সেই দিনটা

সেই দিনটা

সকাল সকাল ঘুম ভেঙে গেলো প্রচন্ড ঠান্ডায়। বিছানায় বালিশের নিচে রাখা হাতঘড়িটা বের করে সময় দেখলাম – সকাল সাড়ে ছটা। কাঁপতে কাঁপতে কোনোরকমে উঠলাম বরফের থেকেও ঠান্ডা হয়ে যাওয়া বিছানা ছেড়ে। জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরে তাকালাম, ধু ধু সাদা প্রান্তর। আসে পাশের সব বাড়িগুলোর ওপরে, পড়েছে বরফের পুরু আস্তরণ। দেখে মনে হচ্ছে, রাতে ওদেরও খুব ঠান্ডা লেগেছিলো , আর ওরা প্রকৃতি থেকে টেনে নিয়েছে সাদা ধবধবে লেপ, জড়িয়ে নিয়েছে নিজের ওপরে। পর্দাটা আবার সরিয়ে, ঘরের ভেতরে অন্ধকার করে , গিয়ে দাঁড়াই থার্মোমিটারের কাছে। এখন তাপমাত্রা ‘- চার’।

এতো ঠান্ডা লাগার তো কথা নয় ! কিছুদিন আগেও তো তাপমাত্রা ছিলো ‘- দশ’ ! বাইরে হঠাৎ দুড়দাড় করে পায়ের আওয়াজ পেয়ে , আমিও সোয়েটারের ওপরে আরো দুটো জ্যাকেট, হাতে গ্লাভস, মাথায় উলের তৈরী মোটা টুপি পরে, পায়ের আওয়াজ অনুসরণ করে নেমে এলাম নিচে। নিচে বেশ কয়েকজন দাঁড়িয়ে দুর্বোধ্য রাশিয়ান ভাষায়, চেঁচামিচি করছে। আমি বোঝার চেষ্টা করলাম, কি হয়েছে।

প্রায় দু মাস হলো, আমি এসেছি রাশিয়াতে – কাজের সূত্রে। প্রথম এক সপ্তাহ ছিলাম অফিসের গেস্ট হাউসে , এখন আমি একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকি , অফিস থেকে চারটে ব্লক দূরেই। এখন একটু একটু রাশিয়ান ভাষা বুঝতে পারি, কাজ চালানোর মতো , যদিও বলতে পারি না। অফিসে তো ব্রিটিশদের শেখানো ভাষাতেই কাজ হয়ে যায় , আর থাকি একা একা। খাওয়া দাওয়ার নেই ঝুট ঝামেলা। বিয়ে থা হয়নি এখনও। আসলে আমি এই প্রোজেক্ট টা নিয়ে আসার আগে, বাড়ি থেকে বিয়ে বিয়ে করে আমার মাথা খেয়ে নিচ্ছিলো সবাই। আমি সবাইকে অনেক করে বুঝিয়েছি , সবে আমার তিরিশ বছর বয়স , এখন ই তো নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে হবে কাজে। তবে না একদিন উন্নতি করবো। আর এক বছরের কথা তো মাত্র। প্রোজেক্ট শেষে , ফিরে এসে, ধীরে সুস্থে বিয়ে করা যাবে। কেউ আমার মুখের ওপরে কোনো কথা বলতে পারে নি , শুধু মা একটু আমতা আমতা করছিলো , ” এতো দূরে চলে যাবি ? আমাদের কথা একটুও ভাববি না ? কি হবে , কেমন ভাবে থাকবি, বিদেশ বিভুঁই বলে কথা, মানুষজন কেমন হবে”

আমি একটু ঝাঁঝিয়ে উঠেছিলাম সেদিন মায়ের ওপরে , “সেই জন্যই লোকজন বলে বাঙালি করেছে ভগবান রে। ” চলে এসেছিলাম রাশিয়াতে , সব ছেড়ে , সব পিছুটান – মায়া পেছনে রেখে।

