“বালক ফিসফিস করে আমায় কিছু একটা বলতে চাইলো, কিন্তু তার গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বেরোচ্ছে না। ঠিক ঐ মুহূর্তে কনকনে শীতের রাতে বাইরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া নিয়ে একটা বিশদ লেকচার দেওয়া উচিৎ…কিন্তু তার চোখের দিকে তাকিয়ে আমার কেন জানি একটা মায়া লাগলো।
জ্বর বড্ড খারাপ জিনিস। তীব্র সুন্দর একজোড়া চোখও জ্বরের সাথে যুদ্ধ করে হার মেনে যায়…সেই চোখ জোড়াতে ভর করে রাজ্যের ক্লান্তি। বালক চোখ বন্ধ করলো। হু,হু করে তার জ্বর বাড়ছে। আমি একটা ভেজা রুমাল হাতে নিয়ে বালকের কপালে রাখলাম। বালক জানেনা, রুমালের রং নীল। জানলে সে খুব রেগে যেতো। নীল রং বালকের পছন্দ না!!!
সপ্তাহখানেক ধরে প্রতিদিন ঘন্টাখানেক পরপর আমি বালকের জ্বরের খুঁজ নিতাম। হয়তো সে বিরক্ত হতো, হয়তো হতো না…আমার এতকিছু ভাবার সময় ছিল না। আমার ভালো লাগলো। খুঁজ না নিতে পারলে কষ্ট লাগতো। আমি নিজের কষ্ট কমাতেই বোধ হয় ওর খুঁজ নিতাম!!!
অনুভূতির বেলায় মানুষ খুবই স্বার্থপর। নিজের ভালো লাগার দিকেই সে দৌঁড়াতে থাকে নিরন্তর…
আমি ডাক্তার নই..কিন্তু আমি জানি, এই পৃথিবীতে সবরকম অসুস্থ্যতার একটাই ঔষধ আছে। ঔষধের নাম “Care”….
গভীর রাতে জ্বরের সাথে যুদ্ধ করে প্যরাসিটামলের হেরে যাওয়ার দুঃখের গল্পটাই হুট করে ‘Care’ এসে হাজির হয়ে গল্পের Happy ending টেনে আনে….
কিছুদিনের মধ্যেই বালকের জ্বর ভালো হয়ে গেল। ব্যপারটাতে আমার খুশি হওয়া উচিৎ…কিন্তু কেন জানি আমি খুশি হতে পারছি না। তীব্র জ্বর আমাকে যে অদৃশ্য অধিকারটুকু দিয়েছিলো, আজ সে অধিকার হুট করে চলে গেলো…!!
এখন আমার জন্য “Care” এর দরজাটা বন্ধ হয়ে গেছে। আমার কেন জানি শূন্য শূন্য লাগতে থাকে। কি অদ্ভুত আমি…কি ভয়ংকর স্বার্থপর আমি….
কষ্টের রং নীল….
বেদনার রং নীল…..
আমার রং ও বোধ হয়য় নীল..
নীল রং বালকের পছন্দ না,
একদম পছন্দ না…