ভাই

ভাই

—ভাই ভাই ও ভাই ( চিৎকার করে)
—কিরে সাত সকালে এমন ষাড়ের মতো চিল্লাস কেনো?
(ভাই)
—এই কিসের সাত সকাল হু নামাজ পড়বে না।
— হ্যাঁ পড়বো তো আরো কিছুক্ষণ ঘুমাই বোন তার পর এখন যা তো।
(ভাই)
—এই ভাই যে কথা বলতে হন্তদন্ত হয়ে চিৎকার করে ছুটে আসলাম শুনো না ভাই।
—লক্ষী বোন আমার এখন যা পরে শুনবো।
(ভাই)
—না,,শুনো না ভাই ভাবিকে সপ্নে দেখলাম
এই মাত্র দেখতে একদম হুর পরি।এখন যাই নামাজ পড়বো আন্নে ঘুমান মা কে ডেকে বলে আসি তার ছেলে ঘুমাচ্ছে নামাজ না পড়ে তখন বুজবে কতো ধানে কতো ভুসি।
— চলে আসলাম ভাই এর রুম থেকে এসে নামাজ পড়ে আবার গেলাম গিয়ে দেখি নামাজ পড়ছে ভাই।ওহহ বলতে তো ভুলেই গেছি আমরা দুই বোন এক ভাই আমি সবার ছোট ভাই সবার বড়ো মেজো হলো আপু ওর বিয়ে হয়ে গেছে ওর একটা পুতুল আছে তিন বছরের যা দুষ্টু ।
.
—কিরে আবার আসলি কেনো?
(ভাই)
—ভাই আমার একটা ভাবি চাই একা একা ভালোলাগে না।
— এই বোন সপ্নে কি জুঁই কে দেখলি না কি?
(ভাই)
—না ভাই ঐ পঁচা মেয়েটার তো বিয়েই হয়ে গেলো শয়তান মেয়ে একটা ।
ভালোই হলো আমার সপ্নের ভাবিটাই বেষ্ট ,
ওকে আমার ভাবি হিসাবে চাই চাই চাই।
ঐ মেয়েকে ভুলে আমার দেখা পরী ভাবিকে তোমার বিয়ে করতে হবে ভাই।
.
—ভাই নিশ্চুপ ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে,,আমার মাথায় ডুকছেনা আজ এতো বছর পরও ভাই ঐ মেয়েকে ভুলতে পারে নি। ক্ষনিকের দেখায় এতো ভালোবাসা যায়?? যানিনা বাপু আমার ছোট মাথায় এসব ডুকবেনা তবে না ডুকাই ভালো এসব ছাইপাশ ভালোবাসায় কখনো জড়াবোনা আর কষ্ট ও পাবোনা।
ওহহ রে আমি তো খুব বুদ্ধমতী হয়ে গেছি তাহলে মা কেন বলে আমার মাথায় গোবর ও নাই যদি গোবর থাকতো তা হলে সার হতো।নাহহ মাকে বিষয়টা জানানো অতি জরুরী হয়ে পড়ছে
( মনে মনে বিড়বিড় করছি)
.
—বসে আছিস কেন? কোচিং এ যাবি না?
আর শুন আমি এখন বিয়ে করবো না মাত্র চাকরি পেয়েছি আগে তোদের স্বাদ আহ্লাদ পূরন করি তার পর।(ভাই)
—আমাদের স্বাদ আহ্লাদ পূরন করার জন্য বাবা একাই যথেষ্ট আর শুনো ভাই বাবা আসছে সামনের মাসে মাকে বলছে মেয়ে দেখে রাখতে বাবার ছুটি কম ।
.
— কই বাবা তো আমাকে কিছু বলে নি।(ভাই)
—আমাকেও তো বলেনি রাতে ফোন এ মা কে বলছে,
তারপর আমার ভাবি কেমন হবে ভাবতে ভাবতে আমার পরী ভাবীকে সপ্নে দেখা।
.
—যা আর পাকনামি করতে হবে না নাস্তা খেয়ে কোচিং এ যা।(ভাই)
—হু যাচ্ছি ওহহহ রে একটা কথা বলতে তো ভুলেই গেছি ….. না তোমাকে বলবোনা মা ওমা কই তুমি যানো আজ নাবিশাল
একটা গবেষণা করলাম
—তোর গবেষণা রাখ তোর কাছে
খেয়ে যা ); (মা)
.
—আরে শুনোনা গবেষণা করে ……….
—চুপ করে খাওয়া খা না হলে উঠে যা সব কাজ একা একা করি একটু সাহায্য করার মানুষ নাই বকে মাথা খারাপ করার লোক এর অভাব নেই,
আমার বড় মেয়েটা লক্ষী ছিল আমার সব কাজে সাহায্য করতো।
এখন একটা হুজুর পালতেছি এক গ্লাস পানি খেতে গেলেও মা ওমা পানি কোথায়.(মা)
—এখন বকাশুরু হয়ে গেছে খেয়ে কেটে পড়ি।
—মা আমি অফিস যাচ্ছি (ভাই)
.
—দৌড়ে এসে ভাই আমি তোমার সাথে যাবো কলেজের সামনে নামিয়ে দিবে তোমার বাইক এর পিছনে বসে যেতে হেব্বি লাগে নিবে ভাই???
—-তুই আজ কোচিং এ যাস নাই? (মা)
—না মা কাল রাতে তো ভাবি কে দেখতে দেখতেই ভালো করে ঘুমাতে পারিনি তাই এটকটু খানি ঘুমিয়ে নিলাম।
( আমি একটা ঘুম পাগলি মেয়ে সময় ভালো বলে
কাজটা সেরে নিলাম
.
—কি সব বলছিস আবোল তাবোল তোর ভাই তো এখনো বিয়ে করে নি ভাবি আসলো কোথা থেকে আবার রাতে এই রুকু তুই ঠিক আছিস তো মা.(মা)
.
—না মা আমি একদম ঠিক নেই ভাই বিয়ে করা না পর্যন্ত ঠিক হবো না চলো ভাই আমরা যাই দেরি হয়ে যাচ্ছে।
—হ্যাঁ চল।
— প্রায় পাঁচ মিনিটের রাস্তা পার হওয়ার পর,ভাই তুমি তো জানতে চাও নাই সপ্নে কি দেখলাম,ইসস কি
রোমান্টিক সিন দেখলাম তোমাদের
.
—রুকু তুই চুপ করবি(রাগি কন্ঠে ভাই)
—একদম না,আমি দেখলাম তুমি আমি মা সবাই মিলে আলো আপুকে দেখতে গেলাম কিন্তু তুমি জানতে না আমরা আলো আপুদের বাসায় যাচ্ছি।
দশ পনেরো মিনিট পর যখন আলো আপু শরবত হাতে কালো শাড়ি পরে আমাদের সামনে আসলো তুমি যে হা করে তাকিয়ে ছিলে সেই হা এর ভিতর দিয়ে অনায়াসে ডজন খানেক মশা পেটে ঢুকে মরতে বাধ্য হতো।
কিন্তু না আমার পরি ভাবি তাতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো একটা চোখ
মারেই তোমার হা বন্ধ হয়ে গেছে হি হি হি
.
—রুকু….(অনেক রেগে মাঝ রাস্তায় প্রায় চিৎকার করে উঠলো)
—আমি তখন ভয়ে কেঁপে উঠে বললাম সরি ভাই এই দেখো কান ধরে বলছি।
চোখে আর কিছু দেখলাম না,
প্রায় তিন ঘন্টা পর চোখ খুলে আবিস্কার করলাম আমি হাসপাতাল এর কেবিনে চার পাসে সবার চোখে পানি আর আমার ভাইটা???
ভাই ভাই ভাই মা আমার ভাই কোথায়।
আমার ভাই এর কিছু হয় নাই তো,তখন নিজের শরিরের ব্যাথা ভুলে খাট থেকে নামতে চাচ্ছি কিন্তু পারছিনা। মাথা তো সরাতে দিচ্ছে না মা মাথায় না কি বেশি আঘাত লেগেছে।
.
