-এ্যাই শুনছো, শোনো না গো, এ্যাই…
-আরে হোলো টা কি তোমার? সকাল থেকে এতো এ্যাই, উই, গো, এর ঘটা কেন?
-মরণ দশা !এ তো ভালো করে কথা বললেই তোমার যত বাক্যি, আর না বললেই তোমার গোঁসা, যেদিকেই যাই তোমার খুঁত ধরা লেগেই আছে।আমি বলেই তোমার মতো একটা লোকের সাথে ঘর করি, অন্য কেউ হলেই না…
-কি? কি হতো শুনি? ছেড়ে চলে যেত? বাঁচা যেত বুঝলে, শান্তির নিঃশ্বাস নিতে পারতাম।
-হুমম, তা তো বলবেই এখন, পুরোনো হয়ে গেছি না, জানি তো এখন আর আমায় ভালো লাগে না, দিনরাত ঐ ফোন আর ফেসবুকে পড়ে থাকো,আর ঐ ৩৫৪টা ধুমসি, নাহ মানে মেয়েদের সাথে ঢলাঢলি।
-এ্যাই… এ্যাই… মুখ সামলে, কি বলছো এসব আমি চরিত্রহীন! ওরা হলো আমার ফেসবুক বন্ধু, না না বান্ধবী। তো তুমি জানলে কি করে? আমার পার্সোনাল জিনিষ নিয়ে ঘাঁটাঘাটি আমি মোটেই পছন্দ করি না!
-হুমমম তা করবে কেন? ঐ যে বলেনা চোরের মায়ের বড় গলা,, তাই তো ধরা পড়ে এখন গলা বেরোচ্ছে। ছিঃ ছিঃ ছিঃ তুমি এমন জানলে সাত জন্ম কুমারী হয়ে রয়ে যেতাম তবু হারগিস তোমায় বিয়ে করতাম না।
-এই ভালো হবেনা বলে দিচ্ছি, সকাল থেকে যা নয় তা বলে যাচ্ছো, ফোনে তো এমন সবারি বন্ধু থাকে, তোমার কি নেই নাকি?
-ধরে ফেলেছি তো তাই তোমার এতো কথা, হ্যাঁ হ্যাঁ বন্ধু তো সবারই কমবেশী থাকে, তা বলে কি দিনরাত তাদের ছবি দেখে বলতে হবে, অসম লাগছে তোমাকে, খুব খুব খুব সুন্দর, বিউটি ফুল স্মাইল, হাসিটা মিসিং, সো… ও.. ও.. সুইট। কই কখনো তো আমায় সুন্দর লাগছে বলনা!
-শোনো শোনো, তোমার এই স্বভাব পাল্টাও, পাস ওয়ার্ড আমি মনে রাখতে পারি না, গন্ডগোল হয়ে যায়,আর সেই সুযোগ নিয়ে তুমি এসব বল! কই তুমি যে ফোন নিয়ে দিনরাত পড়ে থাকো আমি কি কিছু বলি?
-দিনরাত পড়ে থাকি না ছাই! সংসারের যাবতীয় কাজ কে করে শুনি? কটা দাসী, বাঁদী রেখেছো কাজের জন্য? নেহাত আমার বয়স টা কম, সুন্দরী তাই কেউ বুঝতে পারে না। আর আমি তো তোমার জন্যই বন্ধুদের থেকে টিপস্ নি, যাতে তোমায় আমার সাথে মানায়। সেদিন তো কাকলির বর বলেই দিলো কি সুন্দর আপনি, কি সুন্দর আপনার ফিগার, আর আপনার বর! একদম মানায় না, মনে হয় আপনার বাবা। শোনো পিয়াসী বলেছে রোজ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে গরম জলে লেবু দিয়ে দু গ্লাস খেয়ে মাঠে ঘন্টাখানেক দৌড়াতে। দুপুরে ভাত চলবে না। স্যালাড আর টক দই খেতে, খুব ক্ষিদে পেলে একটা রুটি।আজ থেকে ভাবছি তোমার খাওয়ার রুটিন টা বদলে….
-এ্যাই শোনো না, সোনা, এ্যাই সোনা তুমি তখন কেন ডাকছিলে গো!
-বলছি ও ঘরে খোকা ঘুমোচ্ছে, দেখে এসো তো কাঁথা ভিজিয়ে ফেলেছে কি না,ভিজিয়ে ফেললে কাঁথাটা পাল্টে ছাদে জামা -কাপড় গুলো মেলে গিয়ে এসো।
-ওহোহো তাই জন্য অতো মধুর সম্ভাষণ, ঠিক আছে করে দিচ্ছি সব, তবে ঐ যে গো বোস বাবুর বৌ, যে কিনা তোমাকে দেখলেই ওহহ কাকলি তো নাম তাই না, ও যদি তোমায় আবার বলে মিমি দি, আপনার হাজব্যান্ড বুঝি রোজ কাপড় কেঁচে ছাদে শুকোতে দেন? কি লাকি আপনি, আপনার কপাল দেখলে আমার না হিংসে হয়? তখন তুমি আবার আমায় দোষ দিওনা, এ আমি তোমায় আগেই বলে রাখলাম।
-থাক থাক তোমার ছাদে গিয়ে কাজ নেই, ঠিক বলেছ ওই কাকলি সব সময় ওত্ পেতে দাঁড়িয়ে থাকে, কে কখন যাবে আর ও কলকল করবে। বুঝিনা বাপু এতো সময় কি করে পায়? তুমি যাও খোকার পাশে গিয়ে চুপটি করে শুয়ে থাকো।জাগিয়ে দিওনা আবার, আমি ছাদে গেলাম।
-আচ্ছা ঠিক আছে সোনা!
দুগ্গা দুগ্গা, এই রকম দু একটা কাকলি না না কলকলানি যেন প্রতিবেশী হয়ে থাকে।