মুনিয়ার পুষ্যি

মুনিয়ার পুষ্যি

মা বলল,”মুনিয়া চটপট। এক্ষুণি ইসকুলের বাস এসে যাবে। ডিমসেদ্ধ খেয়েছ? দুধটা একদম চোঁ-চোঁ করে খেয়ে নাও। তারপর নিচে দৌড়োও, আমি আসছি।”

মা রান্নাঘরের দিকে যেতেই মুনিয়া দুধটা সাবড়ে দিল একনিমেষে, কিন্তু টেবলে রাখা টিসুপেপারের প্যাক থেকে একটা টিসু নিয়ে আধখাওয়া ডিমটা সন্তর্পণে মুড়ে, অন্যহাতে এক হ্যাঁচকা টানে স্কুলব্যাগ কাঁধে নিয়ে দৌড়ল লিফটের সামনে। ভেতরে মা তখনও বলে যাচ্ছে, “ওরে দাঁড়া, আপেলের টুকরোগুলো দিতে ভুলে গেছি।”

আর আপেল!

একতলায় তাদের অ্যাপার্টমেন্টের সদর গেটের পাশে, পাহারাদারের ঘরের পিছনদিকে পাম্পহাউসের ঢাকা জায়গাটায় হাঁপাতে হাঁপাতে এসেই সে টিসু কাগজের মোড়ক খুলে ডিমটা রেখে বলল, “লিও, চটপট খেয়ে নাও, একটুও নষ্ট করবে না বলে দিচ্ছি। আমার এখন বলে কত কাজ, বাস এসে যাবে।”

যার উদ্দেশ্যে বলা, তিনি ল্যাজ নাড়তে নাড়তে উঠে এসে মুনিয়ার হাত চেটে দিলেন। তারপর, চোখ না ফোটা কুতকুতে বাচ্চাগুলোর ঘেঁটি ধরে এক এক করে মুনিয়ার পায়ের কাছে জড়ো করতে লাগল।

দরজায় কিসের ছায়া পড়লো দেখতে গিয়ে আড়চোখে মায়ের চটি, শাড়ির পাড় এর বদলে বারমুডা পরা সাদা সাদা ফর্সা পায়ে হাওয়াই চটি দেখেই মুনিয়ার গলা শুকিয়ে গেল- বাবা! কুকুর একদম দেখতে পারে না। বলে ওই ভিজে নাক দিয়ে পা শুঁকলে নাকি ঘেন্না লাগে। আর নেড়ি হলে!

লিও কিন্তু ঘাবড়ে গেল না। সোজা গিয়ে বাবার হাঁটুতে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়ালো আর লেজ নাড়তে নাড়তে পিঠটা বাবার পায়ে ঘষতে থাকলো। ভাবটা এই, তুমি মুনিয়ার বাবা? তাহলে তো আমার পিঠ চুলকে দেওয়া তোমারই কাজ।

আশ্চর্য! বাবা ঘেন্নায় কুঁকড়ে যাবার বদলে কেমন একটা মুখ করে লিওর মাথার ওপরটায় আর গলার কাছে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো, দেখে গালে হাত দিয়ে মুনিয়া বলে উঠতে বাধ্য হল, যাঃ ব্বাবা।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত