সকাল সাড়ে ৭টা বাজে। মায়ের হাত ধরে ৭ বছরের মেয়ে মীম স্কুলে যাচ্ছে, কবরস্থানের পাশেই ছিল স্কুলটি। একটা পাগল বসে থাকে স্কুল গেটের পাশে কিন্তু মীমের মা মীমকে স্কুলে দিয়ে যাওয়ার আধ-ঘন্টা পর পাগলটি আসে এবং স্কুল ছুটি হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই সে চলে যায়।
প্রতিদিনের মতো ওই পাগলটার সাথে সবাই দুষ্টুমি করে কিন্তু মীম কখনো পাগলটার সাথে দুষ্টুমি করে না। বরং পাগলটা মীমের দিকে চেয়ে থাকতো তার কারণ কি ছিল কেউ জানত না। পাগলটা বড়ই অদ্ভুত ছিল। তার গলায় সবসময় ঝুলে থাকতো সোনালি রঙের, গোল আকৃতির একটা লকেট। সবাই যখন ক্লাসে পড়ত মীম কিছুক্ষণ পর পর ওই পাগলটার দিকে তাকাতো।
হঠাৎ একদিন মীম স্কুলের পাশের রাস্তায় একটা গাড়ির সঙ্গে এক্সিডেন্ট করতে যাচ্ছিল তখন ওই রাস্তার পাশেই ছিল পাগলটা। পাগলটা মীমকে রক্ষা করলেও নিজেকে শেষ রক্ষা করতে পারেনি। রাস্তার মানুষরা সবাই জড় হলো পাগলটাকে দেখার জন্য আর মীম বিষণ ভয় পেয়ে কাঁদতে শুরু করে। স্কুল কর্তৃপক্ষ মীমের মাকে জানায় স্কুলে আসার জন্য এবং পুরো ঘটনা খুলে বলে। এরপর মীমের মা মীমকে নিয়ে বাসায় চলে যায়।
২ দিন পর। মীমের মা স্কুলে দিয়ে আসে মীমকে। স্কুল ছুটি হয়ে যায় কিন্তু মীমের মা এখনো আসেনি মীমকে নিতে। তাই মীম তার মাকে খুঁজতে খুঁজতে স্কুলের পাশে থাকা কবরস্থানে চলে যায়। ভাবলো, হয়তো এই কবরস্থানেই পাগলটাকে দাফন করা হয়েছে।
মীমের মা মীমকে খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে দেখতে পেল মীম কবরস্থানের পিছনের গেটে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মীমের মা মীমকে খুব বকা-ঝকা করে, মীমের মা মীমের হাতে একটা লকেট দেখলো এবং বললো- ঐ লকেটটি কোথায় পেয়েছেও। মীম উত্তরে বলে- মা! ওই লকেট-টা…না এখানে পেয়েছি। পাগলটার গলায় সবসময় ওই লকেটা ঝুলে থাকতো।
মীমের মা মীমের হাত থেকে লকেটা নিয়ে খুলতেই দেখেতে পেল মীমের মায়ের সাথে ওই পাগলটার ছবি একই ফ্রেমে। তখন মীমের মা বুঝতে পারলো পাগলটা তার ১০ বছর আগের সেই পুরনো প্রেমিক। আমার ছলনা মুখর ভালোবাসার কারণে আজ সে পাগল হয়ে মারা গেলো
অতি অবহেলার সহিতে তুমি যে গুরস্থানের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছো,
তুমি হয়তো বা জানো না সেই গুরস্থানে শুয়ে আছে;
তোমারই কোন প্রিয় মানুষ।