না এ হতে পারে না। অসম্ভব। নিজ হাতে ওকে মাটি দিয়াছি। ফিরতে পারে না ও। মৃতরা ফেরে না।
এই যে আমার দুটি হাত। এই হাত দুটি দিয়ে খুন করেছি ওকে। এক বিকেলে।
আমি রমেল। ঢাকা থাকি। একা একটা ফ্ল্যাটে। একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে পরি। মোটামুটি মানের ছাত্র। বেশ ভালই ছিলাম একা একা। তখন আমার জীবনে আসে শ্যামলী। বেশ ভালো আর সুন্দরী ছিল মেয়েটা। আমার সব ব্যাপারে খেয়াল রাখত। বেশ ভালই ছিলাম অর সাথে।
হঠাৎ কি যেন হল। একদিন প্রচন্ড রেগে গেল ও। সম্পর্কটা ভেঙ্গে ফেলতে চেয়েছিল। আমি হতভম্ব হয়ে তখন কিছু বলিনি। বাসায় গিয়ে থান্দা মাথায় পুর ব্যাপারটা চিন্তা করলাম। প্রায় সপ্তাহখানেক পরে ওকে বললাম আমার সাথে দেখা করতে। অর জিনিসগুলো ফিরিয়ে দেব তাই। প্রথমে রাজি হয়নি কিন্তু পরবরতিতে রাজি হয়ে যায়।
এরপর একটা ক্যাফেতে আসে ও। বলে সবদিয়ে দিতে। আমি বলি এত জিনিস আনা সম্ভব চিলি না। তাই বাসায় রেখে এসেছি। ওকে সাথে আসতে বলি। মানা করে দেয়। শেষবারের মত যেতে বলি। অনেক পরে রাজি হয়।
বিকেলে তখন আমার বাসায় নিয়ে আসি। এসেই যাওয়ার জন্য বলতে থাকে। বিভিন্নভাবে বঝানর পরে কিছু সময়ের জন্য বসতে রাজি হয়। সব জিনিস জা ও দিয়েছিল তা ওর সামনে দেই। ও দেখতে থাকে। তখন ওর চেহারাতা দেখছিলাম। স্নিগ্ধ কোমল চেহারা।
শেষ চেষ্টা করি ওকে থামানোর। কিন্তু ও কিছুতেই মানল না। অনেকবার চেষ্টা করেচিলাম। অবশেষে ওকে থামানোর আর কোন উপায় দেখলাম না। চটে গেলাম। রেগে বোঝাতে গেলাম। অবস্থা তখন আর খারাপ হোল।
ওর কথাগুলো শুনে নিয়ন্ত্রন হারা হয়ে গেলাম। হাতের কাছে একটা হাতুরি ছিল। দিকগিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে হাতুরিতা দিয়ে ওরমাথায় একটা বাড়ি দেই। ফিনকি দেয়া রক্ত আমার সাদা শার্টটা লাল করে দেয়। ওর দৃষ্টিটা হতবাক ছিল। আমি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে ছিলাম ওর নিশপ্রভ হয়ে যাওয়া লাশটা দেখে। চিৎকার দেয়ার সময়টুকুও পায়নি ও।
প্রায় ঘণ্টাখানের বসে ছিলাম ওর পাশে। কি করব বুঝতে পারছিলাম না। হতভম্ব ভাবটা কাটতেই মনে হোল পুলিশ এড়াতে হবে। নইলে বাঁচতে পারব না। লাশটা আভাবে বের করতে পারব না। ধরা পরে যাব। এটা চিন্তাকরে রান্নাঘর থাকে চাপাতিটা নিয়েএলাম।
ধিরে ধিরে ওর শরীরের একটা একটা অংশ কেতে ফেললাম। পাকে করলাম ছয় টুকরা, হাত চার টুকরা। মাথাটা হাতুরি দেয়া গুড়ো গুড়ো করলাম। এভাবে ওর পুর শরীরটাকে একশ টুকরা করলাম। আমার বাগতায় ভরলাম সব। যেটা নিয়ে আমি গ্রামের বাড়ি যাই।
শার্টটাও সাথে দিয়ে দেই। রাত বারটার দিকে যাই সদরঘাট। বুড়িগঙ্গার পারে গিয়ে ফেলে দেই নদীর মাঝে।
বাসায় ফিরে আসতে আসতে রাত দুটো বেজে যায়। অনেকটা শান্তি পাই বাসায় এসে। হঠাৎ রান্নাঘরে কিসেরযেন আওয়াজ শুনতে পাই। গিয়ে দেখি কিছু নেই। মনের ভুল ভেবে উরিয়ে দেই। এরপর আর আওয়াজ শুনতে পাই। ভয়লাগতে শুরু করে। জলদি শুয়ে পরি। সুতে সুতে চারতা বেজে যায়।
প্রায় দশটায় ঘুম ভাঙ্গে। আজেবাজেসপ্ন দেখেছিলাম। ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পরেছিলাম। সন্ধায় বাসায় আসি। আসেই কেমন যেন নিশ্তব্ধতা গ্রাস করে। কেমন যেন লাগছিল।
জলদি খেয়ে দেয়ে শুয়ে পরি। প্রায় রাত দুটোর দিকে, ঘুম ভেঙ্গে যায়। কেমন যেন একটা আবহাওয়া। দম বন্ধ করা।
কে যেন আমার নাম ধরে ডাকছে। আকুল কণ্ঠে। কণ্ঠটা শ্যামলীর। তার কাছে যাওয়ার জন্য আহবান। রোজরাতেআমি এই ডাক শুনি। ঘুমতে পারি না। চোখ বন্ধ করলে বীভৎস সব দৃশ্য দেখি। কবে মুক্তি পাব এসব থেকে? এই একটি ভুলের মাশুল আর কত দেব?
শ্যামলী হারানোর সাত দিন পরে পুলিশ এই ডেয়ারিটা খুঁজে পায় রমেলের বাসা থেকে। তখন রমেলের লাশটা সিলিং থাকে ঝুলছিল। মাথাটা থেঁতলানো ছিল। কে যেন হাতুরি দিয়ে বাড়ি দিয়েছে।
********************************************সমাপ্ত***************************************