ইচ্ছে করতেছে ঘুসি মেরে ছেলেটার নাকটা ফাটিয়ে দেই। প্রচুর মারি, কিন্তু সেটা মোটেও সম্ভব না। মনে হয় সে তার চোখ জোড়া পকেটে নিয়ে হাটে। কত কষ্ট করে হিজাবটা বেঁধেছি। আজকে তৃষ্ণার জন্মদিন। আমাকে তাড়াতাড়ি যেতে হবে ওদের বাসায়। তাড়াহুড়ো করে বাসে উঠেছি। বাসে এতো মানুষ যে দাড়ানোর জায়গাটুকু পর্যন্ত সংকীর্ণ । দাড়িয়ে আছি অনেকক্ষণ ধরেই। এক ভদ্রলোক নেমে যাওয়াতে আমি একটু বসার জায়গা পেয়ে গেলাম। আর ঠিক তখনি বিপদটা ঘটলো। পাশে দাড়ানো অপয়া ছেলেটার হাতে জড়ানো শিকলটার ( ব্যাসলেট) সাথে হিজাবটা কীভাবে যে আটকে গেলো। আমি তাড়াহুড়ো করে বসতে গিয়েই টান লাগলো। সেফটিপিনটাও ভেঙ্গে গেলো।
রাগে দুক্ষে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। আর এদিকে ছেলেটা একবারের জন্যও সরি বললো না। উল্টো দাঁত কেলিয়ে হাসতেছে। দাঁত তো নয় একেবারে মুলোর দোকান।
বাস ধীরে ধীরে চলতেছে। আমার পাশের জন নেমে যাওয়াতে ছেলেটা তাড়াতাড়ি করে আমার পাশের সিটে বসে নিজে নিজেই বকে যাচ্ছে আপন মনে।
-: কী দরকার মাথার উপর ফুলকপি বাঁধিয়ে বাসে ট্রামে ঘুরে বেড়ানো।
ইচ্ছে করতেছে ছেলেটাকে ছ্যাড়া স্যান্ডেল দিয়ে মারি।
-: নামটা জানতে পারি।
আবার বললো ইডিয়েটটা। আমি চুপ করে রইলাম।
-: কোন ভার্সিটিতে পড়েন? ফেসবুক আইডিটা কি পেতে পারি?
-: না
-: এতো অহংকার কিসের। রূপের অহংকার করে কি লাভ। সৌন্দর্য আজ আছে তো কাল নেই। পকেটের টাকাটাই তো আসল। এ টাকা থাকলে কত সুন্দরী পাশে থাকে।
ছেলেটাকে মোক্ষম কিছু জবাব দিবো ভাবছি। ঠিক তখনো বাসের হেল্পার আসলো টাকা তুলতে। ছেলেটা টাকা দিতে যাবে এমন সময় পকেটে হাত দিয়ে দেখলো তার মানিব্যাগ আর মোবাইলটা কে জানি গায়েব করে দিছে। হয়তো ভিড়ের সময়ই পকেটমার এমন মহান কার্যসাধন করেছে।
ছেলেটা হাহাকার করতে লাগলো আমার মানিব্যাগ, আমার মোবাইল এসব বলে।
আমি ছেলেটার কানের কাছে গিয়ে বললাম,
:- টাকা পয়সার অহংকার করে কি লাভ। টাকাপয়সা, মোবাইল এসব আজ আছে তো কাল নেই।
এ বলে বাস থেকে নেমে পড়লাম। সামনেই তৃষ্ণাদের বাসা দেখা যাচ্ছে।