কলেজে যাচ্ছি হেডফোনটা কানে দিয়ে,
আর সানি আন্টির (ও বেবি ডোলাম দোলে দি) গানটা শুনছি।
আমার কোন ‘গফ’ নাই তো তাই হর হামেসাই এই সব গান শুনি।
কলেজে আইসা দেখি…… আমি তো অবাক,
আরে নানা কোন মেয়ে দেখি নাই।
অনেক পোলাপান মাঠে ব্যাট আর স্টাম নিয়া
দাঁড়াই আছে।
হায় হায় মাইর দিব নাকি আবার, না তো কাউরের কিছু করি নাই।
হঠাৎ আবির আইসা কইল মাম্মা আজকে সিটি কলেজ এর সাথে আমাগো খেলা আছে।
ও আগে কইবিতো খালি খালি ভয় পাইছিলাম।
তো সালা কোন দিন তো আমাগো কলেজ জিতছে বইলে মনে হয় না, প্রতিবার তো ওরাই ট্রফি নিয়া যায়।
-দূর বাদ দে আজকে তোরে ও খেলতে হইব। (আবির)
– কীইইইই কইলি আমি খেলমু মানে, আমি খেলমু না।
– মাম্মা তোমার নাম দেওয়া হয়ে গেছে। (তামিম)
– ওই আমারে কোনদিন খেলতে দেখছস ক্রিকেট।
– ওত কিছু বুঝিনা নাম দেওয়া শেষ, (আবির)
কীইইইই এক ঝামেলাই পরলাম রে বাবা দূর ভাল্লাগে না। আমি আছি মানে কী সিওর হারমু।
ওহ হ্যা শটখাটে আমার পরিচয়টা দিয়া ফেলি,
আমি সাহরিয়া শুধু সাহরিয়া না গেমার সাহরিয়া।
এমন কোন গেম নাই যে তার সব মিশন কমপ্লিট
করি নাই। বাট আমার ফেভারিট খেলা রুবিক্স কিউব, আমার বড়জোর ১ মিনিট লাগে।
কিন্তুু আমি তো খালি পিসি আর ফোনে সব গেম
খেলি রুবিক্স কিউব বাদে।
ক্রিকেট তো সেই ২ বছর আগে খেলছিলাম
আল্লাহ জানে কীইইইই হইব।
এইদিকে খেলা শুরু হয়ে গেল সিটি কলেজ টস
এ জিতে আগে ব্যাট করছে।
১ বলেই চক্কা মাইরা দিছে, মনে মনে ভাবছি আজকে জিতা হয়ে গেছে।
আবার চক্কা হাকাইছে বাট বল আমার হাতে,
সবাই সহ আমি ও আবাক কেমনে ধরলাম।
তা ও আবার ওদের টপ খেলোয়ার আউট, হি হি
পর পর দুইটা আউট আমার হাতে। একটু ভাব ও নিতাছি।
চার নম্বর বল ধরতে উপরে তাকাইয়া আমি তো আবাক, কী ঝাক্কাস মেয়ে জীবনে ও দেখিনাই।
ওই বলটা ও ধরে ফেলছি মেয়েটা ও হাঁসি খুশি,
তার মানে আমাকে কলেজের যাক পরে দেখা হবে তা হলে।
প্রথম আর্ধেক শেষ,, সালারা ২৭৫ রান কইরা ফেলছে।
আমাগো জিতা হয়ে গেছে।
সাবাই ভালই খেলছে,, আবার আউট ও হচ্ছে গপ গপ করে।
আমি তো আমার ললনা কেই দেখতাছি।
ললনা ও আমার দিকে তাকাই ছিল ২ বার।
সব উইকেট শেষ আছি শুধু আমি আর মাত্র দুই বল,আর দরকার ৬ রান,, ২ বল ৬ রান।
পুরো কলেজ আমার দিকে তাকাই আছে
আর আমি ললনার দিকে, দুইটা বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সহস দিল।
ব্যাট হাতে ২ বছর পর,জানিনা কী হবে।
সবাই সাহরিয়া সাহরিয়া বলতেছে।
প্রথম বল হায় হায় বল কই, বলতো পিছনে।।
আর মাত্র এক বল ৬ রান দরকার। ললনার দিকে তাকালাম কেমন একটা ভয়ের ছাপ, সবাই ভাবছে প্রতি বারের মত এইবার ও হেরে যাব।।
মনে মনে শুধু বলছি ১বল ৬রান, শক্ত করে ব্যাট হাতে নিলাম। বোলিং বল করছে ব্যাটটা গায়ের সকল শক্তি দিয়ে চালাই দিলাম। এমা বল কই
ভাবছি আবার পিছনে গেছে, কিন্তুু না আমাদের কলেজ এর সকলেই লাফাইতেছে।
তার মনে আমরা জিতে গেছি, ললনার দিকে তাকাইলাম হায় হায় কই গেল।।
সবাই আমারে উপরে উঠাই ফেলছে,সেদিনের
মতো বাসাই গেলাম ফ্রেস হয় শুয়ে পরলাম। আর ললনার কথা ভাবছি, কী সুন্দর গাল দুইটা
চোখ দুইটা গহিন বন। এইসব
ভাবতে ভাবতে ঘুমাই গেলাম।
সকালবেলা মোবাইলে মোরগের ডাকে
ঘুম ভাংল। ললনার কথা মনে পরে গেল তাই আবির কে ফোন দিলাম।
মাম্মা তারাতারি আমার বাসার নিচে আয়।
১০ মিনিট পর আবিরে বাইক এর হর্ন শুনে দৌড়ে ব্যাগ নিয়ে চলে গেলাম।
কলেজে গিয়েই ললনার খোঁজ করতে লাগলাম
– মাম্মা তোর কী হইছে কারে খুঁজতেছিস (আবির)।
– আমি ফাইসা গেছি দোস্ত একটা মেয়েরে খুঁজতাছি।
– নাম কী? (আবির)
– জানি না সালা, কালকে খেলার সময় দেখছি।
– কীইইইই তুই খেলছস নাকি মেয়ে দেখছস (আবির)
– ঐ তো মেয়ে,,, মাম্মা পাইয়া গেছি।
– ওই হারামি ওইটা কে জানস। (আবির)
– না কেমনে জানমো।
– সালা ওইটা রিয়া আপু অনার্স ২বর্ষ এর ছাত্রী (আবির)
– তো কীইইইই হইছে, আমার বড় আপুদের ই ভালা লাগে,, কত্ত মিষ্টি মিষ্টি শাষন করবে আহা।
– হুমমমমমমম চান্দু যাও একবার, আজ পর্যন্ত
কোন ছেলে পাত্তা পায়নি। (আমির)
– আমি থাকতে অন্য পোলা পাইব কেমনে শুনি, হা হা হা, দেখ কেমনে কী করি।
– হাই আপু ৭৫ টাকা দান।
– কী? কেন আমি টাকা দিব। (রিয়া)
– এ কী এক দিনেই ভুইলা গেছেন। ঐযে কালকে খেলা দেখলেন না সেই জন্য, তারাতারি দেন খিদা লাগছে।
– ইডিয়ট,,,,, এই নাও ধরো। (রিয়া)
– হি হি থ্যাংক ইউ। আচ্ছা আপু গেলাম কেমন।
– হুমমম যাও সরো। (রিয়া)
– দৌরে ক্লাসে চলে গেলাম আর আবিররে কইলাম মাম্মা তোর ভাবির কাছে থেইকা ১০০ টাকা নিয়া আসছি।
– কীইইইই কেমনে। (আবির)
না বলা যাইব না এখন,,
২ ঘন্টা পর……
সাহরিয়া তোকে হারুন স্যার ডাকছে।
দূর ভাল লাগেনা মালটা ডাকছে মানে আবার খেচর খেচর করবে। সাহরিয়া আমাল ল্যাপটপের এইটা হইছে ওইটা হইছে, ফোনে বাচ্চা লক লাগাইছে খুলে দে।
কিন্তুু স্যারের সাথে ভাল সম্পর্ক আমার।
– জ্বী কাকু বলেন।
– ঐ তুই বাইরে কাকু বলিস ভাল কথা কলেজ এ কইতে না করছি না।( হারুন স্যার)
– আচ্ছা আচ্ছা কী হইছে তাই বলেন।
– অনার্স ২বর্ষ এর ঘরে ক্লাস আছে আমার। (হারুন স্যার)
– তো কী হইছে আমি কী ICT ক্লাস নিমু নাকি।
-ঐ খালি উল্টা বুঝিস ক্যান,, আজকে তোরে নিয়া গিয়া ক্লাস করমু।
– কী কপাল আমার,, ওকে চলেন।
– স্টুডেন্ট এই হলো সাহরিয়া,, অনেক ভাল স্টুডেন্ট শুধু ICT এর জন্য প্রযোজ্য। (হারুন স্যার)
– সালা তোরে বাইরে একবার পাইয়া নেই,, একি আমার ললনা ওই তো সামনে বসে আছে আর মুচকি মুচকি হাঁসছে।
– যাহহহ হারুন তোরে মাফ কইরা দিলাম।
– তো স্টুডেন্ট আজকে আমরা কম্পিউটার এর সফটওয়ার সম্পর্কে জানব,সাহরিয়া প্রজেক্টরটা অন কর (হারুন স্যার)
– সালা হারামি কিচ্চু বুঝে না ওরে আবার ICT এর টিচার বানাইছে কোন হারামি।
– আমি বুঝাইলে তোমরা ভাল বুঝবে না আর তোমাদের কোন আগ্রহ ও থাকবে না। তাই আমার ছাত্রকে আনলাম যাতো তোমাদের মধ্যে হিংসা সৃষ্টি হয় আর ভাল বুঝ।(হারুইন্না)
– কী হারামিরে,,, আমারে বেইচা খাইতেছে সবার সামনে।
– সাহরিয়া আমি যা বলব তুই সবাইরে পার্দায় বুঝাই দিবি। (হারুন)
– সবাইরে আমার ক্যারিসমা দেখইলাম সবাইতো অবাক।আর আমি তো খালি একটু পর পর আমার ললনা কে দেখছি।
– ওই কী দেখিস ওই দিকে, আচ্ছা স্টুডেন্ট তোমরা কিছু মনে করো না ও স্টুডেন্ট+স্টুপিড। (হারুন)
– সবাইতো হেঁসে হেঁসে শেষ। আর আমার তো খালি রাগ লাগতিছে। রিয়া আপুর সামনে সব শেষ আমার।।
– আচ্ছা আজকের মতো ক্লাস শেষ। (হারুন)
– বাইরে আইসা এইডা কী হইল কাকু।
– বাবা রাগ করিস না, তুই তো ওদের ছোট্ট কিছু হবে না, আমার মানসম্মান রাখ বাবা। (হারুন স্যার)
– হুমমমম তোমার রাখতে গিয়া আমার সব গেল, বাসাই আসতেছি গেটে সামনে দেখলাম রিয়া আপুকে।
– হাই আপু কিছু মনে করো না ওই সালা হারুন্না কিচ্ছু বুজে না তাই আমারে নিয়া গেছিল, রিয়া আপু মুচকি মুচকি হাসতেছে।
– তুমি তো কম্পিউটার এর ভালই স্মার্ট, অনেক ভাল তো বুঝাইলা, (রিয়া আপু)
-হি হি,,, আচ্ছা আপু তোমার টাকা।
– কেন টাকা কেন।
– না মানে তখন কী বলে কথা বলব তাই টাকা চাইছি।
– এত ভিতু ক্যান তুমি, মেয়েদের সাথে ঠিকঠাক কথা বলতে পার না।
– পারি তো খালি আপনাকে দেখলেই ভয় লাগে।
একটা কথা বলি আপু।
– হুমমমমমমম বল।
– না মানে আবার মাইর দিবেন না তো।
– আরে দূর না বলো।
– না মানে কিছু মনে না করলে, তোমার নাম্বারটা দিবা।
– আচ্ছা নাও ০১৭……………৩৮।।
এত্ত তারাতারি দিয়ে দিল,, আর দিবেই না ক্যান আমার মতো কিউট পোলা আর একটা পাবে নাকি।
– আচ্ছা আপু তাহলে এখন যাই কেমন।
– ওকে যাও আমি ও যাব।
– একটু গিয়ে আবার রিয়া আপুর কাছে দৌড়ে এলাম,,, আপু একটা কথা ছিল।
– হুমমমম বলো।
– না মানে তোমার টাকা টা নাও।
– ওই তখন তো দিলা একবার।
– দিলাম না তখন, আচ্ছা যাই কেমন।
বাসাই আসার পর থেকে আপুর চিন্তা,, না
তারাতারি বলতে হবে না হলে কেউ নিয়া চইলা যাইব।
– রাতে অনেক ডাইলক মুখস্থ করলাম,
আর সকালে অনেক কিউট হইয়া সোজা রিয়া আপুর সামনে দাঁড়াইলাম।
আপু একটা কথা ছিল।
– আচ্ছা বলো কী কথা।
– আপু আমি তোমাকে হায় হায় ফুল আনিনাই তো। আপু এক মিনিট দাঁড়াও।
বলেই কমিনি গাছটার দিকে দৌড় দিয়ে তিনটা কামিনি ফুল আইনা বল্লাম।
আপু আমি তোমার একটু মিষ্টি মিষ্টি শাষন পেতে চাই।
আমি তোমাকে কেমন ভালবেসে ফেলেছি।
রাত্রি বেলা হিসি করতে গিয়ে ও চাঁদের মধ্যে তোমারে দেখি।।
যেই না বলা শেষ ওমনি দুইটা চর।
আমি কী বলব বুঝতেছি না।
ওখান থেকে আপু চলে গেল, আর আমি ও
আসার সময় একটা মটর বাইক এর সাথে ধাক্কা খাই পায়ে একটু আঘাত পাই।
বাসাই আসার পর সেই কী জ্বর ১০৮ডিগ্রি।
মোবাইলটা পরে নষ্ট হইছিল জ্বরের কারনে ঠিক করা হয় নাই।
পাক্কা ১৫ দিন পরে কলেজে গেলাম, একটু খুঁরে খুঁরে হাঁটছি। কোথায় থেকে যানি রিয়া আপু ঝরের গতিতে আসল। ওই কই ছিলা হুমমমমমমম চর দিছি বলে আর আসা হবে না, আমি তোমার কেউ না, আমি কী না বলছি, বলেই কেঁদে দিছে। আরে আমি মটর বাইক এর সাথে ধাক্কাআআআআ বলার আগে আমারে জরাই ধরছে।
আহা কী আরাম,, ভালা ভাগ্গি মটর বাইকটার লগে ধাক্কা লাগছিলাম।
সমাপ্ত