পুরাতন কোন কিছু শেষ করার জন্য নতুন কোন কিছুর প্রয়োজন হয়; কিন্তু অাবার জীবনে এমন কিছু এসে যায় যা কোন নতুনই পরিবর্তন করতে পারে না।
হ্যাঁ; আমার জীবনেও এমন কেউ এসেছিল; আমার পুরাতন আমি কে পরিবর্তন করতে।তখন ভার্সিটি জীবন প্রায় শেষ পর্যায়ে; নিজের অবস্থানে প্রায় অটল; কখনো প্রেম করবো না; বিয়ের প্রতি ও তেমন কোন আকর্ষন নাই; মেয়েদের প্রতি কেন যেন একটা বিপরীত মনোভাব ছিলো।
হঠাৎ কিভাবে যেন মেয়েটার সাথে পরিচয় হয়ে যায়; ভার্সিটিতে আমার এক বছরের ছোট ছিলো। হ্যা; মেয়েটা অনেক সুন্দরী ছিলো; কিন্তু তার সৌন্দর্য আমায় ততটাও আকর্ষণ করে নাই; তার সাথে চলতে চলতে তার সরলতার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম ; তার সরল দুষ্টুমি, সরল স্বীকারুক্তি, সরল কথা; আস্তে আস্তে গোটা মানুষটিরই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম ; মেয়েটির নাম ছিল দিয়া।
তখন শীত প্রায় শেষ হতে চলেছে; আমাদের বন্ধুত্বের এক বছরের ও বেশি সময় পার করে ফেলেছি আমরা; ভালবাসাটা তৈরী হয়ে অনেকটা গভীর ও হয়ে গিয়েছে; কিন্তু কখনো তেমনিভাবে জানানোই হয় নি; যদিও দু’একবার ফাজলামি করতে করতে বলেছি; ওই ও ফাজলামি ভেবে উড়িয়ে দিয়েছে।
আস্তে অাস্তে আমার অামিটা তার হয়ে গেছি ; সেও কখনোই জানতে পারে নি। সারাদিনই প্রায় তার সাথে আড্ডা চলতো, আর কোন বন্ধুদের সাথেই মেশা হতো না।
তো আমাদের বন্ধুত্বের যখন দুবছর পূর্ন তখন আমার পড়াশুনাও শেষ; কিভাবে যেন একটা চাকুরিও মিলে গেল। ভাবলাম এতদিনে যখন তাকে আমার অনুভূতি বুঝাতে পারি নাই তখন চাকরিটা স্থায়ী করেই ফিরে এসে একবারে বিয়ের প্রস্তাব দিবো।
চলে গেলাম চাকুরিতে; প্রথম দিকে চাপটাও বেশি; রাতে অফিস থেকে ফিরে কখনো কখনো ফোনে কথা হতো; খুব বেশি কথা কখনোই হতো না।
দুমাস পরে আবার ফিরে আসলাম ক্যাম্পাসে; তার সাথে দেখা করলাম; কিন্তু এই অল্প সময়ে অনেক কিছু পরিবতর্ন হয়ে গিয়েছে। সে এখন কারো বাগদত্বা! অামি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম কিছু মুহুর্তের জন্য।
: তো Uncle আপনি তো তখনো তাকে জানাতে পারতেন (সজীব; আমার জুনিয়র সহকর্মী ; অনেক ভাল ছেলে; নতুন যোগ দিয়েছে; আমার অধিনেই কাজ করে)
– তখন জানিয়েই বা কি লাভ!
: তার কোন ছবি আছে আপনার কাছে?
( অনেক পুরাতন একটা ছবি বের করে দিলাম ; ঝাপসা হয়ে গেছে)
: আপনি কি কখনো জানেন; এই মানুষটিও আপনাকে ভালবাসতো; আপনারই অপেক্ষা করেছে; সেদিন যখন বলেছিলো সে কারো বাগদত্বা তখনো সে চাইছিলো আপনি তাকে সাথে নিবেন।
– তুমি এত কিছু কিভাবে জানো?
: কারন আমি এই মানুষটির একমাত্র ছেলে।
– তোমার মা কোথায়?
: উনি কিছু দিন আগেই সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে; আর কখনোই ফিরে আসবে না…
(সজীবের কোন কথায় আমার কানে আর ঢুকছে না; আমি যেন স্তব্ধ পাথর মানব হয়ে গেছি)