বাজারে যাওয়ার রাস্তাটার মোড়েই রশিদের চায়ের দোকানটা। দোকান বলতে মরচে ধরা ক’খানা টিনের একটি ছাপড়া ঘর। চারপাশে তার পাটখড়ির বেড়া। তার মধ্যেই একটি টেবিল আর তার দু’পাশে দু’টি বেঞ্চ পাতানো। বাহিরে চুলার উপরে খড়ের একটি বাড়তি চালাও আছে। সেখানেও একটি বেঞ্চ পাতানো থাকে। যাদের সময় কম তারা বাহিরের বেঞ্চটাতেই বসে। ভেতরে বসে তারাই যারা চা খেতে খেতে একটু বিশ্রাম নিতে চায় অথবা চায়ের সাথে আয়েস করে একটা বিড়ি বা সিগারেট টানতে চায়।
রশিদের দোকানে চা ছাড়া নোনতা বিস্কুট এবং পান-সিগারেটও পাওয়া যায়। চা ,পান, বিড়ি এই তিনে যারা অভ্যস্ত এবং যাদের সময় কাটে না বেঞ্চ ক’খানা তাদের দখলেই থাকে সবসময়। ইদানিং সকাল-বিকাল বেশ ভিড় জমে যায় এখানে। তখন অনেকেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চা খায়। রোজ সকালে বাজারে এলে রশিদের এক কাপ চা না খেলে কোন কাজই যেন শুরু করতে পারি না আমি। কারণ সম্ভবত রশিদের চায়ের গুণ। এক কাপ খেলেই মাথা ধরা পর্যন্ত সেরে যায়। রশিদের চায়ের খ্যাতি বেশ ছড়িয়ে পড়েছে। ছেলেটা চা বানাতে বেশ দক্ষ হয়ে উঠেছে। অথচ চায়ের দোকান শুরু করবার আগে সে কোন চায়ের দোকানে কাজও করেনি। কী করে যে ছেলেটা এ কাজে এতো দক্ষ হলো কে জানে।
দারুন চায়ের কারিগর রুগ্ন স্বাস্থ্যের অধিকারী এই ছেলেটা আমারই এক প্রতিবেশির ভাগিনা। সেই সুবাদে রশিদ আমাকে মামা ডাকে। দোকানে এসে বসা মাত্রই বলবে, ‘মামা এক মিনিট,। এই এক মিনিট করতে করতে দশ মিনিট গত হবে, তারপর এক কাপ চা বানিয়ে দিতে দিতে বলবে- ‘মামার স্পেশাল চা, সে জন্যই দেরি হয়।’
প্রতিদিন সকালে রশিদের স্পেশাল চায়ে চুমুক দিতে দিতে সব কাজের আগে আমি খবরের কাগজে চাকুরির বিজ্ঞাপন পড়ি। তারপর আমার দিনের কর্মসূচি ঠিক করি। যেমন আজকের কর্মসূচি: গত রাতে চাকুরির যে দরখাস্তটি লিখেছি, সেটি আজ ডাকে দিতে হবে। কিন্তু সঙ্গে যে একশত টাকার ব্যাংক ড্রাফট লাগবে সেই টাকা বর্তমানে আমার পকেটে নেই; তার একটা উপায় করতে হবে। বন্ধু মোশারফের হাতে একটি চাকুরির বিজ্ঞাপন আছে তার একটি কপি সংগ্রহ করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে খুঁজে বের করে চরিত্রগত এবং নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট সই করে নিতে হবে। অবশ্যি রাকিবের চাকুরিটা শেষ পর্যন্ত এনজিও তে না হলে কাউকেই খুঁজতে হতো না। কারণ চেয়ারম্যান এবং সরকারী অফিসারদের সত্যায়িত করার কাজটা রাকিবই চালাতে পারতো।
চা খেতে খেতে ভাবছি এতগুলি কাজ আমাকে করতে হবে। আর এতসব কাজের মধ্যে ছোট খাটো অর্থহীন আরও কত কাজ যে হঠাৎ হঠাৎ তৈরি হবে তারও কোন ঠিক নেই। প্রতিদিনই আমি এতসব কাজে ব্যস্ত থাকি তবু বাবা বলেন আমি নাকি তাঁর বেকার ছেলে। আজ আরও একটি বাড়তি কাজ পেয়েছি। সকালে বেরোবার সময় বাবা বলেছেন তাঁর চাকুরিজীবি বন্ধু মন্টু কাকার সঙ্গে দেখা করতে। তিনি নাকি আমার জন্য কোথায় একটা চাকুরির খোঁজ নিয়ে রেখেছেন। সেটা যে কতখানি সত্যি তা জানি না, তবে এইটুকু জানি যে, চাকুরি শীতকালের কোন সবজি না, এত সস্তায় পাওয়া যাবে।
আমার চাকুরির প্রতি বাবার আশা ভরসাটা দিন দিন যেন বেড়েই চলেছে। একপ্রকার অমানুষিক পরিশ্রম করে সংসার চালিয়ে নিচ্ছেন, তার উপর চাকুরির জন্য নানান জায়গায় ছুটাছুটি করতে গিয়ে তাঁর কত টাকা যে আমি শেষ করে ফেলছি তার হিসেব নেই। তবু বাবা হাল ছাড়ছেন না। তবু তাঁর মুখে আশার বাণী। হালের বলদ দু’টি বুড়ো হয়ে গেছে। আগের মতো আর লাঙ্গল টানতে পারে না। প্রতিবেশিরা দেখে যখন বলে, ‘বশির মিয়া গরু দু’টা বদলাও।’ বাবা তখন বলেন, ‘এই আর কটা দিন। আমার খোকার চাকুরিটা হলে কলের হালই কিনবো।’ জমিতে ধানের চারা লাগিয়ে চড়া মূল্যে যখন, তেল, সার কিনতে পারেন না; আবাদ পুড়ে য়ায় অথবা বন্যায় যখন ক্ষেত ভাসিয়ে নিয়ে যায় অথবা বাজারে যাওয়ার সময় ছেঁড়া তিলা ধরা মলিন পাঞ্জাবীটা গায়ে দিতে দিতে বাবা একই কথা বলেন। তিনি বুঝতেই চান না যে, ছোট খাটো একটা সরকারী চাকুরি পেতে হলেও পোষ্য কোটা, এমপির কোটা, মন্ত্রীর কোটা, উচ্চ পদস্থ আমলার কোটা অথবা ঘুষের কোটাভুক্ত হতে হবে। এবং তিনি বুঝতেই চান না যে, চাষার কোন কোটা নেই। চাষা সে শুধুই চাষা।
মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে আমি চাষাবাদের কাজই যখন করতে চাই তখনও বাবা বলেন, ‘এদেশের ঋতুর আর ঠিক ঠিকানা নেইরে খোকা। ফসল আর আগের মতো ভালো ফলে না। যেটুকু ফলে দেশের বাজারে তার মূল্য নেই। এসব ছোটলোকি কাজ তুই করিস না। যেমনে পারিস একটা চাকুরি যোগার করে নিয়ে বুড়ো বাপকে উদ্ধার কর।’ বাবার কথাও ঠিক। আমি তাই রোজ রোজ রশিদের চায়ের দোকানে বসে চা খেতে খেতে খবরের কাগজ পড়ি আর চাকুরির বিজ্ঞাপন খুঁজি।
রশিদের প্রথম চা টা শেষ করে মনে হলো আরও এক কাপ দরকার। কিন্তু ইদানিং রশিদের চায়ের দোকানে ভিড় লেগেই থাকে। অতিরিক্ত লোকের ভিড়ে আমার বড় অসস্তি লাগে। তাই দ্বিতীয় চা টা খাওয়ার ইচ্ছা প্রাণপণে দমন করলাম। চায়ের দোকান থেকে বেরিয়ে আসতে আসতে ভাবছিলাম আজ রশিদকে চা’র দামটা দিয়েই যাই। কারণ চা বাবদ ওর কাছে বেশ কিছু বাকি পড়েছে। বাকিটা আর বাড়াতে মন চায় না। রশিদ নিতান্তই গরীব ছেলে। এই চৌদ্দ-পনের বছর বয়সে শুধু চা বিক্রি করেই সে তার সংসার চালায়। তাছাড়া আমার কোন রোজগার নেই। বাকির পরিমানটা বেশি রকম বেড়ে গেলে পরিশোধ করতে সমস্যা হবে। তাই যা হয়েছে তাতেই হয়তো সংসারের খরচের টাকা থেকে এদিক-সেদিক করতে হবে। পকেট থেকে মানিব্যাগটা বের করে দেখি একটি মাত্র দশ টাকার নোট আছে। গ্রামের বাজারে এক কাপ চায়ের দাম এখন চার টাকা। শহরে আরও বেশী, পাঁচ থেকে দশ টাকা। জিনিসপত্রের দাম দিন দিন শুধু বেড়েই চলেছে; কমছে শুধু আমাদের দাম।
দশ টাকার নোটটা রশিদের দিকে বাড়িয়ে দিতে গিয়ে মনে হলো আমার গা ঘেঁষে কেউ একজন নিঃশব্দে এসে দাঁড়ালো। তাকিয়ে দেখি আমাদের গ্রামেরই দক্ষিণ পাড়ার ইউনুস। দেখলাম ইউনুসের বাঁ হাতে লম্বা-লম্বি ভাবে ভাঁজ করা গোছানো ক’টি খুচরা টাকা। বুঝাই যাচ্ছে সে সাহায্যের জন্য এসে দাঁড়িয়েছে। আমার মনে পড়লো কিছু দিন আগে আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে করে এই বাজারেই ওর জন্য চাঁদা তুলেছিলাম। ওর স্ত্রীর কি যেন একটা মেয়েলি অসুখ হয়েছিল, তারই চিকিৎসার জন্য। আমার ভ্রু কুচকে গেল। ও আবার সাহায্য তুলছে কেন ?
আমি রশিদের হাত থেকে ফিরতি ছ’টাকা নিতে নিতে বললাম-
‘কি ব্যাপার ইউনুস ?’
ইউনুস আমার কথার জবাব না দিয়ে মাথা চূলকাতে লাগলো। আমি ওর আপাদমস্তক নতুন করে আরেকবার দেখে নিলাম। সে বেশ খানিকটা বিব্রত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে।
ইউনুস বয়সে আমার চেয়ে খানিকটা ছোট অথবা আমার সমান বয়সীও হতে পারে। তবে সে আমাকে বড় ভাই হিসেবে মান্য করে কথা বলে। বিপদে-আপদে পড়লেই আমার কাছে ছুটে আসে। আমি বেকার মানুষ। অর্থ দিয়ে কখনোই সাহায্য করতে পারি না। পরামর্শ দেওয়া ছাড়া কোন সম্বলই আমার নেই। তবু সে আসে। ছেলেটা নিতান্তই অশিক্ষিত এবং নির্বোধ। উঁচা-লম্বা হাড্ডিসার দেহ। চোখ দু’টি কোটরের ভিতর থেকে সবসময় অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। অনাহারে থেকে থেকে চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে। চামরা লেগে গেছে হাড্ডির সাথে। স্বাস্থ্যগত দিকটা ওর যুবক বয়সের সাথে বড় বেমানান লাগে।
ইউনুসের নির্দিষ্ট কোন পেশা নেই। আমি দেখেছি সে অন্যের জমিতে মজুর খাটে। যখন গ্রামে কাজ থাকে না তখন সে বাদাম ভাজা, কলাই ভাজা অথবা ঝালমুড়ি বিক্রি করে। আবার মাঝে-মধ্যে শহরের দিকেও যেতে-আসতে দেখা যায় তাকে।
আমার কথার কোন জবাব না পেয়ে আমি আবারও বললাম-
‘ব্যাপার কি রে ইউনুস ?’
ইউনুস নিতান্ত অসহায় ভঙ্গিতে বললো, ‘ভাই থাকলে কিছু দেন।’
‘আবার কি হলো তোর ?’
‘ঐ যে একদিন আপনারা চাঁন্দা তুলে দিলেন।,
‘হ্যাঁ মনে আছে। কেন তোর বউ সুস্থ হয়নি ?’
‘না।’
‘এখন কি অবস্থা ?’
‘খুব বেশি খারাপ। মনে হয় বাঁচবে না।’
‘বলিস কী ?’
‘হ। পাগলি হ’ছে। দিন-রাত খালি আবোল-তাবোল বকে।’
মেয়েদের কিছু অসুখ জটিল পর্যায়ে গেলে তারা বিকারগ্রস্ত হয় জানি। কিন্তু কেন হয় তা ডাক্তাররাই ভাল জানেন। তবে এইটুকু জানি এবং বিশ্বাস করি সময়মতো সুচিকিৎসা হলে সব অসুখই সারে অথবা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
‘আচ্ছা ইউনুস তোর বউকে মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেছিলাম না ?’
‘হ।’
‘নিয়ে গিয়েছিলি ?’
‘না।’
‘তাহলে টাকা-পয়সা কি করলি ?’
‘কবিরাজি চিকিৎসা করাইছিলাম কিছুই হয় নাই। টাকা পয়সা শ্যাষ।
‘এই বুদ্ধি কে দিয়েছিল তোকে ?’
‘পাড়ার সবাই কয় মেডিকেলে গিয়া লাভ নাই। কবিরাজি অষুধ ছাড়া এ অসুখ সারাবে না।’
আমি যেন তালগাছের মাথা থেকে ধপাস করে মাটিতে পড়লাম। এমনিতেই টেনশনে আছি। এর কথা শুনে মেজাজ আরও খারাপ হয়ে গেল। শালা বলে কি ? এই মঙ্গার বাজারে ভিক্ষা করা এতগুলি টাকা জলে ফেলে দিলো ? টাকা গুলো হিসেব করে মেডিকেল কলেজের দু’জন গাইনী ডাক্তারের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে ওর হাতে বুঝিয়ে দিলাম অথচ সব ভুলে কোথাকার কোন চাপাবাজ হাতুড়ে কবিরাজের কাছে গিয়ে নিজের সর্বনাশ নিজেই করলো। রাগের আমার শরীর শক্ত হয়ে গেল। ওকে যে কি ভাষায় গালি দেবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এই ধরনের আহাম্মকি দেখলে ইদানিং আমার অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতে ইচ্ছে করে। ভদ্রতার খাতিরে তা যখন পারি না তখন চড়ে দাঁত ফেলে দিতে ইচ্ছে হয়।
শুনতে খারাপ শোনালেও সত্যি কথা হচ্ছে ইউনুসদের চেয়েও বড় আহাম্মক হলো আমাদের গ্রামের লোকজন। কারো কোন অসুখ-বিসুখ হওয়া মানেই ডাক্তারি ফলাবার মোক্ষম সুযোগ। রোগীর আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশিরা প্রত্যেকেই একেকজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়। একেক জন একেক রকম পরামর্শ দিতে শুরু করে যার ফলে রোগীর অভিভাবক বিভ্রান্ত হয়ে যায়। পরামর্শগুলি সাধারনত: অমুক ফকির, তমুক কবিরাজ ছাড়া এই রোগ সারবে না টাইপের হয়। কেউ কেউ আবার গ্যারান্টি দিয়েও বলে যে, এ্যালোপ্যাথি-হোমিওপ্যাথির বাপেরও শক্তি নাই এই রোগ সারায়। তবে এখানে যারা আগাম কথা বলতে পারে তাদের কদর সবচেয়ে বেশি।
ইউনুস যে চিকিৎসার নামে প্রতারিত হয়েছে সে জন্য ওর প্রতি একটা মায়া হতে লাগলো আমার। আহারে ! বেচারার বুদ্ধি কম বলে মানুষ এইভাবে ওকে ঠকিয়ে দিলো ? আবার এই ভেবে আমার রাগ হতে লাগলো যে, যারা তোকে ভিক্ষা করে টাকা জোগার করে দিলো তাদের পরামর্শটা একবারও তুই ভেবে দেখলি না ? আমি নিজের ভিতরে একটুও স্বাভাবিক হতে পারলাম না। কঠিন ভাবে বললাম- এবার চাঁদা তুলে কোন ফকিরের কাছে যাবি ?
আমার কথার টান বোধ হয় ইউনুস বুঝতে পারলো না। সে সহজ ভাবে বলল- ‘বিরাট একজন ফকির আনছিলাম ভাই। সে খুব বুজুর্গ লোক ! আগাম কথা বলতে পারে। সেদিন আমার বাড়িতে জ্বীন হাজির করেছিল।’
‘তাই নাকি ?’
‘হ। জ্বীন সব বলেছে।’
‘কি বলেছে ?’
‘বলেছে- সে নাকি আমার বাড়ির পেছনে শিমুল গাছটায় অনেক দিন ধরেই আসন করে ছিল। আমার বউ নাকি একদিন ভরা সন্ধ্যায় সেই শিমুল গাছের তলে পেশাব করেছিল। আর তাতে নাকি তেনার আসন নাপাক হয়েছিল।’
‘আচ্ছা। আর সে কারণেই তোর বউয়ের রোগ সৃষ্টি হলো ?’
‘হ। তাইতো বলেছে।’
‘বললো না যে কি করে তার রোগ সারাবে ?’
‘হ বলেছে।’
‘কি ভাবে ?’
‘বলেছে, তিনি এখন শশ্মান পাড়ের অশ্বত্থ গাছটায় থাকেন। গাছটার গোড়া ধুয়ে মুছে সালু কাপড়ে ঘিরা দিয়া তারপর তিন দিন সেখানে পাঁঠার রক্ত দিয়া ভোগ দিতে হবে। আর তিন নদীর পানি এনে এক করে তিন দিন বউকে খাওয়াতে হবে।’
এতক্ষণ আমি রেগে শক্ত হয়ে ছিলাম। এবার পুরোপুরি হতবুদ্ধি হয়ে গেলাম। ইউনুসকে এখন আমার কি বলা উচিৎ আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। তাকে আর কোন উপদেশ দেওয়ার ভাষা আমার মুখে যোগাল না। আমার সব ভাবনা এলোমেলো হয়ে গেল। আমি নির্বোধের মতো এতক্ষণ হাতে ধরে থাকা ছয় টাকা ইউনুসের হাতে ধরিয়ে দিয়ে উদ্দেশ্যহীন ভাবে রাস্তার একদিকে হাঁটা দিলাম।
দুপুরে বাড়িতে এসে শুনি আমার একটা চাকুরি হলে মা নাকি তিন দিন বাড়িতে সত্যপীরের গান করাবেন বলে মানৎ করেছেন।