চৌধুরী বাড়ির একমাত্র মেয়ে রাজন্যার আজ বিয়ে বরপক্ষ এসে গেছে এমন সময় কনেকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না…
“রাজন্যা” নামটা তার বাবার দেওয়া সে সত্যি তার বাড়ির রাজকন্যা কিনা অভিরূপ বাবু কখনও মেয়ের বিরুদ্ধে যাননি বিয়েটা হচ্ছে রাজন্যার ইচ্ছেতেই রাজন্যা আর আকাশ প্রায় সাত বছরের বন্ধু, 1 বছর আগে তারা সিদ্ধান্ত নেয় বিয়ে করবে আকাশ অত্যন্ত ভালো ছেলে তাই বিপক্ষে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না…
প্রায় দু’মাস আগে থেকেই শুরু হয়েছিল বিয়ের তোড়জোড় রাজন না আর আকাশ একমাস ধরে ঘুরে ঘুরে বিয়ের কেনাকাটা করেছে রাজন্যার প্রিয় খাবারগুলোর স্টল হয়েছে প্রায় সাতখানা এছাড়া ভোজের সামগ্রী তো রয়েছে নানা রাজকীয় আয়োজন আজ চৌধুরী বাড়ি যেন রাজ প্রাসাদের মতো সেজে উঠেছে চারিদিকে আলোর ফোয়ারা আর তার মাঝে রূপের আলো নিয়ে বসে আছে রাজন্যা যেন এক দেবী…
যথা সময়ে আকাশ এল বিয়ে করতে ঘোড়ায় চেপে রাজপুত্রের মত বিয়ে বাড়িতে ঢুকে তার কেমন যেন খটকা লাগলো সে দেখল অভিরূপ বাবু অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে ছোটাছুটি করছেন যেন খুঁজছেন কিছু একটা আকাশ তাকে আড়ালে ডেকে জিজ্ঞাসা করলো কোন সমস্যা হয়েছে কিনা অভিরূপ বাবু মাথা নিচু করে বললেন “রাজন্যা কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না.” আকাশের মাথায় যেন বাজ পড়লো তবে কি তার সম্মান আর থাকবে না?রাজন্যা বরাবরই খামখেয়ালী আর জেদি তা বলে বিয়ের দিন এভাবে লোক হাসাবে? মেয়েটাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত কি একেবারেই ভুল? মানুষ চিনতে এতটা ভুল করল আকাশ?
অনেক খোঁজাখুঁজির পর এক ওয়েটার এর কাছে মিলল রাজন্যার খোঁজ সে যা বলল তা যেন অত্যন্ত বিস্ময়কর” আজ্ঞে স্যার আপনার হুকুম ছিল যেন বাইরের লোক ঢুকতে না পারে বিয়ে বাড়িতে একটা পাগল বারবার ঢোকার চেষ্টা করছিল আর পাহারাদার গুলো তাকে ধাক্কা মেরে বের করে দিচ্ছিল হঠাৎ একবার সুযোগ বুঝে সে দৌড়ে ঢুকে যায় আর আমার হাতের খাবার ট্রেটা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে আমরা সবাই তাকে মারতে গিয়েছিলাম এমন সময় ম্যাডাম ওই পাগল টা কে আগলে দাঁড়ান কি বলবো স্যার তখন ম্যাডামের চোখে স্বয়ং দুর্গা কি দেখলাম আমি বললেন” যে বিয়ে বাড়িতে অসহায় মানুষ খাবার খাওয়ার বদলে মার খায় সে বিয়েতে কেউ সুখী হতে পারে না” এরপর তিনি আমার কাছে খাবার ট্রেটা নিয়ে ওই পাগল টা কে নিয়ে বাইরে চলে যান…
বাইরে খোঁজাখুঁজির পর আকাশ আবিষ্কার করল রাজন্যাকে এক নতুন রূপেপাগল টা গোগ্রাসে খাবার খাচ্ছে আর তাকে পরম স্নেহে খাইয়ে দিচ্ছে স্বয়ং রাজন্যা এখন কোন দুর্গার রূপ নেই তার মধ্যে রয়েছে একটা স্নিগ্ধ মাতৃরূপ নিজের উপর ধিক্কার এলো আকাশের তার ভুল ভাবনা গুলোর জন্য ভুল মানুষকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয় নি সে