ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

৯ম শ্রেণির এক্স প্রিয়ার সাথে প্রায়ই ১৮বছর পর একটি বিয়েতে হঠাৎ দেখা। আমাকে দেখে প্রিয়া হঠাৎ করে হেসে বলে উঠলোঃ

– এই রাইহান যে, কেমন আছো?
– ভালো! কিন্তু তুমি কে? ( ভং ধরেছি)
– আমাকে চিনোনি? আমি প্রিয়া তোমার ক্লাসমেট ছিলাম।
– ওহ আচ্ছা চিনলাম।
.
ভাব ধরে আমি কিছু না বলে দাঁড়িয়ে আছি। প্রিয়া আবার বলা শুরু করলোঃ

– এই ১৮ বছরে আমাকে ভুলে গেলে?

– ” ৩বছর মনে রেখেছিলাম তোমার কথা, তোমার সাথে কাটানো দিনগুলো মনে করেকরে কেঁদেছিলাম খুব। আমাকে ছেড়ে তুমি এইভাবে চলে যাবে তা কখনো ভাবিনি। তোমার বিয়ে হয়ে গেছি মেনে উঠতেও পারিনি ওই ৩বছর ধরে তোমার কথা ভেবেভেবে আমি রাত জেগেছি, কিছুতেই ঘুমাতে পারিনি। তোমার টেনশনে ২বার এসএসসিতে ফেইল করেছি। দিনেরপর দিন ব্যর্থতা যেনো আমার পিছইু ছাড়ছিলইনা! একদিন রাতে খুবই ডিপ্রেশড হয়ে সিগারেট টানছিলাম, হঠাৎ আমার সামনের চেয়ারে দেখি আমার মতো হুবুহু দেখতে একজন ছেলে বসে আছে। হয়তো ওইটা আমার আত্মা ছিলো। আমার আত্মাটি আমাকে জিজ্ঞেস করলোঃ

– কিরে,তুই এতো ফেইলর কেনো? কিসের এতো চিন্তা তোর?
– ইয়ে,মানে আমার প্রেমিকা প্রিয়ার বিয়ে হওয়ার পর থেকেই আমি কিছুতেই আর পড়ালেখা বা অন্য কিছুতেই মন বসাতে পারিনা। সারাক্ষণ শুধু তার কথাই মাথায় আসে।

– হায়রে পাগল! তুই আসলেই একটা মূর্খ, ওই প্রিয়া কি তোকে একবারের জন্যও মনে রেখেছে? তোকে ছেড়ে সে আরেকজনকেই বিয়ে করে ফেললোনা? তাহলে তুই কেনো তাকে মনে রাখবি? একটি বারের জন্য ওই প্রিয়াকে ভুলে গিয়ে দেখ তোর জীবনটাই বদলে যাবে।

এই বলেই আত্মাটি হঠাৎ ভানিশ হয়ে গেলো। তার কথা মতো আমি পুরোপুরি তোমাকে আমার মন থেকে সরিয়ে দিয়েছি, ভুলে গেছি তোমাকে। তোমার সব স্মৃতি আমি মুছিয়ে ফেলে আমার নতুনভাবে জীবন শুরু করেছি।

আর তখন থেকেই শুরু হয় আমার সাফল্যের গল্প। সেই বছর এসএসসিতে আমি গোল্ডেন এ+ পেয়ে পাস করেছি। আজ দেখো আমি একজন গ্রেট বিজনেসম্যান! একমাত্র তোমাকে আমার জীবন থেকে মুছে ফেলেছি বলেই আজ আমি এই পজিশনে এসেছি। তাই তোমাকে মনে রাখার আর কোনো মানেই হয়না।

– আসলেই রাইহান তুমি আজ প্রতিষ্টিত তাই আর আমাকে কীভাবে মনে রাখবে? আর রাইহান বিশ্বাস করো আমি বিয়ে করতে চাইনি আমার পরিবার আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছে।
– আচ্ছা বাদ দাও ওই কথাগুলো, এইগুলো বলে আর লাভ নেই।

আমাদের কথা শেষ হতে না হতেই আমার এক্স কে পিছন থেকে একজন মেয়ে আম্মু বলে ডাক দিলো। ওয়াও!! মেয়েটি এতো সুন্দর বলে কিভাবে বুঝাবো। আমার এক্স আমার দিকে থাকিয়ে বললোঃ

– এইটা সুপ্রিয়া, আমার মেয়ে।
– তোমার মেয়ে??
– হুম আমার মেয়ে..কেনো কিছু হলো নাকি?
– না কিছুইনা।
– আচ্ছা রাইহান আমি এখন আসি আমার মেয়ে ডাকছে আমায়।
– আচ্ছা ঠিক আছে যাও।

আমিতো আমার এক্স এর মেয়েকে দেখে পুরাই ক্রাশ খাইছি। তার মাকে স্কুল জীবনে প্রথম দেখেই এতোটাও ভালো লাগেনি। সেই বিয়েটাতে সারাতাম ধরে আমার এক্স এর মেয়ে সুপ্রিয়াকে ইম্প্রেস করতে ব্যস্ত ছিলাম। আর তাকে একা পেয়ে সুযোগ বুঝে প্রপোজও করে ফেললাম, হাজার হলেও আমি গুড লুকিং হ্যান্ডসাম আর একজন গ্রেট বিজনেসম্যান সেও আমার প্রপোজাল এক্সেপ্ট করে ফেললো।

আমাদের প্রেম এখন খুবই ভালো যাচ্ছে। আমরা আসলেই খুবই হ্যাপি আছি… সামনে সুপ্রিয়ার মায়ের কাছে যাবো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত