ঈদের শপিং

ঈদের শপিং

মার্কেটে গেছি ঈদের শপিং করতে। ঈদ বলে কথা কেনাকাটি না করলে কি হয়?
এক দোকানে গিয়ে বললাম
– ভাই বাচ্চাদের জামাকাপড় হবে?
– কত বছর বয়সই বাচ্চা।
– এই ধরেন বিশ একুশ।
রাগকে কন্ট্রোল করে মুখে জোর করে হাসি এনে বললেন জ্বী ভাই হবে। বলেন কি লাগবে?
– ভাই বিশ একুশ বছর সাইজের তো সবই লাগার কথা। গেঞ্জি, প্যান্ট, শার্ট।
– হুম বুঝলাম তো আপনি কি নিবেন?
– আচ্ছা লুঙ্গির মধ্যে ভাল কি আছে? দেশি, চাইনা, থাই, ওয়াশ।
– ভাই ফাইজলামি করেন না। ঈদের মৌসুম এমনিতেই অনেক ভির।
– আচ্ছা এমন কিছু দেন যেটা লুঙ্গিও না প্লাজোও না আবার প্যান্ট ও না।
এইবার সম্ভবত দোকানদার ভালভাবেই রেগে গেল। সে প্যাম্পারস বের করে বলল ভাই এই নেন আপনার মত বাচ্চার জন্য এইটাই আছে। লুঙ্গিও না, প্যান্ট ও না আবার প্লাজোও না।

পাশে কিছু আন্টি আর আপা সমাজ সম্ভবত কেনাকাটা করার জন্যই এই দোকানে আসছে। ঈদের মৌসুম দোকানদারের সাথে ফাইজলামি করে তার ক্ষতি করে লাভ নেই তাই পাশে সাইড হয়ে দাড়ালাম।
আন্টি সমাজের সবাই প্রথমে শাড়ী বের করলেন।
-আচ্ছা ঐ যে ঐ শাড়ীটা দেখান তো
– জ্বী। এই নেন। এইটা একদম মনিপুরী শাড়ি। রং উঠবে না। একদম ফ্রেশ আর নিউ কালেকশন। আপনাকে ভাল মানাবে।
– আর কি কি আছে?
– আরো আছে। এই যে এইটা জামদানী, এইটা সিল্কের এইটা টাঙ্গাইলের, এইটা ইন্ডিয়ান, এইটা পাখি।
দোকানদারের ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে ইনাদের কাছে শাড়ী বিক্রি করেই ছাড়বে।
মনে হয় জামদানীর কাপড় টা ভাল লেগেছে তাদের।
– ভাই এই কাপড়ের কালার নেই।
– আছে তো এই নেন।
– না হচ্ছে না। এই কালারের মধ্যে একটু অন্য ডিজাইন।
– এই যে এগুলো হবে।
– এই ডিজাইনের মধ্যে কি কি কালার আছে?
– আছে তো অনেক কালার আছে।
– এই কালারের মাঝে অন্য ডিজাইন নাই।
অলমোস্ট দোকানের সব শাড়িই নামানো শেষ।
পাশে থেকে এক মহিলা বলে উঠল না হচ্ছে না। আচ্ছা তাহলে থ্রিপিছ দেখি।
থ্রি পিছ আছে?
– জ্বী আছে তো।
– দেখান।
– এই নেন।
এইখানেও এই কালারের অন্য ডিজাইন, এই ডিজাইনে অন্য কালার। অন্য কালারের এই ডিজাইন অন্য ডিজাইনের মধ্যে এই কালার করতে করতে শেষ মেষ পিংক কালারের একটা থ্রি পিছ পছন্দ হইছে।
– আচ্ছা ভাইয়া এইটার দাম কত?
– ১২০০ টাকা।
– কি যে বলেন না ভাইয়া। পাশের বাসার আন্টি এরকমইই কিনে নিয়ে গেছে ৩০০ টাকা দিয়ে আমি ২৫০ দিবো দিবেন?
– এই দামে কিনতেও পারি নি আপা। একদাম ১১০০ রাখা যাবে। এর নিচে আমি আর পারবো না।
– ২৭০ দিব। দিবেন?
– না আপা সম্ভব না।
তাইলে থাক। চলে যাচ্ছে। ঘুরে উঠে আরেকজন বলল আর দশটাকা দিবো নি হইলে দিয়ে দেন।
– না আপা হবে না।
সেল্ফ পুরো টাই প্রায় খালি।
দোকানদার সবগুলো ভাজ করতে করতে আমার দিকে তাকাই বলতেছে ভাই টায়ার্ড লাগতেছে অনেক। আপনার কি যেন লাগবে? আর আগের বিহেভের জন্য সরি।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত