রূপের অহংকার

রূপের অহংকার

মেয়েটার নাম সাকিবা, সে ছিলো অনেক সুন্দর, তার রূপের তুলনা ছিলো না । সে ছিলো এলাকার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে ।তার জন্য এলাকার শত শত ছেলে পাগল ছিলো। সাকিবার বাড়ির পাশে একটা ছেলে থাকতো ছেলেটার নাম করিম , সে দেখতে সুন্দর  ছিলো না, সে ছিলো অনেক কালো, সাকিবার জন্য পাগল ছেলের মধ্যে করিমও ছিলো একজন । তার খুব ভালো লাগতো সাকিবা কে, হয়তো ভালোও বাসতো।

একদিন করিম জানতে পারলো সাকিবার বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছে, কথাটা শুনার পর সে একদিন তার বাবা মা কে নিয়ে তাদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলো। সাকিবার বাবা মা এর কথা শুনে মনে হলো ওনারা প্রস্তাবে রাজি, আর রাজি হবেন না কেনো, ভালো পরিবারের চেনা জানা ছেলে , সরকারি একটা জব করে, ছেলেও অনেক ভালো।রাজি না হওয়ার কোন কারন ছিলো না। কিন্তু সাকিবা রাজি হয়নি, সে করিম কে সেদিন অনেক অপমান করে তার বাবা মা এর সামনে ।

সাকিবা তাকে বলে তোমার মতো ছেলে কে আমি বিয়ে করবো কি করে ভাবলে, আয়নায় নিচের চেহারা দেখছো কখনো, তুমি হলে কয়লা আমি হলাম হীরা, তোমার সাথে আমার চলবে কি করে।কয়লা আর হীরা কি এক হতে পারে নাকি। আমার জন্য কতো হ্যান্ডসাম সুন্দর পোলা পাগল হয়ে আছে, আর আমি তোমাকে বিয়ে করতে যাবো কোন দুঃখে ।কি ভেবে তুমি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসলে। করিম কোন কথা না বলে চুপচাপ তাদের বাসা থেকে বের হয়ে আসে, সাকিবার কথায় সে অনেক কষ্ট পায়। তার কথা হলো আমি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসছি , যদি আমাকে পছন্দ না হয় তাহলে সুন্দর ভাবে বলে দিলে পারতো তোমাকে আমার পছন্দ না, আমরা চলে আসতাম। কিন্তু কালো বলে সবার সামনে অপমান করাটা তার মোটেও ঠিক হয়নি।

করিম সেদিন কিছুই বলে নাই তাকে, তাদের বাসা থেকে বের হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে শুদু বললো, আল্লাহ আপনি আমাকে কেনো কালো সৃষ্টি করলেন , অন্য ছেলেদের মতো সুন্দর হ্যান্ডসাম সৃষ্টি করলেন না কেনো। এর দুইমাস পরে করিম অন্য একটা মেয়ে কে বিয়ে করে সুখে জীবন যাপন শুরু করে, তার বিয়ের সাত আট মাস পরে সাকিবার ও বিয়ে হয়ে যায়, ছেলে দেখতে সুন্দর অনেক বড় ঘরের ছেলে। তার বিয়ের পর সেও সুখে জীবন যাপন শুরু করে।

কিন্তু সাকিবার বিয়ের পাঁচ বছর পর, এক দুর্ঘটনা তার সমস্ত সুখ কেড়ে নেয়,প্রতিদিনের মতো একদিন রান্না করতে গেলে, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে তার গায়ে আগুন লেগে যায়, এতে তার অর্ধৈক শরীর পুড়ে যায়।চেহারাও অনেকখানি পুড়ে যায়। সাকিবার পুড়ো শরীর দেখে তার স্বামী বলে তার সাথে ঘর করা কোনদিনও সম্ভব না, তাই তার স্বামী তাকে তালাক দেয়, তালাক দিয়ে আবার বিয়ে করে। আর সাকিবা এখন তার বাপের বাড়িতে থাকে।

যে মেয়ের রুপের অহংকারে মাটিতে পা পড়তো না, আজ সেই মেয়ের সেই রুপের কারনে, স্বামীর ঘর ছাড়া হয়ছে, স্বামী ছাড়া হয়ছে, সন্তান ছাড়া হয়ছে। যাকে দেখতে শত শত ছেলেরা পাগল ছিলো, আর এখন কোন ছেলে তারদিকে ভুলেও তাকায় না। তার চেহারা দেখলে ঘৃণা আসে।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত