হাটতে কষ্ট হচ্ছে। শরীরে শক্তি পাচ্ছি না। কে জানি বলেছিলো, অন্তরে জোড় না থাকলে শরীরে জোড় থাকে না। কথাটা হাতে-কলমে বুঝে আসছে আজ। মাথাটাও কেমন জানি করছে। পা একটি মাটিতে রাখলে আর উঠতে চাচ্ছে না। অপরটিও যেন খুট্টি মেরে বসে থাকতে চাচ্ছে, যেন অভিমান করেছে পদযুগল। অপরদিকে চোখদ্বয়ও ছোট হয়ে আসছে যেন হাজার রজনি জেগে রয়েছে, এখন না ঘুমালে চলবে না। কর্ণদ্বয়ে চো-চো শব্দ করছে। পাকস্থলিও উতাল-পাতাল করছে, মনে হচ্ছে ভিতরে যা আছে বের করে দিবে।
মন অনুভূত হচ্ছে কেন? শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ বিদ্রোহ ঘোষণা করতে চাচ্ছে। হরতাল আবরোধ করবে মনে হয়। গতরাতে নেশা-টেশা করেছি কি? নাহ! এ বদ অভ্যাস তো আমার নেই। নেশা জাতিয় কোন দ্রব্য আমি জীবনে দেখিনি। কোথায় পাওয়া যায় তাও জানি না। তা হলে এমন লাগছে কেন? সকালে অনেক কষ্ট করে ঘুম থেকে উঠে হোটেলে নাস্তা করতে গেলাম। কিন্তু মুখে রুচি বলতে কিছু পেলাম না। এক রুটির অর্ধেক খেয়ে আর খেতে পারলাম না। শেষে পানি মুখে দেয়ার পর মনে হলো পানি তিতা লাগছে। বমি-বমি ভাব শুরু করাতে তাও খেতে পারলাম না। এমন লাগছে কেন? মরে-টরে যাবো নাতো? জীবন প্রদীপ নিভে যাবে নাতো?
কিছু মনে করতে পারছি না। মনে হচ্ছে সব ভূলে গেছি। স্মরণশক্তি লোপ পেয়ে গেছে। আজ সকালের আগে কোথায় ছিলাম, আমি কি করি, আমার কাজ কি, আমি কেনইবা এখানে থাকি, আমার আর কেউ আছে কি না। আহ! কিছুই মনে আসছে না। স্বশব্দে চিৎকার করতে মন চাচ্ছে। গগণ ফাটিতে বলতে মন চাচ্ছে আমার এমন লাগছে কেন?
নেশাখোরের মত টলতে টলতে অনেক পর পর এক পা এক পা করে সামনে যাচ্ছি। হঠাৎ মনে হলো কোথায় যাবো আমি? তবে পরিবেশটা পরিচিত মনে হচ্ছে। পা দু‘টোকে মনে হচ্ছে একটি পাহাড়। তুলতে অনেক কষ্ট হচ্ছে, ভূমি চুমুকের মত আকড়ে ধরে আছে।
চোখদ্বয় দিয়ে তেমন কিছু দেখতে পাচ্ছি না, কুয়াশার মতো ঝাপসা ঝাপসা দেখছি। ঐতো সামনে কি যেন উপরে উঠে গেছে সিড়ির মতো। পাশের রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছি, উপড়ে উঠার সাহস পাচ্ছি না। শরীরে শক্তি নেই। আকাশটা নিচে আর জমিনটা উপরে উঠে গেল নাকি? আমি শূন্যে ভাসতে আছি কেন? সব কিছু চতুর্দিকে এলামেলো ঘুরছে। কোথায় যেন দ্রুত উড়ে যাচ্ছি। কষ্ট হচ্ছিল প্রচন্ড। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। আমার এতো কষ্ট কেন? এর কি শেষ হবে না? যেতে যেতে আকাশে গিয়ে ঠেকে গেলাম। এইতো আরাম পাচ্ছি। আকাশটা দেখি অনেক নরম, তোলার মতো। আহ! কত আরাম আর শান্তি। এতো প্রশান্তি কোথায় ছিলো!
এক ফোটা গরম পানি আমার গালে পড়ল। তাকিয়ে দেখি জমিনের মানুষগুলো মাথা আমার দিকে আর পা‘গুলো উপরে দিয়ে দাড়িয়ে আছে। চারপাশে শুভ্র কাপড় পরিহিত আপাদমস্তক ডাকা নারীকন্ঠ পরস্পরে ফিসফিস করেছে। কান খাড়া করে বুঝার চেষ্টা করলাম, সামান্য যা বুঝে আসলো তা হলো, একজন অন্যজনকে বলছে এখনো মরেনি, জ্যাতা আছে।
নরম কি যেন কপালে, মুখে বিচরণ করছে। ফুপিয়ে ফুপিয়ে চাপা কান্নার স্বর শোনা যাচ্ছে। মুখের গরম পানি মুছে দিলো। কৌতুহল বশত অনিচ্ছা সত্বেও জোরপূর্বক চোখ খুললাম। দেখি ছোট্ট বেলায় মারা যাওয়া আমার মা মাথার পাশে বসে অপলক দৃর্ষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চোখে জল ছলছল করছে। দেড় যুগ পর মা‘কে দেখে খুশিতে উঠে বসতে গিয়ে দেখি আমি নড়তে-চড়তে পারিনা। এতো দিন পর মাকে দেখে চোখে জলের ঢল শুরু হলো। কান্না জড়িত কন্ঠে মাকে বললাম; আম্মা! এতো দিন কোথায় ছিলে? তুমি অনেক নিষ্ঠুর মা! আমাকে ছেড়ে কোথায় যে চলে গেছিলে। তুমিহীনা অনেক কষ্টে বড় হয়েছি। মুখ খানা আমার কাছে এনে মা‘জান বলল; বাবা! তোর অনেক কষ্ট। তাই তোকে দেখতে চলে এলাম।
কান্না চেপে বললাম; হুম! আমার অনেক কষ্ট হয় মা। তুমি চলে যাওয়ার পর বাবা আরেকটা বিয়ে করেন। নতুন মা আমাকে দেখতে পারতো না। নানা রকম অত্যাচার-নির্যাতন করত উঠতে বসতে সকাল বিকাল। বাধ্য হয়ে সেই ছোট বেলায় বাড়ি ত্যাগ করি। ও মা! তুমি যখন ছিলে, তখন বাবা অনেক ভালবাসতো। তুমি চলে যাওয়ার পর তার ভালবাসা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ক্রমাণ্যয়ে তার ভালবাসা কমে যেতে থাকে, এক সময় আমার উপর টর্চারিং শুরু করেন। এমনকি কয়েক বার আমাকে প্রচন্ড মারেন। ঘাড় ধরে বাড়ি থেকে বের করে দেন। মা! জানো? বাবা তখন কি বলে ছিলো? বলেছিল; বাড়ি থেকে বের হয়ে যা। আর আসবিনা এই বাড়িতে। বলো মা! আমি কোথায় যাবো? আমার যাওয়ার আর কোন জায়গা আছে? সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে রাতে না খেয়ে প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়ে গোয়াল ঘরে খড় বিছিয়ে শুয়ে পড়তাম। মশা কি যে কামড়াতো, বলে বুঝাতে পারবো না। নতুন মা ও বাবার অত্যাচারে একদিন সত্যি সত্যি বাড়ি ছেড়ে দিই। মা! আমি কি ভাল কাজ করিনি?
মা মাথা নেড়ে বলল; হুম! ভাল করেছিলি। তা না হলে আজ তুমি এতো বড় হতে পারতি না। আল্লাহ তোর মঙ্গল করেছে। তো বাবা! তোমার এখন কিসের এতো কষ্ট? তুমি আমার এখানে চলে আসতে চাচ্ছো?
আমি আস্তে আস্তে মাকে বললাম; মা! আমি একজনকে মন-প্রাণ দিয়ে পছন্দ করতাম। সেই ছিলো আমার প্রশান্তি। আমার বেচে থাকার প্রেরণা। আমার বড় হওয়ার অগ্রপথিক। তার জন্যই আমি আজ এতো দূর এসেছি। কিন্তু জানো মা? সেও তুমার মতো আমাকে একা রেখে চলে গেছে। বলতো মা! আমি কি করে বাচি। আমারতো আর কেউ নাই।
ও মা! তুমি কি তাকে চিনো? সে অনেক সুন্দর ছিল। অনেক ভাল মনের মানুষ ছিল। আমাকে বড় হওয়ার জন্য অনেক প্রেরণা দিতো। ও না থাকলে আমি এ পর্যন্ত আসতে পারতাম না। কিন্তু ও আমাকে ছেড়ে চলে গেল। আমি একা হয়ে গেলাম। মনে হয় আমি আর বেচে থাকতে পারবো না। এ যাত্রায় আমার কাম শেষ হয়ে যাবে। তাকে ছাড়া আমার বেচে থাকাটা অনেক কষ্টের হবে। আমি তাকে ভূলতে পারবো না।
মা কপালে চুমু দিয়ে তাকিয়ে থাকল; আমি বললাম; মা তুমি তো জানো! আমি এমন জায়গায় থাকি যেখানে কোন কোলাহল নাই। একেবারে নিড়িবিলি পরিবেশ। একটি সরু পথ বাগানের ভিতর চলে গেছে তার শেষ মাথায় আমার আবাসস্থল একটি পাকা ভবনে। একটি বারান্দাসহ তিনটি রুম রয়েছে ভবনটিতে। ফ্যামেলি বাসার মতো প্রয়োজনীয় সব কিছুই তাতে আছে। ভবনের চতুর্দিকে বাগানের বড় বড় গাছ। গাছগুলো পুরো ভবনটি ঘিরে ফেলেছে। কোন ধরনের কোলাহল নাই পরিবেশটিতে। মাঝে মাঝে ঘুঘু আর কোকিল আরো কি কি জাতের পশু-পাখির আওয়াজ শুনা যায়। এ ছাড়া পুরো পরিবেশ ভুতুড়ে ধরনের বিশাল জঙ্গল। আমি উক্ত জঙ্গলের পাহারাদার। রাত হলে যেন এক মৃত্যুপুড়ি। কোন সাড়া শব্দ নাই। প্রথম প্রথম ভয়ে গা ছমছম করতো। মালিক আমাকে অনেক আদর-যতœ করেন। সব কিছুর প্রতি লক্ষ্য রাখেন। তার অনুগ্রহেই পড়া-লেখাসহ সব কিছু করছি। তাকে আমি পালক বাবা মনে করি। সেও আমাকে সন্তানের মত খবরগীরী করেন।
মা! যাকে আমি পছন্দ করতাম না? সে একদিন আমার সাথে দেখা করার জন্য বাগান বাড়ির পাশের রাস্তায় আসল। আমরা দু‘জনে অনেক আলাপ করলাম। হঠাৎ লক্ষ্য করলাম আকাশ উত্তর পশ্চিম দিকে আমাবস্যার ন্যায় অন্ধকার করে ফেলেছে। দেখতে দেখতে বাতাসও শুরু হয়ে গেল। তার বাসা একটু দুরে হওয়ায় সে অনেক উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়ল। তাকে বললাম; ভয় নাই। আমার সাথে বাগানের ভিতর বাড়ি চলো। সে বলল; না ওখানে আমি একা যাবো না। বললাম; আমাকে তুমি ভালবাস? বলল; হ্যা! অবশ্যই। তাকে বললাম; আমার উপর ভরসা করে চলো ওখানে আশ্রয় নিই। ইতিমধ্যে বৃষ্টি আর বাতাস প্রচন্ড ঝড় আকারে বইতে লাগল।
ঝড়ের মাঝে পরস্পরের হাত ধরে দৌড়াতে দৌড়াতে অর্ধেক বিজে ভবনে আশ্রয় নিলাম। সেদিন পুরো বিকাল প্রচন্ড ঝড়ের তান্ডবে অনেক গাছপালা ভেঙ্গে অনেক ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু আমি তার কোন ক্ষতি করিনি। ঝড়ের তান্ডব শেষ হলে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল; শওকত আমি তোমাকে জড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করছি; তুমি আমার বিশ্বাসের পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছ। আমি কোন দিন তুমাকে ছাড়া অন্য কাউকে জীবন সাথি বানাবো না। বাচলে তুমাকে নিয়েই বাচব। তুমি অনেক ভাল একটি ছেলে। তুমাকে না পেলে আমি বাচব না। সেদিন থেকে আমরা পরস্পরকে পাগলের মতো ভালবাসতে শুরু করি। একজন অপর জনের শ্বাস-নিঃস্বাসে পরিণত হই।
সবাই জানতো আমাদের ভালবাসার কথা। ওর পরিবার থেকে কোন প্রকার বাধা দেননি। আমার মালিকও মেয়েটিকে কষ্ট না দেয়ার পরামর্শ দেন এবং তার সাথে আমাকে বিয়ে করিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তার জন্য আমি অনেক কিছু করেছি। কিন্তু সে ঝড়ের বিকালের প্রতিজ্ঞা ভূলে গিয়ে অজানা পথে চলে গেছে। সে কি জানতো না? তাকে ছাড়া আমি কতটুকু কষ্ট পাবো? এজন্যই আমি তোমার কাছে চলে আসার চেষ্ট করছি।
ও মা! কি হলো কিছু বলছো না কেন? মা! তুমি আমকে ফেলে যেও না। প্রতিজ্ঞা করো, আমাকে ছেড়ে আর যাবেনা। তাহলে তো আমার আর কেউ থাকবে না। যদি চলেই যাও, তাহলে আমকে নিয়ে যাবে। মা আমার চোখের পাতা হাত দিয়ে বন্ধ করে দিয়ে ঘুম পাড়ানি গীত বলতে লাগল। মা বলতে লাগল; ছেলে ঘুমালো পাড়া জুড়ালো।
জানি না কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম। চোখ খুলে দেখি আমার বন্ধুরা উদ্ধিগ্ন চোখে তাকিয়ে আছে। আস্তে আস্তে বললাম; আমি কোথায়? হাসপাতালে। এখানে কেন? সিড়ির গোড়ায় পড়েছিলি। আজ দু‘দিন পর তোর হুশ ফিরেছে। কি এমন হয়েছে যে, হার্ট এটাক করতে হবে? দিলিতো জীবনটারে পঙ্গুকরে। তোরাই বল; ও ছাড়া আর আমার আছেইবা আর কি। ও চলে গেছে তাই হার্ট দূর্বল হয়ে গেছে। এখন এটাক করাটা স্বাভাবিক। আমি বাগান বাড়ি যাবো ওখানে হয়তো আমার মা বসে আছে। আমাকে নিয়ে যেতে এসছে।
কি আবল তাবল বলছিস; বাগান বাড়িতে কেউ নেই। ওখানে কাউকে দেখিনি। তাহলে মা‘যে এসেছিল। আরে তোর মা দেড় যুগ আগে মারা গেছে, এখন আসবে কিভাবে। তোর মাথা ঠিক আছে তো? না আমি ওখানে নিজে দেখতে যাবো। আরে থামতো! ডাক্টার বলেছে; আরো পনের দিন কোন নাড়াচাড়া করা যাবে না। এখানেই থাকতে হবে। তোর ভাগ্য ভাল যে, ঝড়ের সময় তোর ওখানে আশ্রয় নিতে গিয়ে দেখি সিড়ির গোড়ায় পড়ে আছিস। অগ্যতা ঝড়ের মধ্যে ভিজেই তোকে এখানে আনলাম। ঝড় না হলে হয়তো তোকে আমরা আর জীবিত দেখতে পাড়তাম না। আল্লাহর বড় দয়া যে, তিনি ঠিক সময়ে ঝড়-বৃষ্টি দিয়ে আমাদেরকে তোর জঙ্গল বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেন। তোকে বাচানোর রাস্তা তৈরি করেন।
তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে। ঐদিকে তাকাতো, চিনতে পারিস কি না? নাতো চিনতে পরিনি, কে? ভাল করে দেখ চিনিস কিনা? চিনবো কেমনে, মুখতো আপর দিকে ফিরানো। আরে অভিনয় না করে বল, কে?
বন্ধুদের কথা শুনে আমি আশ্চর্য, বিস্মিত হই। খুশিতে নিজেকে অনেকটা সুস্থও বোধ হল। বন্ধুরা বলল; তোর বাপকে আমরাই খবর দিই। ডাক্টররা তোর পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে বলল, রোগীর আপন কেউ থাকলে তারাতারি সংবাদ দিন। রোগীর অবস্থা ভাল না। কিছু বলতে পারছিনা। কাল শুরু রাতে হাজির হন। তোর বাপ এসেই কি যে কান্না। তোকে দেখে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দেন। কপালে, হাতে, পায়ে চুমু দিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে থাকেন। প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ যে এতো কাদতে পারে তা কখনো দেখিনি। দিন-রাতের মধ্যে কখনো হাত ধরে বসে বসে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আর না হয় পা ধরে বসে আছে। আসার পর থেকে কান্না ছাড়া একটি মুহুর্তও বাদ রাখেনি। যতবার দেখেছি ততবার চোখ মুছতে দেখেছি। একটুও ঘুম যায়নি। চোখদ্বয় ফুলিয়ে ফেলেছে। আমরাই কিছুক্ষণ হলো অনেক জোড় করে ঘুমাতে পাঠালাম। ডাক্টর বলছে, এখন সঙ্কামুক্ত, যে কোন সময় হুশ ফিরতে পারে।
দু‘ফোটা গরম জল চোখের কোনা দিয়ে কানের দিকে গড়িয়ে গেল। বন্ধুদের চোখেও দেখি দু‘ফোটা জল চোয়াল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে। ঘাড় কাত করে লোকটির দিকে চেয়ে আছি; এই যে ক্লান্ত-শ্রান্ত অসহায় আমার জন্মদাতা পিতা। নিজ ঔরষের সন্তান মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে শুনে দৌড়ে এসে হাজির হয়েছে। হাজার হলেও তার অন্তরে সন্তানের প্রতি ভালবাসা আছে। জানালা দিয়ে বাহিরে চোখ পড়তেই দেখি, প্রচন্ড ঝড় গাছগুলোকে এদিক-ওদিক দুলাচ্ছে, বড় বড় বৃষ্টির কণা পাতাগুলোকে ধুয়ে দিচ্ছে। আমিসহ বন্ধুরা সবাই নিরবে বাহিরের দৃশ্য অবলোকনে ব্যস্ত। দৃশ্যটি ভাল লাগতেছিল। পরক্ষণেই এই ঝড় ওর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বিড়বিড় করে বলি; তুমিহীনা এই ঝড় ভাললাগে না। প্রতিটি ঝড় আমাকে স্মরণ কিরয়ে দিবে তোমাকে।