—তোর ভাই ঔষদ আনতে গেছে (মা)
—মা ফোন দেও আমার ঔষদ লাগবে না ভাই হলেই হবে।
তখনি দুষ্টু পুতুলটা হাতে হাত রেখে বললো মা মনি আমাকে হলে হবে না(আপুর মেয়ে)
—ওলে বাবালে আমার ছোট মা কে তো আগে চাই।
আগে এরকম বুড়ি মার্কা কথা বললে আদরে মারতে ইচ্ছা করতো এমনকি দুই একটা দিতাম ও তাও আমায় ছাড়া কিচ্ছু বুঝতোনা কিন্তু আজ আদর করতে ইচ্ছা করছে ।(আমি মনে মনে)
.
—চোখে পানি এক হাতে কান ধরে আরেক হাত এ ঔষদ এর প্যকেট নিয়ে সরি বোন আর রাগ দেখাবো না(ভাই)
—হবে না(মুখ ঘুরিয়ে)
—আমার কাছে বসে বেশি লেগেছে বোন,
একটা কথা শুনবি?(ভাই)
—না (ভাব দেখাচ্ছি একন তো
আমারই সময় )
—তোর আলো আপুর সাথে আর কখনো খারাপ ব্যবহার করবোনা (ভাই)
—এমন সময় চোখ গেলো দরজার দিকে চোখ পড়লো ,
এক অপরূপ দৃশ্য চোখে পানি মুখে হাসি মাখা এক রূপবতী মেয়ে ভাই এর পিঠের দিকে তাকিয়ে আছে (সাদা হলেই সুন্দরি হয় না)
.
—যতোটুকু সম্ভব একটু জোরে বললাম আমাকে দেখতে এসে উনি উনার ওনাকে দেখছে আসতে হবে না রুমে,
আর আমাকে দেখতেও হবে না কয়দিন পর তো আমি কাল ননদি হবো তাই এখন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে ।
আমার কথায় সবাই দরজার দিকে তাকিয়েছে শুধু ভাই ছাড়া।
.
—আলো আপু রুমে ডুকতেই ভাই রুম থেকে বাহির হয়ে গেলো লজ্জায় হয়তো আমি যদি আরো কিছু বলি।
—এই দুষ্ট মেয়ে এমন কথা বলে কেউ,
আমার তো তোর ভাই এর কথা শুনে হাঁটা বন্ধ হয়ে গেলো পা নাড়াতে পারছিলাম না(আলো আপু)
—থাক হয়েছে হয়েছে আর বলতে হবে না চোখ ও আটকে গেছে ভাই এর পিঠে না ভালো এখন থেকে তো আর আমাদের দিকে চোখই পড়বে না।
.
—এই রুকু তুই এত্তো পেঁকে গেছিস কবে থেকে(আলো আপু)
—তুমি চলে যাবার পর থেকে,,না হয় আমার ভাইটাকে তো বুজাতে পরতাম না বাধ্য হয়ে পাঁকতে হয়েছে।এমনিতে আমি ভদ্র মেয়ে।
—হয়েছে হয়েছে নিজের ডোল আর নিজে পিটাতে হবে না,
বাসায় গিয়ে আমরা সবাই একসাথে পিটাবো( আপু)
—এই আপু আমি বাসায় যাবো এখন?
— হ্যাঁ ভাইয়া রিলিজ নিতে গেছে(আপু)
.
মা বাবা ও আলো আপু ওহহহ সরি পরি ভাবিকে আগে থেকে অনেক পছন্দ করতো কিন্তু ভাই এর দুচোখে সহ্য করতে পারতোনা ভাবির একটাই অপরাদ ভালোবাসতো ভাইকে।
—আমার ভাইটাও না ঢং জানে বেশি থাকা যা হবার হয়ে গেছে শেষ ভালো যার সব ভালো তার,
আগামি সাপ্তাহে ভাই আর পরি ভাবির বিয়ে আসবেন
কিন্তু সবাই
দাওয়াত রইলো
…(সম্পর্ণ কাল্পনিক )

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত