এভাবে কি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে কি দেখছো বলোতো?
– চন্দ্রাবতীর অপার সৌন্দর্য্য ছাড়া আর কি হতে পারে?
যাও তুমিও পারো বটে।
অবনীরর চাঁদপানা মুখটা লজ্জাবতীর মতো লাল টকটক করে উঠে। হাসান তখনও অবনীর দিকে তাকিয়ে আছে, চোখের পলক যেন পড়ছে নাহ।
– জোছনার সাথে তোমার কিসের এতো সান্নিধ্যতা বলো তো?
অবনী চোখ বড় করে তাকায় হাসানের দিকে, বুঝতে পারেনা হাসান কি বলতে চায়। এদিকে হাসান মৃদু হাসে।
– তা নয় তো কি? চাঁদনি রাতে তোমার সৌন্দর্য্য যে সহস্রগুণ বেড়ে যায়, আমি যে চোখ ফেরাতে পারিনাহ।
অবনী আলতো হাতে হাসানের মাথার চুলগুলো উলটেপালটে দেয়।
মৃদু বাতাসে অবনীর চুলগুলো উড়ছে, হাসানের হৃদস্পন্দন বাড়ছে। আলতো করে অবনীর কপালে চুমু এঁকে দেয় হাসান, অবনী লজ্জায় মুখ লুকায় হাসানের বুকে।
অনেকদিন হয়ে গেছে তুমি আমায় গান শুনাও নি, আজ দু’লাইন গাইবে প্লিজ….
হাসান আনমনে সুর টান দেয়-
” আকাশে ছিলো না বলে হায় চাঁদের পালকি,
তুমি হেঁটে হেঁটে সন্ধ্যায় আসোনি কালকি।
তুমি একি আমায় বন্ধু
কাল অভিলাষনি,
তুমি এসেছিলে পরশু
কাল কেনো আসোনি? ”
অবনী হাসানের হাতে হাত রাখে, হাসান খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।
কাল আসিনি বলে তুমি বড্ড রাগ করে আছো আমার উপর তাইনা?
– নাহ তো। আমি রাগ করবো কেন?
হাসান তুমি এত অবুঝ কেনো বলো তো?
– আমি তো এমনি, তুমি জানো নাহ বুঝি?
হাসান অবনীর দিকে তাকায়, খোলা ছাদের নিচে বসে মেয়েটা ঠান্ডা হাওয়ার দরুন রীতিমত কাঁপছে।
নিজের জ্যাকেট টা খুলে ওর গায়ে জড়িয়ে দেয় হাসান।
অবনী যেন পরম আবেশে হাসানের জ্যাকেটটা জাপটে ধরে আছে।
– আমার একটা কথা রাখবে অবনী?
অবনী চুপ করে আছে , চোখে হাজারো প্রশ্নজুড়ে হাসানের দিকে তাকিয়ে আছে।
হাসান ওর হাত চেপে ধরে, সাথে ভরসার ছাপ ওর নয়নজুড়ে। অবনীর মুখমণ্ডলে হাসির তীক্ষ্ণ রেখাটা প্রসারিত হচ্ছে।
– কথা দাও, প্রতি চাঁদনি রাতে এভাবেই আমার সাথে জোছনা গায়ে মাখিয়ে নিবে?
অবনী মাথা নাড়ে, চোখজোড়া ওর ছলছল করছে।
হাসান পরিতৃপ্তির হাসি হাসে, হৃদয়জুড়ে প্রশান্তির ছায়া।
কতটা সময় পেরিয়ে গেছে হাসানের খেয়াল নেই, ও ধীর পদক্ষেপে সিঁড়ির দিকে অগ্রসর হয়। শুধু পড়ে থাকে ওর জ্যাকেট আর সিগারেটের পেছনের ফিল্টার..
মস্তিষ্কজুড়ে স্মৃতিমিশ্রত ভাবাবেগ হাসানের-
অবনী- আমি তোমার জীবনের জোছনার আলোর ন্যায়, যে তার সম্পূর্ণ অস্তিত্ব নিয়ে তোমাতেই মিশে আছে।
হাসান- উহু, তুমি যে আমার আকাশের ওই একফালি চাঁদ, যার সৌন্দর্য্য অবলোকনের কোনো অন্ত নেই কখনোই।
দীর্ঘনিঃশ্বাস…..
………………………………………………………………….( সমাপ্ত)…………………………………………………………