স্নিগ্ধতা

স্নিগ্ধতা

স্নিগ্ধতা খুব মিষ্টি চেহারার একটা মেয়ে। দেখতেও যেমন মিষ্টি, স্মার্ট তেমনি অসাধারণ গুণের অধিকারী। মেয়েটা স্মার্ট হলেও একটু গাম্ভীর্য। খুব কম কথা বলে, হাসতে পারেনা কিন্তু অসাধারণ তার গানের গলা। স্নিগ্ধতা গান গাইলে খুব শুনতে ইচ্ছে করে।

স্নিগ্ধতা ওর বাবা মার দেয়া নাম নয়, এটা ওর প্রিয় মানুষের দেয়া একটা নাম। স্নিগ্ধতার প্রিয় মানুষটার নাম আনিস। কলেজে পড়ার সময় ওদের পরিচয় হয়, তার পর প্রেমের সম্পর্ক।

স্নিগ্ধতা প্রথম অবস্থায় যখন কলেজে যাওয়া শুরু করে তখন মুখ চোখ ঢেকে বোরখা পরে আসতো। কেউ তার চেহারাটা দেখতে পেত না। কারো সাথে তেমন কথা বলতো না,চুপ করে বসে থাকতো। ক্লাস শেষ হলে সোজা বাড়িতে চলে যেত কোথাও ঘুরতো না।বাবা মার আদর্শ মেয়ের মতো জীবন যাপন করতো।

স্নিগ্ধতা প্রথম একটা সম্পর্ক করেছিলো। কোন কারণে তার প্রথম ভালোবাসার মানুষটার সাথে তার সম্পর্ক টা ছিন্ন হয়ে যায়। এই দুঃখ আর কষ্ট স্নিগ্ধতা সহ্য করতে পারেনা। মেয়েটার জীবনটা এলোমেলো হয়ে যায়। পড়ালেখাতে মন বসাতে পারে না। অঝোরে কাঁদতে থাকে মেয়েটা, সব স্বপ্ন গুলো শেষ হয়ে যায়। হতাশায় ভুগতে থাকে মেয়েটা।

স্নিগ্ধতা যখন দুঃখ আর কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলো তখন দেবদূত আকারে পাশে এসে দাড়ায় আনিস।আনিস প্রথম থেকেই স্নিগ্ধতা কে ভালোবাসতো।অনেক প্রোপোজ করেছিলো কিন্তু সেদিন স্নিগ্ধতা রাজী ছিলো না। পরবর্তীতে দুঃখের সময় আনিস যখন পাশে এসে দাঁড়ায় তখন আস্তে আস্তে আনিসের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়। একটু একটু করে কথা বলা থেকে শুরু করে কলেজে পুরো সময় একসাথে কাটতে থাকে দুজনের। দুজনের ঘনিষ্ঠাতা অনেক বাড়তে থাকে। স্নিগ্ধতা একসময় ভুলে যায় তার অতীত। আনিস কে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। আনিসও হাতটা সারা জীবন ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়। বেশ ভালোই চলতে থাকে দুজনের।

স্নিগ্ধতা আর আনিস দুজনে একসাথে টিউশনিতে যাওয়া,সারাটা দিন কলেজে একসাথে কাটানো, পড়ন্ত বিকেলে হাত ধরে পাশাপাশি চলা,কাধে মাথা রেখে গল্প গুজবে মেতে উঠা। তাদের দুজনের সময়গুলো খুব ভালো কাটতে থাকে। বৃষ্টির দিনে একসাথে টং দোকানে লাল চা তাদের খাওয়া চাই চাই। সন্ধা নামলে একসাথে ফুসকা আর চটাচটি খাওয়া চাই। স্নিগ্ধতার খুব প্রিয় খাবার চটাচটি।

হঠাৎ করেই স্নিগ্ধতা কলেজ পরিবর্তন করে অন্য কলেজে চলে যায়। আনিস আগের কলেেজ থেকে যায়। দুজন দুই কলেজে থাকলেও তাদের সম্পর্ক আরো বেশি গভীরতা পায়। তাদের দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথেই সম্পর্কটা খুব বেশি মধুর হয়। সকাল হলে আনিস কলেজে পৌছে দিয়ে আসে স্নিগ্ধতা কে।আবার কলেজ শেষে হাটতে হাটতে স্নিগ্ধতা কে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। এভাবে তাদের সম্পর্কটা গভীর থেকে গভীরতম পর্যায়ে পৌঁছায়। দুজনে স্বপ্ন দেখতে থাকে নতুন দিনের।

কলেজ জীবন শেষ করে স্নিগ্ধতা আর আনিস দুজন কিছু দিনের জন্য আলাদা হয়ে যায়।দুজনের বাড়ী দুই জেলায় হওয়ার কারণে তাদের এ আলাদা থাকা।আলাদা থাকলেও তাদের মোবাইল কিংবা ইন্টারনেটের যুগে বিভিন্ন মাধ্যম দ্বারা যোগাযোগ চলতে থাকে। স্নিগ্ধতা এখন নার্সিংয়ের এ পড়ে আর আনিস একটা নামকরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে। বেশ ভালোই আছে ওরা। ভালো থাকুক তাদের ভালোবাসা। পূর্ণ হোক ওদের আগামী দিনের সব স্বপ্ন।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত