মা

মা

মা: কিরে কয়টা বাজলো।
সুমি:৬:৪০। ৭টায় বের হবো বাস না পেলে?। ৮ টায় প্রাইভেট,,,,
মা:আমাকে বলবি না।(উঠেই নাস্তা বানানো শুরু করে দিল)
সুমি:অইজন্নতো তোমাকে জাগাইনি। আমার টাইম নাই। আমি এখন খাব না।প্রাইভেট শেষ হলে বাসায় গিয়ে খাব। (সুমি আর ওর মা একটা কাজে গ্রামের বাড়ি আসছে,ও এখন চলে যাচ্ছে মা স্কুল সেরে তারপর বাসায় যাবে )
মা: ৫ মিনিট লাগবে। তুই তৈরি হো।
সুমি: খাওয়া শেষ আম্মু যাচ্ছি আমি।
মা: আল্লাহ হাফেজ। দোয়া পরে ঘর থেকে বের হো। রাস্তা এর একপাশে হাটবি ইত্যাদি,ইত্যাদি,,,,বলতে বলতে মেয়ের পিছনে পিছনে আসছেন।

সুমি:( আজকের দিনের মত প্রতিটাদিন যদি এমন হত।) ভাবনার ছেদ পরল সামনে ৫ টা কুকুর। আম্মু,,,,,,,
মা: কিরে??
সুমি: ৫ টা কুকুর যাব কিভাবে।
মা : হায় আল্লাহ। কিযে হবে তোদের দিয়ে।
মেয়েকে এগিয়ে দিল পাকা রাস্তা পর্যন্ত।
সুমি: আম্মু যাও এভার। কুকুর গুল আবার তোমাকে ধরবে।

সুমি ফ্রেন্ড এর সাথে গাড়িতেতে উঠল।কিন্তু মনের ভিতর শুধু এক্টাই কথা প্রতিদিন যদি এমন হত?মায়ের এই অল্প আদর সুমির জন্য অনেক।অইতো সেদিন সকালে নাস্তা করেনি। মা অনকে বার বলছিল।পরে খাবে।কিন্তু মা স্কুলে চলে গেছে। সব গুছিয়ে সুমি তাড়াতাড়ি করে ক্লাসে চলে গেল।১০ টায় মনে পরল নাস্তা করেনি আজ।বাট এখন কি হবে।১২ টায় মনে হচ্ছে ঘুরেপড়ে যাবে।স্যার এর থেকে ছুটি নিয়ে চলে আসে।মা যদি সকালে বাসায় থাকতো তাহলে কি আর খালি পেটে বের হতে পারতো।যেমন আজ ৫ মিনিট নাস্তা বানিয়ে দিল।এরকম একদিন না অনেক দিন নাস্তা না খেয়ে,অথবা পানি না খেয়ে বাসা থেক বের হয়ে যায়। সকালে মা নাস্তা বানিয়ে, রান্না করে,নিজের জন্য টিপিন নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বের হয় কে খেল না খেল, অনেক সময় নিজেইতো খায় না।স্কুলে যেতে দেরি হলে আবার প্রব্লেম।হুহ এর মাঝে চিল্লাচিল্লিও করে সবাইকে খাওয়ার জন্য কিন্তু এত তাড়াতাড়ি খেতে ইচ্ছা করে,,,এবাবেই দিন চলে।

সুমির সেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেল,,,,,
কেউ জড়িয়ে ধরে কানের কাছে বলছে” আম্মু তুমি এখানে ঘুমাচ্ছ আর আমি তোমাকে পুরা বাড়ি খুজে বেড়াচ্ছি ”
ঘুমের গোরে কথা গুলই এখন শুধু মনে পড়ে সুমির,,
সুমি: আচ্ছা আমার বয়স তখন কত ছিল।না মনে নাই। শেষ কবে এভাবে মা আদর করেছিল,, কোন স্মৃতি মনে পরছেনাতো।
৫ম শ্রেণিরর একটা ঘটনা,,,,,
ফ্রেন্ডরা: কিরে তোর চুল কই,,
সুমি: এইতো আম্মু কেটে কাদ সমান করে দিছে বলছে সমাপনী পরিক্ষা।চুলের যত্ন করব না পড়ব তাই।
মনে পড়ে সুমির কথা শুনে ওর সব ফ্রেন্ডরা হাসতে হাসতে শেষ। আজ সুমি ঠিকি বুঝতে পারে।অদের মত ওর মাতো আর ফ্রি না।যে এক্সাম এর আগে মেয়েকে মাথা বেধে দিবে,খাইয়ে দিবে,সব গুছিয়ে দিবে।সকাল তাড়াতাড়ি করে হয়তো পরিক্ষারথী মেয়ের জন্য নাস্তা দুধ,ডিম এগুলা রেডি করে দিতে পারে কিন্তু খাইয়ে দেওয়া, চুল বেধে দেওয়া এগুল করার সময় যে তার মায়ের ও নাই।পুরো সংসার গুছিয়ে তারপর স্কুলে যেতে হবে।

এরকম অনেক ঘটনাই আছে।যখন গ্রামের ছিল হাইস্কুলে পড়তো তখন কোন কারনে যদি স্কুল আগেই ছুটি দিয়ে দিত তাহলেই সেরেছে।কে আবার আম্মুর স্কুলে গিয়ে ঘরের চাবি আনবে।তারচেয়ে সিঁড়িতেই বসে মায়ের জন্য অপেক্ষা করতো।এবাবে কতদিন ঘুমিয়েও গিয়েছে,,,,,
যখন আরো বড় হল বাইর থেকে ক্লান্ত হয়ে পিরে ঘরের তালা খুলে ভিতরে গিয়ে একটা আফসোস কাজ করত।মা যদি ঘরেই থাকত তাহলে সব বাদ শুধ ” আম্মু এক গ্লাস পানি দাও,,, কথাটি বলতে পারত।
হুহ গ্রামের দিন গুল থেকে শহরের বাসার দিন গুল আরো বোরিং।মনে হয় মেসে বসবাস করছি

সুমি: মা জান বাসা থেকে বের হতে,বাসায় পিরে,আমার ছুটির দিনে,কারও কাছ থেকে কষ্ট পেলে,অসুস্থ থাকলে,একটু তোমার আদর পেতে ইচ্ছা হলে,,,,,তখন তোমায় কত্তবেশি মিস করি।কিন্তু ঠিক সময়ে কখনো তোমাকে পাইনা।না না মা আমার কোন অভিযোগ নেই।মা তুমি অনেক কষ্ট করে নিজের হাতেই আমাদের বড় করেছ,অন্নদের মতো কাজের মেয়েদের হাতে তুলে দাওনি।হুম্বতূমিতো আমাদের জন্নই কষ্ট করছ।সেই ছোটবেলা থেকে যখন বুঝতে শিখেছি তোমার অনকে কষ্ট হয় ঘর চাকরি সামলাতে তখন থেকেই নিজের কাজ নিজেই করারা চেষ্টা করি।অনেক ইচ্ছার কথা কখনও তোমাকে বলা হয়নি।এত ব্যস্ততার মাঝে আমার ইচ্ছা পুরোন করতে তোমার কষ্ট হবে বলে।খুব ইচ্ছা করে এখন মা তোমার সব কাজ আমিই করে দিব।তোমার ব্যস্ততার ভার কমিয়ে দিব।কিন্ত বড় হয়ে এখন নিজের পড়ালিখা নিয়ে আছি।মা তোমাকে হয়তো কখন মুখে বলা হয়নি কতটা মিস করি।অসুখ হলে আমি কাদি অসুস্থতার জন্য নয় তোমাকে কাছে পাইনা তাই।,,,জান মা মাঝে মাঝে অনেক একা লাগে।নিজের কাজ নিজে আর করতে ভাল লাগে না।নিজের বোঝা যেন আর বইতে পারছি না।মা ইচ্ছা করে তোমাকে জড়িয়ে ধরে দিন পার করে দিই।মিস করি মা তোমার ভালবাসা কে অনেক বেশি।

সুমির মনের এই কথা গুল হয়তো কখনি মাকে বলা হবে না।

আচ্ছা মা তো মাই মা কেন চাকরিজীবী হবে।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত