মিরন কারও সাথে দেখা হলেই মনের কথা হুড় হুড় করে বলে দেয়। বাজারে বিভাসের সঙ্গে দেখা। কি বাজার হচ্ছে কথার সাথে সাথেই বিভাস বলল – কি আর বাজার করব? যা দাম, মাস চালাতে আর পেরে উঠছি না। আপনার আর চিন্তা কি? মাস ফুরালেই তো আসছে।
মিরনও ছাড়বার পাত্র নয় – কিন্তু এই যে মাসের শেষে আসে। সে তো একবারই। আপনার যে প্রতিদিনই আসছে আর আসছে, তার বেলায়?
– কিন্তু সে তো বড়ই সামান্য ভাই। আর এ ভাবে যে ক্রমশ ওষ্ঠাগত হয়ে পড়ছি।
– আর মাঝে মাঝে যখন খুব হয় বা অনেক বেশি হয় তখন। তাছাড়া মাসকাবারী ব্যবস্থা করা এই যুগে খুব কম কৃতিত্বের নয়। তার জন্য কষ্ট তো করতে হবে। তাই না?
বিভাস মাথা নাড়ছে দেখে মিরন বলল – জিনিসপত্রের দাম কিন্তু হু হু করে বাড়ছে। কোন কিছুতেই যে সামাল দিতে পারছি না।
বিভাস কথা বলার সুযোগে বলল – তাও বলতে গেলে আগের সরকারের বেলায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল।
মিরন ফোঁড়ন কাটল – দেশ দশ যুগ এগিয়ে যাচ্ছে। আর সরকার তো সবসময় লুটেপুটে খাওয়ার তালে।
ব্যাস, বিভাস কি বুঝল কে জানে? বলে বসল – অ! বুঝলাম আপনার মনোভাবটি। এখনকার সরকারের ভাল কাজ চোখেই পড়ছে না?
মিরন দেখল মুখ ভার করে আরো কিছু বলবে বলবে করেও বিভাস কেটে পড়ল।
তবে মিরন মনে মনে বুঝল বিভাস বুঝে গেছে যে মিরন এণ্টি পার্টি।
বাড়ি ফিরে সে কথাই বলতে মা বাবা তেড়ে এল – সমঝে কথা বলতে পারিস না তো বলিস কেন?
নীতাও মুখ ঝামটা দিল ঘর বয়ে এসব কেউ ডেকে আনে?
মিরন ভাবল, যা বাবা! বন্ধুর সাথে প্রাণ খুলে কথা বলতে পারবও না।
ক’দিনের মধ্যে মিরন টের পেল, কথাটা কত সত্যি।