লোকজনের চেঁচামেচিতে, যেটুকু বুঝলাম, গরম জলের পাইপ ফেটে গেছে। আর তাই এতো ঠান্ডা ঘরের ভেতরে। ঠিক হতে সময় লাগবে প্রায় চারঘন্টা। অগত্যা , কি আর করা। আমি ধীরে ধীরে ওপরে উঠে এলাম।

আমি থাকি, এই বিল্ডিঙের তিনতলায় , প্রতিটা ফ্লোরে , তিনটে করে ফ্ল্যাট। আর টোটাল ছটা ফ্লোর রয়েছে এই বিল্ডিংয়ে। আমি দ্বিতীয় ফ্লোর পেরিয়ে, ওপরে উঠতে গিয়ে, হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে গেলাম। মনে হলো কি যেন একটা হয়ে গেলো , সারা পৃথিবী যেন থমকে গেলো চোখের সামনে, কোথায় যেন বেজে উঠলো অনেকগুলো গিটার একসাথে, উড়তে শুরু করলো বেশ কয়েকটা রঙিন প্রজাপতি , বাইরে মনে হলো, উঠেছে দিগন্তে রামধনু। সামনে, ঠিক আমার সামনে দাঁড়িয়ে একটি মেয়ে , উচ্চতায় প্রায় আমার সমান (আমার হাইট ছ ফিট এক ইঞ্চি ), মাথায় সোনালী বাদামী মেশানো কাঁধ থেকে ছাড়িয়ে যাওয়া স্ট্রেট লম্বা চুল, সরু ঠোঁট, সুন্দর দুটি বাদামী চোখ, দুধে আলতা মেশানো গায়ের রং , গায়ের সাথে জড়িয়ে রয়েছে একটা পুলওভার, গলায় জড়িয়ে আছে উলের স্কার্ফ, কানে ঝুলছে দুধ সাদা মুক্তোর দুল, গলাতেও একটা মুক্তোর মালা।

আমাকে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে , কি মনে হলো কে জানে, হেসে উঠলো সেই মেয়ে। ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করলো ,”তুমি ই তো সেই ইন্ডিয়ান , নতুন এসেছো এখানে ! কি হয়েছে জানো ? ” আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না, আমার মাথা পুরো ব্ল্যাঙ্ক তখন। কি বলবো আমি ? আমার কানে শুধু কিছু শব্দ রিনঝিন করে বেজে ওঠে তখন। আবার মনে হয় আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করলো মেয়েটি। আমি তখন ও হাঁ করে দেখছি ওকে। আমাকে ধরে নাড়া দিলো মেয়েটি , আমি ফিরে এলাম বাস্তবে। কল্পনার সব রং বুদ্বুদের মতো ফেটে গেলো চোখের সামনে থেকে। আমি কোনোরকমে আমতা আমতা করে , গুড মর্নিং বলে চলে এলাম, না পালিয়ে এলাম বলাই ভালো।

সেদিন সারাদিন আমি একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। অফিসেও কাজে বারবার ভুল হতে থাকলো , কোনো কিছুই করতে ইচ্ছে করছিলো না। আমার সাথে কাজ করতো আর একটি চাইনিজ মেয়ে। সে আমাকে জিজ্ঞেস করে ওঠে,”সব ঠিক আছে তো ? ”

ঘাড় কাত করে আমি বললাম , “হ্যাঁ ! ”

বেশ কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো মেয়েটি , একটু পরে আমার কানের কাছে এসে বলে ওঠে ,”আর ইউ ইন লাভ ? ”

হেসে ফেললাম, মাথা চুলকে, ঘেমে, কোনোরকমে ওর কাছ থেকে চলে এলাম আমি। রাতে প্যাকড খাওয়ার কিনে নিয়ে এসে , খেয়ে আমি বসলাম একটা বই নিয়ে। দেশ থেকে আসার সময়ে, সাথে করে অনেকগুলো বাংলা বই নিয়ে এসেছিলাম , ছিলো সাথে মৈত্রয়ী দেবী, সুনীল , শক্তি , বুদ্ধদেব, বিভূতি, নবনীতা , অদ্রীশ বর্ধন আরো অনেকে। একটা বই নিয়ে পড়তে শুরু করলাম। এখন ঘরের তাপমাত্রা আবার ঠিক হয়ে গেছে। সকালেই রিপেয়ার হয়ে গিয়েছিলো পাইপটা।

সময় দেখলাম, রাত নটা! এইরকম সময়ে দেশে থাকলে, আড্ডা দিতাম বন্ধুদের সাথে, নাহলে হয়তো বসতো আমাদের আসর। এখানে, এই দূর পরবাসে, কেউ নেই সাথে, শুধু নিজের সাথে কথা বলা, রাতের আকাশের তারা গোণা ! হঠাৎ আমি একটা চেনা, ভীষণ ভাবে চেনা গানের সুরে , সোজা হয়ে বসলাম। ভালো করে শোনার চেষ্টা করলাম।

ঠিক ভেবেছি আমি, একদম ভুল হতেই পারে না। আমাদের বিল্ডিং এই কোথাও থেকে ভেসে আসছে…

সে ডি…..সে আই….সে এস….সে সি….সে ও…..ডিসকো…ডিসকো…ডিসকো…আই এম আ ডিসকো ডান্সার।

অবাক হয়ে গানের সাথে সাথে আমি ভেসে উঠে এলাম ওপরে, চতুর্থ ফ্লোরে , দাঁড়ালাম একটা দরজার সামনে। ভেজানো ছিলো দরজাটা, আমি ঢুকে পড়লাম কোনো কিছু না ভেবে। ভেতরে এসে দেখলাম সেই মেয়েটিকে, আর একটি ছোট ছেলের সাথে হাত ধরে নাচ করতে মশগুল ! সামনে বসে এক ভদ্রলোক আর ভদ্রমহিলা, হয়তো ওর মা বাবা। আমি হতভম্ব হয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম সেদিন ওদেরকে।

একটু পরে আমাকে অভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ওরাও চুপ করে গেলো, মিউজিক সিস্টেম বন্ধ করে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো। আমি মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলাম ,”তোমরা, ইন্ডিয়ান গান শোনো ? হিন্দি গান ? ”

মেয়েটির বাবা উত্তর দিলো ,”মিঠুন চক্রবর্তী , তাই না ? আমাদের ফেভরিট। কি সব গান, আর তার সাথে কি সব ডান্স স্টেপ।” আমাকে জিজ্ঞেস করলো আবার মেয়েটির বাবা, ” তুমি কে ? তুমি কি করে জানলে ?”

“আমি, আমি তো সেই দেশ থেকেই এসেছি এখানে। আর এই মিঠুন চক্রবর্তী, সে তো আমাদের কলকাতার ছেলে ! এই গানটা বাপী লাহিড়ীর মিউজিক দেওয়া। ”

হঠাৎ ওরা চারজনেই উঠে এলো আমার সামনে , আমাকে ধরে, নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিলো ওদের ডাইনিং টেবিলে। আমার কাছে শুনতে চাইলো আমার দেশের সম্বন্ধে আরো কথা , আরো জানতে চাইলো মিঠুন চক্রবর্তীকে।

সেই শুরু, মিঠুনদা, আমাদের গুরুদেব, যে সম্পর্ক তৈরী করে দিলো ওদের সাথে আমার, সেই সম্পর্কের জেরে, কি করে যে আমি আর রোকসানা জড়িয়ে পড়লাম, বুঝতেও পারিনি। সে এক সময় ছিলো, সুন্দর, মিষ্টি, ভালোলাগার সময়, ভালোবাসায় ভর্তি দিন আর রাত। রোকসানা তখন কলেজ থেকে পাস করে, একটা স্থানীয় রিটেল স্টোরে কাজ করছে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে। আমি আর রোকসানা একসাথে সকালে বেরিয়ে পড়তাম, ওকে ওর স্টোরে ছেড়ে, আমি হেঁটে চলে যেতাম অফিসে, ফিরে আসার সময়ে ও আমার জন্য অপেক্ষা করতো। একসাথে হাতে হাত রেখে, হাঁটতে হাঁটতে আমরা ফিরে আসতাম আমাদের বাসায়। ও চলে যেত ওপরে, আমি ঢুকে পড়তাম আমার ফ্ল্যাটে।
যখন বরফ পড়তে শুরু হতো, রাস্তা ঢেকে যেত সাদা সাদা ঝুরঝুরে বরফে, আমরা খেলতাম ওর ওপরে। আমি বরফের বল বানিয়ে ছুঁড়তাম ওর দিকে, আর রোকসানা বানাতো বরফের ফুটবল, ছুঁড়ে দিতো আমার ওপরে।

বেশ কেটে যাচ্ছিলো সময় – কেটে গেলো ছয় মাস ! বাড়িতে ফোন করলাম একদিন। মা বলে ওঠে ,”তোর জন্য ভীষণ সুন্দরী একটা মেয়ে দেখেছি রে , তুই এলেই এবার তোর বিয়ে দিয়ে দেবো ! ” আমি বললাম ,”কি ? আমি বিয়ে করবো না। ”

“কেন ? তুই তো বললি, ফিরে এসে বিয়ে করবি। ”

বেশ কিছুক্ষন ভেবে, আমি বলে উঠি, “আমি রোকসানাকে ভালোবাসি মা। আমরা বিয়ে করতে চাই। ” হঠাৎ কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ পেলাম জোরে। মা চেঁচিয়ে বললো,”আমি জানতাম, আমি জানতাম তুই এইরকম কিছু করবি। হ্যাঁ রে, তোর লজ্জা করলো না ? কোন একটা বিদেশী মেয়েকে নিয়ে আসবি আমার ঘরে ? খবরদার, বলে দিলাম, তোকে আমাদের পছন্দেই বিয়ে করতে হবে। এসব আজে বাজে মেয়েকে ভুলে যা। তুই ওই চাকরি ছেড়ে দে। অনেক হয়েছে। এখানে ঘরে বসে থাকবি, তাও ভালো। ”

আমি চুপ করে গেলাম, কিছু না বলে ফোন কেটে দিলাম। বুঝলাম একটা ঝামেলা হবে। কিন্তু আমি যে রোকসানাকে কথা দিয়েছি, আর রোকসানা আর আমি দুজনে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছি একসাথে। দেখছি, আমাদের ছোট ছোট বাচ্চাগুলো, বরফের ওপরে ছুটে বেড়াবে, খেলবে , আছড়ে পড়বে , স্নোম্যান বানাবে।

সেদিন ঘরে ফেরার পরে, রাতে রোকসানা আসে আমার কাছে। আমাকে অবাক করে দিয়ে , হঠাৎ করে জিজ্ঞেস করে ভাঙা ভাঙা বাংলাতে , “কি হয়েচে টোমার ? ” ভীষণ অবাক হয়ে আমি জিজ্ঞেস করলাম,”তুমি, তুমি বাংলাতে কথা বলছো ? ” আমার চোখে চোখ রেখে বলে ওঠে রোকসানা ,”হ্যাঁ, আমি সিকচি ! বাবলাম টোমাকে ও…..বাক করে ডিবি ! ”

আমি জিজ্ঞেস করলাম রোকসানাকে, “তুমি কেন শিখছো আমার মাতৃভাষা ? ” ও আমাকে বলে ওঠে ,”আমি আমার সবথেকে প্রিয় মানুষের আরো কাছে আসতে চাই , তার পরিবারের সাথে মিলে মিশে থাকতে চাই , তাই ! ”

আনন্দে জড়িয়ে ধরলাম আমি ওকে।

দেখতে দেখতে আমার প্রোজেক্ট শেষ হয়ে গেলো। আমার ফিরে যাওয়ার দিন এগিয়ে আসছে। মন খুব খারাপ, কি হবে ? রোকসানা ও আমার সাথে এখন কথা বলছে না , রাগ হয়েছে ওর আমার ওপরে আমি চলে যাচ্ছি বলে।

এয়ারপোর্টে আমি একাই এলাম। শেষবারের মতো এয়ারপোর্ট থেকে পেছনে তাকিয়ে এই শহরটাকে দেখতে দেখতে চোখে জল চলে এলো। হঠাৎ, অনুভব করলাম আমার হাতের মধ্যে একটা হাত ঢুকে আসছে। পাশে তাকালাম, রোকসানা দাঁড়িয়ে। আমি কিছু বলতে পারলাম না, জড়িয়ে ধরলাম ওকে। আমাকে বললো, “কি ভেবেছো? একা একা চলে যাবে আমাকে ছেড়ে ? আমি তোমাকে ছাড়বো না। ”

আমিও কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলাম, “কি করবো ? আমি যে , আমাকে যে যেতেই হবে। তোমাকে তো আমি আগেই বলেছিলাম আমার সাথে যেতে। তুমিই তো যেতে চাইলে না। ”

ও বলে ওঠে ,”এই তো ! আমি এসেছি। ওই দেখো , পেছনে মা, বাবা, ভাই সবাই দাঁড়িয়ে। আমি , সব ছেড়ে তোমার সাথে যেতেই এসেছি। ”

একটা অজানা আশঙ্কায় ভরে ওঠে মন,” কিন্তু মা? আমার মা তো” ও আমার ঠোঁটের ওপরে আঙ্গুল রেখে বলে ওঠে,”সেটা আমার ওপরে ছেড়ে দাও। ”

কলকাতা এয়ারপোর্টে যখন নামলাম, আমি রোকসানার হাতে হাত রেখে বেরিয়ে এলাম। এই কয়েকঘন্টায় আমি মনস্থির করে নিয়েছিলাম, যাই হোক না কেন, আমি রোকসানাকে ছাড়বো না। হয় মা বাবাকে ওকে মেনে নিতে হবে, নাহলে, আমি চলে যাবো ওকে নিয়ে কোথাও, দূরে। যতই হোক, ও আমার ওপরে বিশ্বাস করে, ভালোবেসে নিজের দেশ ছেড়ে চলে এসেছে অজানা এক দেশে।

আমাকে দেখেই মা বাবা দূর থেকে হাত নাড়লো আমার দিকে। বাইরে বেরিয়ে, আমি কিছু বলার আগে দেখলাম মা এক দৃষ্টিতে দেখছে রোকসানাকে। সেই দৃষ্টিতে ছিলো রাগের আগুন। রোকসানা গলায় জড়িয়ে রাখা ওড়নাটা মাথায় তুলে, হঠাৎ করে, প্রথমে মা কে ,তারপরে বাবা কে প্রণাম করে। পরিষ্কার বাংলায় জিজ্ঞেস করে ওদের , “কেমন আছো তোমরা দুজনে ? এই দেখো, আমি তোমাদের ছেলেকে তোমাদের কাছে ফিরিয়ে এনেছি। আর আমি, খুব খুব ভালোবাসি তোমাদের ছেলেকে। ” চোখে জল চলে আসে কথা বলতে বলতে রোকসানার। মায়ের হাতে হাত রেখে বলে, “আমি নিজের মা বাবাকে ছেড়ে এসেছি, আমার আরেক মা বাবার কাছে। আমাকে তোমাদের মেয়ে হিসেবে টেনে নেবে না গলায় ?”

মা টেনে নিলো রোকসানাকে গলায় !

সেই দিনটা ছিলো একুশে ফেব্রূয়ারি !

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত