-সিটটা বেশ চাপা।
-কেন,অসুবিধা হচ্ছে?
-হওয়াটা স্বাভাবিক না?
-আগেও তো রিক্সায় চড়লে গায়ের সাথে গা লেগে থাকতো, কোই তখন তো অসুবিধে হতো না।
-কালো পাঞ্জাবিতে তোমাকে বেশ লাগছে।
-বেশ কথা ঘুরানো শিখে গেছো।কালো তোমার অপছন্দের কালার ছিল।আজ হঠাৎ ভাল লাগার কারনটা?
-তখন লাগেনি,এখন লাগে।
-সেদিন যে কালো শার্টটা কিনলে,কার জন্যে?
-তুমি দেখলে কিভাবে?
-তুমি যে একটা কালো পাঞ্জাবি দাম বেশি হওয়াতে নিলে না,মনে আছে?
-হ্যা,সবকিছুর দাম দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।
-এটাই ওই কালো পাঞ্জাবিটা।এখনও তোমার হাতের ছোঁয়া লেগে আছে।
-তুমি এটা কিনতে গেলে কেন?
-তুমি মে বি ভুলে গেছো যে,আমারও কালো পছন্দ।
-কিন্তু সেদিন তো ঠিকই বলেছিলে, আমার যেটা পছন্দ না,তোমারও সেটা পছন্দ না।
-সেদিন তোমার কালো পছন্দ ছিল না, কিন্তু আজ তোমার পছন্দের খাতায় কালোটাই দেখা যাচ্ছে।
-আচ্ছা তুহিন আর নীলিমার খবর জানো?
-আমাদের সার্কেলের হাবাগোবা ছিল ওরাই।সবাই ভেবেই নিয়েছিল যে ওদের প্রেমটা টিকবে না।কিন্তু দেখেছো,ওরাই আজ বেশ ভাল আছে।শুনেছি একটা ছেলেও হয়েছে।
-তুমি বিয়ে করোনি?
-জানাটা প্রয়োজন মনে করছি না।কোথায় যাচ্ছ?
-ওর অফিসের একটা পার্টিতে।
-একাই যাচ্ছ?
-হ্যা, ও আসতে পারেনি।বলেছে অফিসের বাইরে দাঁড়াবে।তুমি কোথায় যাচ্ছ?
-অফিসে।রাস্তায় গাড়িটা নষ্ট হওয়াতে বেশ ভালই হয়েছে।
-কেন?
-নইলে তোমার সাথে কি দেখা হতো।
-চাইলেই হতো।
-ইচ্ছে নেই।আমার অফিসটা সামনেই, আমি এখানেই নেমে যাচ্ছি।তোমার সাথে গেলে তোমার উনি অন্য কিছু ভাবতে পারে।
-সমস্যা নেই,ও কিছু মনে করবে না।
-আমার আছে।
রিক্সাটা দাড়াতেই আমি নেমে পড়লাম।মানিব্যাগ বের করে ভাড়া দিতেই রিমঝিম বললো,
-দিতে হবে না,আমি দিয়ে দেবো।
-পুরোনো দিনের অভ্যাস,ভুলতে পারিনি।
ভাড়াটা দিয়ে আর দাঁড়ালাম না।এমনিতেই দেড়ি হয়ে গেছে।হয়তো সবাই অপেক্ষা করছে।
কোলাহল যুক্ত জায়গা আমার সবসময় ই অপছন্দের। তাই সবকিছু শুরু করে দিয়ে আমি একটু পাশে এসে দাড়িয়েছিলাম। তখন
সিহাব সাহেব এসে বললেন,
-স্যার,কেমন আছেন?
-জ্বী ভাল।আপনি?
-ভাল।আচ্ছা পরিচয় করিয়ে দেই,আমার স্ত্রী রিমঝিম,আর রিমঝিম, উনি হচ্ছেন এই কোম্পানির এমডি।সত্যি বলতে আমার প্রমোশন টা ওনার কারনেই হয়েছে।
সিহাব সাহেবের স্ত্রীর সাথে কিছুক্ষন কথা বলে এটুকু বুঝতে পারলাম যে,উনি বেশ অবাক চোখেই তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।অবশ্য তার চোখগুলো যে দেখতে খারাপ তেমন না।বেশ ভাল।দেখতেও ঠিক আমার সেই পুরোনো রিমঝিমের মত।যে কোন কারন ছাড়াই হুট করেই চলে গিয়েছিল তার শান্তির খোজে।হয়তো পেয়েছে।আমি সিহাব সাহেব আর ওনার স্ত্রীর সামনেই আম্মাকে ফোন দিয়ে বললাম,বিয়ের আয়োজন শুরু করো, আমি রাজি।অন্য কারও জন্যে নিজের জীবন থেমে রাখার কোন ক্ষমতাই আমার নেই।আর এটা রাখাও উচিত না।সে তার ভাল বুঝতে পারলে তোমারও উচিত তোমার ভালোটা বোঝা।তাই আর যাই হোক,একটা মেয়ের জন্যে অন্য একজনকে আমি কষ্ট দিতে পারবো না।কোন ভাবেই না,কোন মতেই না।