পর্কটা তানভীর ব্যাপারি জানতো বোধহয়। মনে মনে জ্বলে উঠে ও।

বিয়ে হয়ে যায় চৈতীর, তানভীর ব্যাপারির সাথেই। বিয়ের দুমাস যেতে না যেতেই অত্যাচার শুরু করে দেয় ব্যাপারী। দিনরাত খারাপ কাজে মেতে থাকে। লাল পানির বোতল তার নিত্যসঙ্গী। কিছুক্ষণ আগেই বাড়িতে ফিরেছে ব্যাপারী। চৈতী শুয়ে ছিল বিছানায়।

হঠাৎই তানভীর ওর চুলের মুঠি ধরে টেনে উঠায়া দেয়।
বলে, হারামজাদি সারাক্ষণ ওই দোকানদারের কথা ভাবোস নাহ? হেয় তো জ্যালের ভাত খাইতাছে চুরি কইরা। ওই ব্যাডার চিন্তায় হুকায়া গ্যাছে হারামজাদি। লাত্তি মাইরা বাড়িতথন বাইর কইরা দিমুনে। যা ভাত লইয়া আয়, খিদা লাগছে।”
গায়ে হাত দেয়া নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
কিছু করার নেই চৈতীর।

তিন মাস পর মাহাবুব জেল থেকে ছাড়া পায়। চৈতীর বিয়ে খবর আগেই পেয়েছি সে। এই বস্তিবাসীর পানি নেয়ার জন্য একটাই চাপকল। সকালবেলা লাইনে দাঁড়াতে হয় বস্তির মানুষজনকে। পানি নিতে এসে হঠাৎ চৈতীকে দেখে মাহাবুব। অনেকটা শুকিয়ে চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেছে। তানভীর ব্যাপারী নাকি মাইরধর করে শুনেছে সে। ইশারায় কাছে ডাকে ও চৈতীকে কিন্তু ওকে না চেনার ভান করে পানি নিয়ে চলে যায় চৈতী। অবাক হয়ে যায় মাহাবুব। তবে কী চৈতী ওকে ভুল বুঝেছে?

বাসায় চৌকির উপর শুয়ে চৈতীর কথা ভাবছে মাহাবুব। চৈতীকে ভুলতে পারে না ও। স্বপ্নের মধ্যে ফুলের গন্ধের মতো ওর সমস্ত মনটা আছন্ন করে আছে বালিকা। সন্ধ্যার কালো আঁধার নেমে এসেছে চারিদিকে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার টানা শব্দ শোনা যায়। ঘর থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাটঁতে কখন যেন তানভীর ব্যাপারীর বাড়ি কাছাকাছি এসে পড়েছে মাহাবুব আলী তা নিজেও জানে না। কিছুক্ষণ আশেপাশে নজর বুলিয়ে নেয় ও। তারপর তানভীর ব্যাপারির দরজায় টোকা দেয় ও। মাহাবুব জানে মধ্যরাত ছাড়া ব্যাপারি ঘরে ফেরে না।

দরজা খুলে চমকে উঠে চৈতী। একটা হার্টবিট মিস করে ও।
– তুমি এইহানে মাহাবুব ভাই! ব্যাপারী তোমারে দ্যাখলে মাইরাই ফেলাইবো। তুমি চইলা যাও।”
– যামু, তয় একটা কথা। তুইও কী আমারে ভুল বুঝছোস? আমি সত্যই কী ওইসব জিনিসের ব্যবসা করি?”
– না! আমি তোমারে চিনি। তোমারে ফ্যাসায় দিছিল ওই ব্যাপারি। আমি সব জানি………..!”
ওই কেডারে ওইহানে? পিছন থেকে চিৎকার করে উঠে তানভীর ব্যাপারি। পালিয়ে যায় মাহাবুব।
চৈতীর চুলের মুঠি ধরে টান দেয় তানভীর। লাথি মেরে ফেলে দেয় মাটিতে।
– হারামজাদি, কেডা আইছিল আমার বাইতে? ত’রে আইজ মাইরালামু। আমার বাড়িত থাইকা পর পুরুষের লগে ফষ্টিনষ্টি করোস?”
লাথি মারতে মারতে হঠাৎ থেমে যায় তানভীর। মৃদু হাসির রেখা ফুটে ওঠে ওর ঠোঁটের কোণে।
– যা আইজকা ত’রে ছাইড়া দিলাম। এরপর আর কনুূদিন ওরে এইখানে দ্যাখলে ত’র খবর কইরা দিমুনে।”
ঘরে ঢুকে আলমারি থেকে বোতল বের করে গড় গড় করে গলায় ঢেলে দেয় তানভীর বোতলের শেষ তলানী পর্যন্ত।

তানভীর ব্যাপারীর লোকের ভয়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে মাহাবুব আলীকে। ওর ঘরবাড়ি, দোকান সব আগুন দিয়ে পোড়ায় দেয় তানভীরের লোকেরা। মাহাবুব এখন ঢাকা শহরে রিকশা চালায়। গুলিস্তান, টিকাটুলি, মতিঝিল কিংবা মালিবাগে। হাজার কথার ভীরে আজও চৈতীকে মনে পড়ে। কিন্ত আগের সেই রঙিন স্বপ্নগুলো আর ভীড় করে না ওর চোখে। চৈতীর ফিনফিনে সবুজ রঙের শাড়ির আঁচল কোথায় হারিয়ে গেছে, পাতা কুড়ানো সেই কিশোরীর দুচোখে দেখা রঙিন স্বপ্নগুলোর সাথে। বয়সের ধুলায় জমে বুজে গেছে শৈশবের নদী। ওকি আজও ব্যাপারীর ঘর করছে? আর কতকাল মাহাবুব কিংবা চৈতীর মতো কিশোরীদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেবে ওই ভানভীরের মতো মানুষগুলো?

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত