ম্যাসেন্জারে রাতে সবাইকে বলে দিছে অচিনপুর সংগঠনের রনি ভাই যে কাল সবাই ৯টায় হাসপাতালে উপস্থিত হবো ওখানে রোগীদের সেবা করব। সবার সাথে আমিও ঠিকআছে বললাম। একটু পর রনি ভাই আমাকে মেনশন করে বললো আসিফ তুমি কাল একজনকে নিয়ে হাসপাতালে আসবে বললাম ঠিকআছে আর এদিকে তো কাউকে বলিনি যে কাল যেতে হবে একটা বন্ধুকে ফোন করে বললাম কাল একটু আমার সাথে যাবি হাসপাতাল সে বললো যাবো না তখন একটু ঘাবরে গেছিলাম কারন রনি ভাইকে তো কথা দিছি।
একটু ভাবলাম কাকে নিয়ে যাব তখন মাথায় আসলো আমি কিছুদিন আগে একজনকে “অচিনপুর” গ্রুপের মডারেটর বানিয়েছিলাম তাকে বলি সে যদি যায়। গ্রুপে মেম্বার অফসনে গিয়ে দেখলাম তার নাম অজান্তা। তার প্রফাইলে গিয়ে দেখলাম সে আমার ফ্রেন্ডলিষ্টে ছিলো না তখন তাকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠিয়ে তার পোষ্ট করা ফটোতে মন্তব্য করলাম। “আপু আমি অচিনপুর গ্রুপ থেকে বলতেছি আপনি তো আমাদের গ্রুপের মডারেটর আপনাকে ম্যাসেন্জারে এডমিন প্যানেল গ্রুপে এড করা হবে আপনি আমার বন্ধুত্বের অনুরোধ নিশ্চিত করুন” এটা বলেই ঘুমিয়ে পরলাম পরের দিন সকালে উঠেই দেখতেছে অজান্তা মন্তব্যের উত্তর দিয়েছি। আর বলেছে এড করে দেন।তাকে এড করে দিলাম।
একটুপর দেখলাম সে একটিভ হয়েছে তখন তাকে বললাম আপু আজ আমাদের সংগঠন থেকে হাসপাতালে প্রগ্রাম আছে আপনি আসলে ভালো হতো ৯টা থেকে ২টা পর্যুন্ত প্রগ্রাম চলবে। তখন অজান্তা বললো ঠিকআছে ভাইয়া যাব, কিন্তু ১০:৩০মিনিটে যাব তখন আমি বললাম ঠিকআছে আসিও। এটা বলেই ডাটা অফ করে গোসল করে রেডি হলাম।
তারপর খাওয়া করে হাসপাতাল যেতে যেতে ১১টা বেজে গেছিলো। হাসপাতালে গিয়ে একটা ভাইয়াকে ফোন দিলাম সে বললো কই তুমি আমি বললাম আমি তো হাসপাতালে তোমরা কোথায়? তখন ভাইয়া বললো দেখো সবাই এপ্রন পরে আছে। ঠিকআছে বলে কেটে দিলাম।
আমি ভিতরে যেতে একটা মেয়ে বলতেছে আসিফ ভাইয়া আপনি এখন আসলেন আমাকে আসতে বললেন ৯টায় আর আপনি আসলেন ১১টায় তখন আমি কিছুনা বলে দারিয়ে থাকলাম তারপর মেয়েটা তার ব্যাগ থেকে এপ্রন বললো ভাইয়া এপ্রন পরেন। তার হাত থেকে এপ্রনটা নিয়ে পরলাম তারপর মেয়েটাকে বললাম আপু আমার বাসা অনেক দুরে তো তাই আসতে দেরি হলো। তখন সে বললো আমার বাড়ি বুঝি কাছে বাদ দেন আমাদের হেল্প করেন তখন বললাম ঠিকআছে আপু।
তখন একজন রোগীকে সাহায্য করতে গেলাম আর ভাবতে লাগলাম সেই মেয়েটার কথা তাকে দেখেই মনের মাজখানে যেন একটা অন্যরকম অনুভূতি জেগেছিলো যেটা বলে বোঝানো সম্ভব না। মেয়েটার টানা টানা চোখ আর একটা চশমা পরে যা সুন্দর লাগতেছিলো। আর যখন আমার সাথে কথা বলতেছিলো তখন আমি তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আর সে কথা বলতেছিলো।
রোগীটাকে সাহায্য করে এসে আপুটাকে জিগ্যেস করলাম আপু আপনার নাম কি তখন সে বললো অজান্তা, এটা শুনেই আমি অবাক হয়ে বললাম আপনাকে আমি সকাল বেলা মেচেছ দিয়েছিলাম তাই না। সে বললো হ্যা ভাইয়া আপনি দিয়েছিলেন। আরো দুজনে অনেক কথা বললাম তার সাথে কথা বলার সমায় আমি লক্ষ করলাম অজান্তা হেসে হেসে কথা বলতেছে তখন তাকে বললাম তুমি হেসে হেসে কথা বলতেছো কেন? সে বললো আমি হেসে কথা বলি আর হাসিখুশি থাকাটা অনেক ভালো আমি বললাম ঠিক আছে।
তখন ও আর আমি হাসপাতালের ঔষুদ দেওয়ার লাইন ঠিক করলাম অনেক মানুষ ভির করে ঔষুদ নিতেছিলো সবাই লাইনে দারিয়ে ওখানে দারিয়ে থাকলাম আমি একটু পর পর তার দিকে তাকিয়ে দেখলাম তার মুখটা হাসিখুশি। যেন পৃথিবীতে তার মত সুখি আর কেউ ছিলো না। তার মনে যেন কোন দুঃখ ছিলো না।
একটু পর অচিনপুর সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা লিটন ভাই আমাকে ডাকলো আর বললো অজান্তাকে ডাকো চারতলায় রোগী আনতে যাব। আমি তখন অজান্তাকে ডাকলাম বললাম চলো রোগী আনতে যাব। শিরি দিয়ে উঠতে উঠতে তার সবকিছু জানলাম বাড়ি কোথায় কি করে কোন ক্লাসে পরে ইত্যাদি ইত্যাদি সেও আমার বিষয়ে সব জানলো, পরে এটা ভেবে মনে খুশি হলাম যে ওর আমি একাদশ শ্রেনীতে পরি আর ও সাইন্সে আর আমি আর্সে।
চারতলায় উঠে মহিলা রোগীটাকে বেডে উঠানোর সমায় অজান্তা আমাকে বললো তুমি লম্বা মানুষ স্যালাইনটা উপরে করে ধরে রাখো তাহলে রোগীর ব্লাড আসবে না। তখন আমি বললাম নিতেছি তার হাত থেকে নিয়ে ওপরে উঠে দারিয়ে থাকলাম আসলে সে আমার থেকে একটু ছোট তাই আমাকে স্যালাইনটা আমাকে দিলো।
তারপরে চারতলা থেকে নিচ তলা এলাম । আর দেখলাম অজান্তা ক্লান্ত হয়ে গেছে, ক্লান্ত হওয়ারি কথা চারতলা রোগী নিয়ে ওঠা নামমা করলে কে ক্লান্ত হবে না বলুন। আমি ও ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম। তারপর অজান্তাকে বললাম বাড়ি থেকে খেয়ে আসনি সে বললো না অনেক ক্লান্ত হয়ে গেছি তারাতারি বাড়ি যাব আমি বললাম না সবাই একসাথে বাড়ি যাব।
সারাদিনটায় অজান্তার সাথে সারাদিন হাসাহাসি করেছিলাম তার হাসিমুখ দেখে আমিও অনেক হেসেছি। সারাদিন সবাই মিলে অনেক রোগীর সেবা করেছি তারপর বাড়ি আসার সমায় আর তার সাথে কথা হয়নি।
বাড়ি এসে একটু অজান্তা কথা ভাবতেও হেসে ফেললাম। কারন তার মুখের হাসিটা ছিলো অনেক সুন্দর। আর তার মুখটাও ছিলো মায়াবী।