সারাদিন আড্ডা দেবার পর বাড়িতে ঢুকতে থমে থমে পরিবেশ হয়ে আছে । ঘরে ঢুকতেই দেখলাম খালা খালু বসে আছে সাথে আমার বাবা মা আর পাশেই মাথা নিচু করে অরুটা বসে আছে । আমাকে দেখে মনে হল বাবা আরও একটু রেগে গেল…বাবার হঠাত রাগ আর থমথমে পরিবেশের কারণটা বুঝতে পারছি না বাবার পাশেই মা বশে ছিল মনে হল মা ও খানিক টা রেগে আছে
– বাড়িতে এরকম পরিবেশের কারণ কি আর ববাকে দেখে মনে হল আমার উপর রেগে আছে
– কি চাই
-কি চাই মানে
– কিসের জন্য এই রুমে
– বারে এখন থেকে এটা আমারও ঘর
– একটা মাত্র সাইন আর কবুল বলার মাধ্যমে এটা আপনার ঘর হয়ে গেল
– আমি আপনার বিয়ে করা বউ
– বিয়ে করা বউ তো কি হয়েছে
-বিয়ে করা বউ মানে আপনার অর্ধাঙ্গিনী আর আপনার যা কিছুতে আপনার যেমন অধিকার আছে আমারও অধিকার আছে
– আসছে অধিকার নিতে
– সরে দারান ঘরে ভিতরে ঢুকব আর আপনি আপনি বন্ধ করে তুমি বলার অভ্যাস করেন
– ঘরে ঢুকতে দিবনা আর তুমি জীবনে বলব না অবশ্য আগের মত তুই বলতে পারি
– কি আপনি আমায় তুই বলবেন আর ঘরে ঢুকতে দিবেন না
– যা শুনেসেন তাই
– আচ্ছা বাবা কে তাহলে ডেকে আনি
– কার বাবা
– কার আবার আমার শ্বশুর মশাই মানে আপনার বাবা
– আপনি ঘরে ঢুকতে পারেন (আসল জায়গায় ঘায়েল করেছে)
– ভয় পেলেন নাকি
– দূর্জয় কখনও ভয় পাই না
– তা ত দেখতেই পাইলাম
– খাটে কোলবালিশ কেন (বউ)
– কোলবালিশ ছাড়া আমি ঘুমাতে পরিনা
– এখন থেকে কোলবালিশ ছাড়া ঘুমাতে হবে
– অসম্ভব
– সম্ভব … প্রয়োজনে আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখবেন
– লজ্জা শরম নাই নাকি আর আপনাকে জড়িয়ে ধরা অসম্ভব
– এখানে লজ্জার কি হল আমরা এখন স্বামি-স্ত্রী না
– আমি হতে চাইনি
– আমি আপনার বউ হতে চেয়েছি
– তাই বলে ক্যারিয়ার করার আগে, আমি ত সবে মাত্র পড়ালেখা শেষ করলাম এই নাটকটা না করে বিয়ে না করলেই হত না
– না হত না তুই অন্য মেয়েদের সাথে ফস্টিনস্টি করবি আমি বসে বসে তা দেখব তাই নিজের
জীনিস কে একদম নিজের করে রাখলাম ( রেগে)
– আমি কখন মেয়েদের সাথে ফস্টিনস্টি করিনা আমার মত ভাল ছেলের নামে আর বদনাম
কখন সহ্য করবনা
– কিসের বদনাম সত্য কথা বললে গায়ে লাগে তাই না। সে দিন ত দেখলাম একটা মেয়ের সাথে নদীর ধারে বসে ছিলি
– কোন দিন
– এখনত দিনেও ভুলে যাবি
– ঠিক ভাবে কথা বল সেটা কোন দিন ছিল
– শুক্রবার বিকালে
– সেই দিন …ওই দিনত আমরা তিন জন আড্ডা দিচ্ছিলাম
– তোমরা দুইজন ছিলে
– হয়তবা তুই তখন ভালভাবে দেখেছিলি না
– এখনত আমি ভালভাবে দেখবনা
– আচ্ছা ঠিক আছে এখন এটা বল এই নাটক টা কেন করলি
– তুই অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করছিলি কেন
– শুধু এই জন্য
– হুম
– তাহলে তুই বিচার দেয়ার বদলে এই নাটক টা করলি কেন
– তুই হারিয়ে যেতিস বলে
– ভালবাসিস আমায়
– হুম (মাথা নিচু করে)
– আমাকে বলতি আর এত নাটক টা না করলেই পারতি
– আমি মনে করেছিলাম তুমি আমার থেকে হারিয়ে যাচ্চ তাই আমার মাথায় কাজ করছিল না তাই এই বুদ্ধিটা করে নাটক টা করেছিলাম
– কিন্তু আমি যে খালু আর খালার কাছে খারাপ চরিত্রের মানুষ হয়ে গেলাম
– কথা দিচ্ছি সব ঠিক হয়ে যাবে
– কি আর করব এসব ব্যাপারে পরে দেখা যাবে এখনত ঘুমাই। আমি অরুকে ঘুমাতে বলে নিজেও ঘুমিয়ে গেলাম
– এখানে বস (বাবা)
– চুপ করে বসে পড়লাম নাজানি কি বিপদ আছে সামনে
– কি শোনছি এসব আমি (বাবা)
– কি শোনলেন
– বেয়াদপ সব জেনে না জানার ভান করা হচ্ছে (বাবা)
– (কি করলাম রে বাবা কিছুই ত জানি না)
– তোর সাথে অরু কি হয়েছে যে মেয়েটা মরতে বসেছিল
– আমি কি করেছি (অবাক হয়ে অরু আর বাকি সবার দিকে তাকালাম )
– চুপ বেয়াদপ সব করে এখন বলিশ আমি কি করেছি
– আমরা মিলে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজ তোদের বিয়ে দিব
– কিন্তু আমি কি করলাম যে বিয়ে করতে হবে
– আর একটা কথা বলবিনা (বাবা)
বাবারে আমি এমন কি করলাম যে আমাকে অরুকে বিয়ে করতে হবে । পরে ঘটনা যা শোনলাম আমার মাথায় হাত আজ অরু নাকি তার মা ববা কে বলেছে, আমি নাকি তার সাথে ব্রেকআপ করেছি. . আর সে আমায় ছাড়া বাচবেনা এমনকি আমার সাথে যদি আজকের মধ্যে বিয়ে না হয় তবে সে এক পাতা ঘুমের বড়ি খাবে বলে হুমকি দিয়েছে আর অরু টা ছোট থেকেই যেদি যা বলে তাই করে তাই আমার সাথে এই অঘটন টা ঘটে গেল।
– এইযে সাহেব ঘুম থেকে উঠেন
– তুই
– আবার তুই কেন তুমি করে বলেন
– তুমি করে বলতে পারব না
– তাহলে আমি কি করব জানেন
– কি করবি
– বাবা কে ডেকে বলব আপনি আমাকে গালি দিয়েছেন
– মিথ্যা বলবে
– এখন কেন মুখ দিয়ে তুমি করে বের হচ্ছে
– আমি এমতেও তোমাকে তুমি করে বলতাম ( কি ফাজিল মেয়েরে বাবা)
– তা ত বুজতেই পারলাম
– এই দূর্জয় কাউকে ভয় পাইনা
– তাই ত দেখছি
– বুঝতে পারলেই ভাল আর এখন আমায় জ্বালাও না আমি আরেকটু ঘুমাব
– লক্ষি বাবুর মত উঠেন নইলে..
– আচ্ছা উঠছি… ফাজিল মাইয়া কোথাকার
– কিছু বললেন
– না না কিছু বলনি
– না বললেই ভাল আর আপনি দ্রুত ফ্রেস হয়ে নাস্তা করতে আসেন
– হুম আসছি যাও
– ঘুম ভাঙ্গল (বাবা)
– জ্বী আব্বু (কি বাশটাই না রেডি করছে আল্লাহ মালুম)
– তা আর বাপের টাকাই আর কতদিন। ঘরে ত একটা বউ আছে এবার একটা চাকরি খুজ (বাবা)
– জ্বী আব্বু আজ থেকেই খোজা শুরু করব
– খোজার দরকার নাই কালকে তোকে নিয়ে আমার এক বন্ধুর অফিসে নিয়ে যাব আসা করি
চাকরিটা হয়ে যাবে কালকে সকালে রেডি হয়ে আমার সাথে যাবে
– ঠিক আছে আব্বু
মেয়েটা আসলেই একটা পেরা আসতে না আসতেই আমার ঘুমের বারোটা বাজল। আর মনে করেছিলাম কিছুদিন বাবাবর পয়সাই কিছু দিন আকাশের নিচে স্বাধীন ভাবে ঘুরব তা আর অবকাশ রইল না। এখন থেকে আমাকে অন্যর পরাধীনে কাজ করতে হবে। আবার এদিকে তিনি আবার আমার বাড়ির স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে আছেন। আল্লাহ জানে আমার কি হবে কি জীবন টা মেয়েটা জীবনা তেনাতেনা করে রেখে দিবে। মনটা এখন কইতাছে দুর্জয তোর লাগি এক পরমাণু আফসুস।