-শুনছো, আজ তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসো
-কেন, হাতে এতো কাজ বছরের শেষ মাস, খ্রীস্টমাস, নিউ ইয়ার , হবে না গিন্নী তাড়াতাড়ি বাড়ী আসা হবে না
-সারারাত বরফের কব্জী উল্টে আবহাওয়া ভেঙ্গেছে; বরফের লুঙ্গী, প্যান্ট সব খুলে গেছে ঝরছে অঝোরে
-তাই নাকি ? কিছুই তো টের পাইনি। স্যাভারস লাইটের মোলায়েম আলো আর চারিদিকের জানালায় ভারী ব্লাইন্ড ,অন্য নারী যেমন দেখিনা, আবহাওয়ার পরিবর্তন ও দেখিনা
– আমাকে ছাড়া আর কাউকেই দেখতে হবে না ।অনুমতি দিলাম, দক্ষিণা ঘরে এসেই দিয়ে দিও । ব্লাইন্ড তুলে দেখো ।ইমার্জেন্সী দিয়েছে শহরে । শহর এখন অন্ধকারের পর্দা পরে আবাল বৃদ্ধ বণিতা ।
-শহরের উপকন্ঠে, ঘাড়ে মাথায় সামান্যই লাইট পড়ছে, লাইট পোস্ট কে জড়িয়ে ধরেছে সুন্দরী বরফের লাস্যময়ী অড্রে হ্যাপবার্ণ । এই মুহুর্তে তোমাকে আমার পাশে পেলে—
– আই মিস ইউ । চারিদিকে হ্যাভি ওয়েট, বছর জোড়া বিল্ডিং টাওয়ার, মাধ্যাকর্ষণে আশংকা ঝুলানো হয়ত বা আবারো ব্ল্যাক আউটের আক্রমণে আমরা জমে যাব। জীবন ময়ুর আর পেখম মেলবে না। তুমি বাড়ি আসো
– আচ্ছা, আমি এক্ষুনি বের হচ্ছি বরফ সুন্দরীকে ভুলিয়ে ভালিয়ে নতুন একটা হ্যাট উপহার দিয়ে আমি ধীরে ধীরে গাড়ি চালিয়ে সোজা বাড়ি আসছি
-পুরো পাড়া এখন সিমেন্ট, ইট ভাঙ্গা আর প্রতিবেশী জুড়ে
আতংকের মাধবীলতা ,তুমি খুব সাবধানে গাড়ি চালাবে
রেস্টুরেন্টগুলো বিন বারিতো, চিকেন রেপ, বারান্দা যেন বরফের অডিটোরিয়াম
শুধু সিন্থিয়া ব্যারেটের বরফ নৃত্য দেখার দর্শক আমি একা।
সামনের প্লাজা এখন জনতার প্যালেস, সিল্ভার রিং , হোম মেইড ব্লাংকেট আর
উন্মুক্ত গ্রীবাদেশে জলবায়ু নেকলেস ।
শুনতে পাচ্ছো? আর কতক্ষণ লাগবে আসতে? কোথায় আছো? কোন ইন্টারসেকশানে ?
– হাইওয়ের পায়ে ঝুমুর নাচ, অন্তরে ফাস্ট বিট ড্রাম ।
– রাস্তায় কি জ্যাম লেগেছে ? অরেঞ্জ জ্যাম, চেরী জ্যাম
কিছুই তোমার পছন্দ নয় ,ট্রাফিক জ্যাম তোমার একেবারেই সহ্য হয় না।
বরফের জ্যাম কেমন ডেলিসিয়াস বলতো?
-যারা আজ খ্রিস্টমাস গিফট কিনবে ,যারা আজ নিউ ইয়ার গিফট কিনবে
যারা সারা বছরের টুকিটাকি গিফট কিনবে, পরিকল্পনা করেছিল , শতকরা আশিভাগ মুল্যহ্রাস –সবার স্বপ্ন এখন নব্বই ভাগ ডুবে গেছে ব্লিজার্ডের নীচে।
– আমাদের ঘর এখন এক নতুন শহর, তোমার জন্য উদ্গ্রীব সেজে আছে ডানহিল কম্ফোর্টার আর শ্যানেল ফাইভের পাওয়ার ফাইভ
-এই দেখ তোমার জন্য আমি হট মিল নিয়ে এসেছি আমার পকেটের গরমে আমি উষ্ণ রেখেছি হৃদয়ের তাপে আমি—-
ঘরের হিটার বন্ধ হয়ে গেছে,
টিভির বিজ্ঞাপন কেবলই অবাক চেয়ে আছে
মাইক্রো ওভেন ভাবছে আমার আর কি কাজ এই বাড়িতে
হেয়ার ড্রায়ার লজ্জায় মুখ লুকালো বালিশের নিচে
দুটো সত্ত্বা এখন অথৈ অন্ধকারে, ব্লিজার্ড হেরে গেছে প্রত্নতাত্তিক যুগের নায়ক নায়িকা বরফ গলাচ্ছে—
টরন্টো, কানাডা, পৃথিবী