বিশ্বাসঘাতক

বিশ্বাসঘাতক

হাতে ছুড়ি নিয়ে বসে আছি নিজের জীবনসংগীকে হত্যা করার জন্য কিন্তু ৩ঘন্টা আগে এই আমিই ওর জন্য সারপ্রাইজ প্লান করছিলাম।

৩ঘন্টা আগে…

আজকে একটা খুশির সংবাদ ইফানকে দিব দেখে ঘন্টা ধরে সাজছি। প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে সেটার প্রাক্টিস করছি।চোখে ওর পছন্দমতো গাঢ় করে কাজল দিয়েছি ইফানের বেশ পছন্দ। হঠাৎ চুল আচড়াতে যেয়ে চিরুনি ঠুস করে পড়ে খাটের নিচে চলে গেল।খাটের নিচ থেকে চিরুনি বের করতে যেয়ে দেখি একটা টাচস্কিন ফোন। আমি একটু অবাক ই হলাম। ফোনটা বেশ দুরে রাখা হাত দিয়ে আসছিল না। পরে পাশের ঘর থেকে যেয়ে ঝাড়ু নিয়ে আসলাম।ঝাড়ুটা দিয়ে কিছুক্ষন গুতাগুতির পর ফোন টা বের করলাম। আমার নতুন শাড়িটা নোংরা হয়ে গেছে শরীরেও ধুলায় ভরে গেছে। তাও যেন কেমন জানি একটা স্বস্তি কাজ করছে ফোন টা পেয়ে। ফোন টা দেখে একটু অবাক ই হলাম। একদম নতুন ফোন। কিন্তু তাও খাটের নিচে কেন??নিজের কাছেই নিজের প্রশ্ন।

তারপর আমি ফোন টা অন করলাম। ফোনে চার্জ ও ফুল। তার মানে কেউ এই ফোন ইউজ করছে!! কিন্তু ঘরে আমি,ইফান আর আমার ছোট বোন থাকে। আমার বোন কলেজে উঠলেও ওকে আমি ফোন দেই নাই কারন লেখাপড়ার যেন কোন ক্ষতি না হয়।তাহলে কি ফোন টা ওর? প্রথমেই সন্দেহটা ওর দিকে গেল।

আমি ছুটে ওর ঘরের দিকে গেলাম।ঘরে যেয়ে দেখি অর্পা ঘুমাচ্ছে । আমি রাগে ফুসফুসাচ্ছিলাম ওর ঘুম দেখে ওর কত্ত বড় সাহস আমি মানা করা সত্ত্বেও ও ফোন কিনেছে??

রাগে ওর চুলের মুঠি ধরে ওকে ঘুম থেকে উঠালাম।
ও ঘুমের চোখ মেলার আগেই আমি জিজ্ঞেস করতে শুরু করলাম
-তুই কি ফোন কিনেছিস?
-না আপি কিনি নাই।
ঠাস করে গালে একটা চড় লাগিয়ে দিলাম
-সত্যি কিনি নাই টাকা কোথায় পাব।

ও বলছে আর কান্না করছে।ওর কথা শুনে আমারও মনে হল সত্যি এত দামি ফোন কেনার টাকা কোথায় পাবে?!!
আমি পরে নিজেকে ঠান্ডা করলাম তারপর আদর করতে শুরু করলাম।কিন্তু আমার মতোই আমার বোন একটা কথা পর্যন্ত বলছে না আমার সাথে।

তাই আমি ওকে খুশি করার জন্য চিকেন ফ্রাই বানাতে রান্নাঘরে গেলাম।ফোন টা তখনো আমার হাতে। রান্নাঘরে
যাবার পথে ফোনে টুং করে মেসেজ আসলো।আমি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম ফোনে লক নেই। মেসেজটা দেখার জন্য মেসেঞ্জারে ঢুকলাম। যে মেসেজ পাঠিয়েছে তার নিকনেম সিক্রেট দিয়ে সেভ করা।সে মেসেজে পাঠিয়েছে

-জান তুমি কোথায়?
আমিও টুং করে মেসেজের উত্তর দিলাম জানতে এটা ইফানের নাকি
-এই তো তোমার জান!! শুধু জান বলতে বলতে আমার নাম ভুলে গিয়েছ নাকি?
-না জান তোমার নামের ট্যাটু করিয়েছি পিঠে যাতে নাম না ভুলি।
মেয়েটার কথা শুনে যেন আমি আসমানে উঠে গেলাম। একজনকে কতটা না ভালোবাসলে ট্যাটু করায়!
আমিও উত্তর বললাম

-জানি জান তা ওই ট্যাটুর একটা পিক দাও তো দেখি।

মেয়েটা ছবিটা পাঠানোর সাথে সাথে আমি যেই ছবিটা দেখলাম আমার বুকে যেন ব্যথা শুরু হতে লাগল। চোখের কাজল যেন চোখের জলে মিশে গাল থেকে বেয়ে টপটপ করে পড়তে শুরু করল।

মেয়েটার হাতে ইফানের নাম ইংলিশে ওর শরীরে খোদাই করা।

তার মানে আমি যাকে এত ভালোবাসি যার বাচ্চার মা হতে যাচ্ছি সে আমাকে এত বড় ধোকা দিচ্ছিল।

ইফান আর আমার বিয়ে পারিবারিকভাবে হয়েছে ঠিকই কিন্তু বিয়ের পর থেকে ওর আমার সম্পর্ক লাভ মেরেজ কাপলদের থেকেও বেশ রোমান্টিক ছিল। যেই দেখতো বলত লাভ বার্ড।

কিন্তু এই ইফান আমাকে ধোকা দিচ্ছে!!ঘরে গিয়ে দরজা আটকিয়ে হাউমাউ করে কাদতে লাগলাম।তখনি অর্পা আমার বোন দরজায় টক্কা দিচ্ছে আর জিজ্ঞেস করছে

-এই আপু কাদছিস কেন?দরজা খোল।
আমি যেন কিছু বলেতে পারছিলাম না এক কথায় বোবা হয়ে গিয়েছিলাম।
তখনি আবার ওই মেয়ের মেসেজ

-এই জান তোমার ওই বউকে ডিভোর্স দিবে কবে??কোর্টে না এপ্লাই করেছিলে?কি খবর? এটা দেখে যেন চোখের কান্নাও থেমে গিয়েছিল এত বড় ধাক্কা খেয়েছিলাম।
আমি মেসেজ দিয়ে দিলাম
-মানে?

-মানে আবার কি?? তুমি না তোমার কালো মোটা বউকে পছন্দ কর না তাই ডিভোর্স দিবে।

আমি এই মেসেজটা দেখে তাস্কি খেয়ে গেলাম আমি শ্যমলা আর বিয়ের পর মোটা হয়েছি আর ইফান ফর্সা। ইফান কখনোই আমাকে এটা নিয়ে কিছু বলে নেই তার মানে ও মনে মনে আমাকে নিয়ে এটা ভাবে!!তার মানে এতদিন তাসের ঘরে ছিলাম?

আমি তখনোই ডিসাইড করে ফেলেছি ইফান যখন আমার না ওকে আর কারো হতে দিব না। দরজা খুলে রান্নাঘরের ছুড়ি নিয়ে আসলাম। ওকে হত্যা করে দরকার হলে জেলে যাব তাও ওকে আমার বিশ্বাস ভাঙার মুল্য দিতে হবে হাতের পিছনে ছুড়ি লুকিয়ে ৩ঘন্টা ধরে বসে আছি। অবশেষে ইফান বাসায় ফিরল। যেই জায়গা ফোন ছিল সেখানেই রেখে দিয়েছি।ইফান ঘরে ডুকে চেহারার বিধস্ত অবস্থা দেখে কাছে এসে জিজ্ঞেস করল সে কি মায়ায় গালে হাত দিয়ে

-ওমা,কলিমা একি অবস্থা করে রেখেছ নিজের??কি হয়েছে?

ওর এই ভালোবাসায় আগে ভালবাসা আসত।কিন্তু আজ ঘৃনায় চোখ দিয়ে পানি পড়ছে কিভাবে ঠকছিলাম আমি তা ভেবে।

ও আমার কান্না দেখে আমাকে জড়িয়ে ধরল।আমিও আস্তে আস্তে ছুড়িটা হাতে নিলাম আজ ওকে আমাকে ঠকানোর মুল্য দিতে হবে তখনি ও বলল

-সরি, কলি তোমার সাথে প্রাংক করা ঠিক হয় নেই।

আমি তখনি থেমে গেলাম।আমিও জিজ্ঞেস করলাম

-মানে??
-মানে এই যে তোমার সাথে প্রাংক করা ঠিক হয় নেই ফোনটা দিয়ে।
-কি রকম প্রাংক??
-তোমাকে যে ওই ফোনটা দিয়ে মেসেজ করছিলাম
ওর কথা শুনে হাত থেকে টুপ করে ছুড়িটা পড়ে গেল।
ও পিছনে ফিরে ছুড়ি দেখে জিজ্ঞেস করল
-কি ব্যপার হাতে ছুড়ি কেন?

-তুমি এইসব রাখ।এত্তবড় প্রাংক আমার সাথে কেন করলে? কারন টা কি? সত্যি কি ওটা প্রাংক ছিল নাকি শাক দিয়ে মাছ ঢাকছ কোনটা আর ওই ছবি?? ওটা কি মিথ্যে?

ইফান আমাকে খাটের পাশে বসাল শান্ত করার চেষ্টা করছিল।রুমের দরজার কোনে অর্পা দাড়িয়ে কথা শুনছে।
আমাকে ইফান বসিয়ে বলল

-আরে বাবা!! এতগুলো কোশ্চেন তুমি শান্ত হয়ে বস তো।এমনি তুমি মা হতে যাচ্ছ এত চাপ নেওয়া ঠিক না।
আমি একটু আশ্চার্য হলাম ইফান কিভাবে জানল আমি মা হতে যাচ্ছি?? আমি তো ওকে সারপ্রাইজ দিব বলে প্লান করছিলাম কিন্তু পরে তো ফোনটা পেলাম।

-তুমি কিভাবে জানলে আমি মা হতে যাচ্ছি??

ইফান আমার কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠল আর বলল,

-ডাক্তার ফোন দিয়েছিল আমাকে কারণ রিপোর্ট ওইখানে রেখে এসেছ। ২দিন হল তুমি জানো মা হতে যাচ্ছ তাও আমাকে বলছিলে না তাই আমিও প্রাংক করলাম।আর ওই ছবি তো এডিট করা যায়। সিক্রেটের আইডিও আমার। আর ফোনটা আমার এক ফ্রেন্ডের নষ্ট হয়েছিল ঠিক করতে দিয়েছিল।

-কি বলছ??ফোনটা তাহলে খাটের নিচে কেন ছিল??
-ওইটা আমিই রেখেছি যাতে তুমি ভাব আমি লুকাচ্ছি।

আমি কিছুক্ষন গম্ভীরভাবে ওর দিকে তাকিয়ে ওকে বুঝতে চেষ্টা করলাম ও কি সত্যি বলছে নাকি মিথ্যাটাকে সত্যি করার চেষ্টা করছে?

তখনি অর্পা এসে ইফানকে বলল

-ভাইয়া আপনার প্রাংকের জন্য আজকে কলিমা আপু আমাকে সেই মাইর দিয়েছে।সব আপনার দোষ।
-সরি অর্পা আপু। চল সবাই মিলে বাহিরে খেতে যাই।

আমি কথাটা শুনে কিছু না বলেই ওয়াশরুমে চলে গেলাম।মুখ পানি দিয়ে ধুচ্ছি আর ভাবছি সত্যি কি এটা প্রাংক ছিল??আমার কেন জানি ইফানের কথাটা বিশ্বাস হচ্ছিল না। আমার বিশ্বাসটা যে নড়বড় হয়ে গেছে।আর যদি প্রাংক ই হয় প্রেম করার প্রাংক করত ডিভোর্সের কথা কেন উঠছিল?

ওই ফোন দিয়ে আবার মেসেজ দিব ইফানের কাছে গেলেই বুঝব এটা প্রাংক।আমি ওয়াশরুমে থেকে বের হয়েই ফোনটা খুজতে লাগলাম কিন্তু পাচ্ছিলাম না। তখনি ইফান বলল

-কি খুজছ??ফোন?ওটা তো এখনি আমার ফ্রেন্ড এসে নিয়ে গেল। বসতে বললাম কিন্তু বসল না ওর নাকি কাজ আছে। কলি তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করতে পারছ না?

আমি ওর এই কথায় কিছু বলতে পারছি না হ্যাটাও বলতে পারছি না আবার নাটাও না তাই চুপ করে আছি।
কিন্তু মন বলছে ইফানকে বিশ্বাস করতে মস্তিষ্ক সেটা না করতে বলছে। ২মাস হয়ে যাচ্ছে ঘটনাটার এখন আমি কথায় কথায় ওকে সন্দেহ করি। কে ফোন দিল কার সাথে কথা বলে তার কইফৎ চাই। আর ও সুন্দরভাবে তার কইফৎ দেয়।

কিন্তু আজকে ওকে অফিসে লাঞ্চ দিতে যাই বাসায় ফেলে গেছে লাঞ্চটা তা দিতে যাবার সময় দেখি ও একটা মহিলার সাথে হ্যান্ডশেক করছে হেসে হেসে কথা বলছে তা দেখে রাগে লাঞ্চবক্সটা ওইখানেই রিসিপশনে রেখে চলে আসি।
ইফান বাসায় আসার পর ওর সাথে তুমুল ঝগড়া করি এক পর্যায়ে ইফানের গালে চড় লাগিয়ে দেই। ইফান রাগে

-তোমার এইরকম ব্যবহার আমার ভালো লাগে না তুমি মা হতে যাচ্ছ তাই মুড সুইয়িংভেবে কিছু বলছি না সেই ঘটনা কেন ভুলছ না!

আমি বিদেশের ক্লাইন্টের সাথে কাজ করি তাদের সাথে কি রাগে রাগে কথা বলব?

এই বলে ইফান ঘর থেকে বের হয়ে গেল। আমার নিজেরেও অনুশোচনা হচ্ছিল ও তো ঠিকই বলছে। পরে ইফান বাড়ি আসার পর ওর কাছে হাতজোড় করে মাফ চাইলাম। ও আমাকে হাসিমনে মাফ করে দিল।আমি ওকে বিশ্বাস করতে শুরু করলাম আগের মত।এরপর ১মাস পর আমার বোন অর্পা একদিন কলেজ থেকে ফিরে আমাকে বলল

-আপু জানিস ভাইয়াকে আজকে একটা মেয়ের সাথে অটো তে দেখেছি মেয়েটা ভাইয়ার গালে চুমু দিয়েছিল।
আমি ওর কথা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আর যাই হোক ওকে সন্দেহ করব না।

কয়েকদিন পর পাশের বাড়ির ভাবীও আমাকে বলল যে ইফানকে কোন মেয়ের সাথে জানি দেখেছিল।আমি রীতিমত তাকে কথা শুনিয়ে দিয়েছি।একবার আমি ইফানকে সন্দেহ করে ওকে কষ্ট দিয়েছি আর না।

এদিকে আমার ৫মাস শুরু হয়ে গেল গর্ভবতী হিসেবে।তাই মা আমাকে আর অর্পাকে তার কাছে নিয়ে গেল আমার দেখাশোনার জন্য। ইফান বাসায় থাকত মাঝেমধ্যে অফিস শেষে আমার সাথে দেখা করতে যেত। একদিন আমার কিছু জামা আনতে বাসায় গেলাম। দরজার চাবি আমার কাছে ছিল।দরজা চাবি খুলে যেই বেডরুমে যাই দেখি ইফান আর একটা মেয়ে যাকে অফিসে দেখেছিলাম আমার চাঁদর গায়ে পেচিয়ে দুইজন দুইজনকে জড়িয়ে শুয়ে আছে।মেয়েটা উপুত করে শুয়ে আছে তাই তার ঘাড়ে ওই ট্যাটু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তার মানে ওইদিন ইফান আমাকে মিথ্যা বলেছিল আবার ওকে বিশ্বাস করে ঠকেছি!!!

আমি মুখ চেপে কান্না করতে শুরু করলাম আর ডাইনিং টেবিলে গিয়ে চেয়ারে বসলাম।সাথে সাথে ফলের উপর সেই ছুড়ি টা দেখে ইচ্ছা করছিল ওইটা দিয়ে ইফানের শরীর ক্ষত বিক্ষত করে দেই। পরক্ষনেই ভাবলাম এতে ও আমার বিশ্বাস ভাঙার শাস্তি পাবে না।

পরেই চোখ গেল রান্না করা খাবারের উপর চিংড়ির মালাইকারীর উপর। ইফানের ভয়ানক এলার্জি তাই ও খাবে প্রশ্নই উঠে না। মাথায় বুদ্ধি আটলাম ওই মেয়েটাকেও শাস্তি পেতে হবে। চুপি চুপি যেয়ে রান্নাঘরের ইদুরের জন্য যেই বিষ এনেছিলাম তা ওই তরকারীতে দিয়ে দিলাম। আমি হাতের ছাপ পরিষ্কার করে ওই ব্লিডিং এর সবার থেকে লুকিয়ে বাসায় চলে এলাম। ইফান আমাকে ডিভোর্স দিতে চেয়েছিল ও যখন আমার না আর কারো হতে পারবে না।
বাসায় এসে দরজা দিয়ে কান্না করছিলাম আজ ইফান আমাকে আসামি করে দিল ।

সন্ধ্যায় বাসায় ফোন আসল ইফানকে পুলিশে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ও নাকি কোন মেয়েকে ফ্লাটে এনে বিষ খাইয়েছে।
আমি সত্যি খুব খুশি হয়েছিলাম। সবাই ওর জন্য উকিল খুজছিল কিন্তু আমি ওর সাথে একবারের মত দেখা করতে যাই নাই। কেন যাব?যে তার বাচ্চার মাকে ঠকাতে পারে সে সব করতে পারে।

পরে কেসের রায় হল ইফানের যাবতজীবন কারাদন্ড হয়েছে শুধু সেই রায়ের দিন দেখা করতে গিয়েছিলাম।
ইফান আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগল বলল

-বিশ্বাস কর কলি আমি খুন করি নাই।
আমি ওর কথা শুনে মুচকি হাসি দিয়ে বললাম
-বল কি বিশ্বাস করব?তুমি আমাকে ঠকাও নাই নাকি খুন কর নাই?
ইফান আমার কথা শুনে মাথা নিচু করে বলল
-আমি তোমার বাচ্চার বাবা

-একদম না। আমার বাচ্চার বাবা ওইদিন ই মরে গিয়েছিল যেদিন ফোনের কথাগুলো মিথ্যে বলেছিলে।আমার বাচ্চা এটা। আমার বাচ্চা জন্মালে বলব তার বাবা মারা গিয়েছে। আমি চাই না সে জানুক কিভাবে তার মাকে তুমি ঠকিয়েছ আমি চাই না ও ওর বাবাকে ঘৃনা করুক। আলমারিতে যেই ডিভোর্স পেপার লুকিয়ে রেখেছিলে তাতে সই করে দিয়েছি।তুমি মুক্ত কিন্তু দেখ তুমি এখন আমার হতে পার নাই যখন আর কারো হতেও পারবে না।

আমার একটা মেয়ে হয়েছে নাম রেখেছি অপরাজিতা যে ওর মায়ের মত হবে কখনো হারবে না অন্য মেয়েদের মত বুকে কষ্ট জমিয়ে রাখবে না।আমি এখন জব করি নিজের মেয়েকে সামলানোর জন্য।হয়ত আর কখনো কাউকে বিশ্বাস করতে পারব না কিন্তু নিজেকে আরো আত্মবিশ্বাসী করতে পেরেছি।

কখনো কাউকে যেমন অতিরিক্ত সন্দেহ করতে হয় না তেমন অন্ধবিশ্বাসও করতে হয় না। বিশ্বাস আর সন্দেহ নিয়েই জীবনসংগী।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত