“অথবা আমি ঈর্ষান্বিত হই ওরা সব্বাই সুখী বলে”

“অথবা আমি ঈর্ষান্বিত হই ওরা সব্বাই সুখী বলে”

রাত বারটা বাজে। ফেইসবুকে কয়েক ঘন্টা নষ্ট করে ব্লগে আসলাম। মনে হচ্ছিলো যে আমার আর লেখার মতো কিছু নেই।

তখন একজনের লেখার মাঝে এই বাক্যটা চোখে পড়লো- “অথবা আমি ঈর্ষান্বিত হই ওরা সব্বাই সুখী বলে।”

মনে হলো এটা আমাদের সবার প্রব্লেম। এ নিয়ে কিছু কথা অন্তত লেখা যায়।

অবশ্য যা যা লেখার তা লেখা আছে অনেক আগে থেকেই। নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস থেকে শুরু করে….,

The grass is greener on the other side of the fence বা এলআরবির আসলে কেউ সুখী নয়-

সব ভাষাতেই এই কথা লেখা হয়ে আছে অনেক কাল ধরে। তবুও মানুষের এই এক সমস্যাঃ সবাই এতো সুখী আর আমার খালি কষ্ট!

আসলে আমরা এ্যাতো জটিল প্রাণী যে আমাদের বেশীদিন সুখে থাকতেও বিরক্ত লাগে।

মাঝে মাঝে আমার মনে হয়, সবারই ম্যালা কষ্ট আছে। আমার এক বার মনে হইছিলো, পৃথিবীতে সবাই একই পরিমান সুখ এবং দুঃখ পায়।

এটা হয়তো একটা হাস্যকর থিওরী, কিন্তু এটা সত্যি হতেও পারে।

আমি ঢাকা শহরের অলি গলি দিয়ে মাঝরাতে রিকশায় চড়েছি অনেক বার।

একদিন রাতে মগবাজার থেকে ফেরার সময় নচিকেতার গানটা শুনছিলাম, “জানি না, জানি না, জানি না, কী কারণ।”

হরিদা সম্ভবত প্রথমবার আমেরিকা থেকে ঢাকা এসেছিলো। আমি সেসব দিনে খুব এলোমেলো ঘুরে বেড়াতাম।

মাত্র দুই বছর আগের কথা। অথচ আমার কিছুই মনে পড়ছে না। কাকে ভালোবাসতাম তখন? কাদের সাথে ঘুরে বেড়াতাম?

কী নিয়ে আক্ষেপ করতাম? কিছুই মনে নেই।

শুধু উৎপলদা’র বাসায় হরিদাকে রেখে আসার পথের সেই রাতের ঢাকার অলিগলির আর ঐ গানের কথা মনে পড়ছে।

আমি জানি না আমার জীবন ভালো কেটেছে নাকি খারাপ কেটেছে। আমার মন আজও দূর আকাশ ছুঁতে চায়।

হয়তো মানুষের মনের ভেতরে কোথাও খুব অযৌক্তিক একটা ইউনিট আছে।

সেই ইউনিটের কাজই হলো বসে বসে যত সব অদরকারী ভাবনার লালন পালন করা।
কিন্তু আমার মাথার পুরোটাই সেই ফালতু ইউনিট। সেই কারণেই আমি কোনো কাজের কাজ করে ফেলতে পারি নাই।

যেখানে যা কিছুতে হাত দিয়েছি, সেসবই শুকিয়ে মরে গেছে। লেখাপড়া, চাকরী, প্রেম- কিছুই টেকে নাই।

কোনো ক্ষেত্রেই সুফল আনতে পারি নাই। আমার আজকাল ভয় লাগে। একটা কিছু তো করতে পারতে হবে।

আমি জানি না কবে আমি পারবো। না পারলেও আমার অসুবিধা নেই। আমি পথের ধারে খুব ব্যর্থ একটা জীবন পার করে দিতে পারি।

কিন্তু আশেপাশে যদি সবাই আমার মত হতো তাহলে সমস্যা ছিলো না। সবাই অনেক সফল, অনেক সুখী।

আরও বড় সমস্যা দুটো মানুষ, যারা আমাকে জন্ম দিয়ে এই অসুখের ভেতরে ঠেলে দিলো।

এখন ওঁদের জন্য আমার একটা কিছু করতে পারতে হবে। আমি জানি না আমি কবে পারবো।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত