জেলে ও দৈত্য

জেলে ও দৈত্য

এক গ্রামে বাস করত এক গরীব জেলে। সে বাস করত এক নদীর ধারে। কোনোভাবে সে দিন কাটাত। তার নিয়ম ছিল দিনে পাচ বার নদীতে জাল ফেলবে। একদিন দুপুরে সে গেছে মাছ ধরতে।

প্রথমবার জালে খুব ভারী একটা জিনিস আটকেছে। অনেক কষ্ট এ সে তা তুলল। সে খুব অবাক!

একটা বড় গাছের গুড়ি। দ্বিতীয় বার উঠল মরা গাধা। তৃতীয় বার উঠল কাদা ভর্তি হাড়ি। চতুর্থ বার উঠল ভাংগা বাসন কোসন। মনের দুঃখ নিয়ে শেষ বার এর মতো জাল ফেলল। উঠল একটা তামার কলসি।

সে ভাবল, কলসিটা বেচে মনে হয় চলবে। হয়তো তার বেচা মাছগুলোর দাম থেকেও বেশি হতে পারে। কলসিটার মুখ শক্ত করে আটকানো। সেখানে লাগানো একটা সিলমোহর। অনেক কষ্ট এ খুলল সেটা।সেখান থেকে বেরিয়ে এল ধোয়া। তারপর যা ঘটল তা সে বিশ্বাস করতে পারল না। একটা বড় দৈত্য বেরিয়ে এলো।

সে বলল, শত শত বছর পর বেরিয়ে এলাম। এবার তোমার নিস্তার নেই।

জেলে বলল, আমি তো তোমাকে সাহায্য করেছি। তাহলে তুমি আমাকে মারবে কেন???

তখন দৈত্যটা সব খুলে বলল। এক দুষ্ট লোক তাকে পরাজিত করে তাকে এই কলসে পুরে শক্ত করে বেধে ফেলে দেয়। তখন দৈত্যটা প্রতিজ্ঞা করল ১০০ বছরের মদ্ধে যে তাকে উদ্ধার করবে তাকে অনেক ধন রত্ন দিবে।

কিন্তু কেও আসে নি। পরে আবার প্রতিজ্ঞা করে কেও তাকে উদ্ধার করলে তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী মানুষ বানিয়ে দিবে। তাও কেও আসে নি। পরে সে প্রতিজ্ঞা করে যে তাকে উদ্ধার করবে তাকে সে মেরে ফেলবে এখন তুমি আমাকে উদ্ধার করেছ। তাই তোমাকে আমার হাতে মরতে হবে জেলে টা সাহস হারাল না।

সে মনে মনে পরিকল্পনা করল। একটা বুদ্ধি পেয়েছে। সে বলল, এ ছি। কি  মিথ্যাবাদী।তুমি কোনো দৈত্য না।তুমি জাদুকর। তোমার যা শরীর তাতে তোমার একটা আংগুল ও ঢুকবে না। দৈত্যটা বলল কি!

আমাকে মিথ্যাবাদী বলা দেখ তবে। বলেই দৈত্যতা কলসের ভিতর ঢুকে গেল। তখন জেলে টা কলসের মুখ বন্ধ করে দিল। তখন দৈত্য বলল আমাকে ছেড়ে দাও। আমি তোমাকে অনেক ধন রত্ন দিব। কিন্তু এবার জেলের মন আর ভিজল না।

তখন জেলে বলল, তুমি আমাকে আবার মারবে। তোমাকে আর ছাড়ছি না। পরে দৈত্যটা অনেক কান্না করল। তখন জেলে বলল বাদশাহ উনান আর হেকিম রায়ানের গল্প টা কি শুনেছ???

দৈত্য বলল না। জেলে বলল শোনো তবে। বাদশাহ উনান ছিলেন নির্মম বাদশাহ। একদিন সে অসুস্থ হয়ে যায়।অনেক বৈদ্য ও তাকে সারাতে পারে নি। শেষ এ হাকিম রায়ান এসে চেষ্টা করে এবং রোগ সারাতে পারেন।

এতে বাদশাহ খুব খুশি হয় এবং তাকে অনেক টাকা-পয়সা দেন।পরে তাকে তার রাজ্যে রেখে দেন। এতে অন্যদের হিংসা হতো। অন্যরা বাদশাহ এর কানে মিত্থা কথা বলত হেকিমের নামে। তারা বলত সে হেকিম নয়। সে জাদুকর।জাদু করে আপনার রোগ সেরেছেল।বাদশাহ তা বিশ্বাস করতেন না। শেষ এ বিশ্বাস করেন এবং হেকিমের প্রাণদণ্ড এর শাস্তি দেন।হেকিম তা মাথা পেতে নিল। শুধু একটা অনুরোধ করল বাদশাহি এর কাছে।

সে বলেছিল ১ দিন সময় দিতে।বাদশাহ তা দিলেন। ১ দিন পর তার ফাসির আগে হেকিম বাদশাহ কে একটা বই দেন। এবং বলেন ওর ওর ফাসির পর যেন বইটা খুলে। কিন্তু তার তর সইছে না। তাই তাড়াতাড়ি হেকিমের ফাসি হলো। তারপর বইটা সে খুলল। সব পেজ সাদা। বাদশাহ কিছু বুঝে নি। যখন হেকিম মরে ভূত হয়ে গেছে তখন বাদশাহ জানল, বইয়ে বিষ লাগানো। তাতে বাদশাহ সেখানেই ইন্তেকাল করল। এবার বুঝেছ???

জেলে বলল। সব বুঝেছি। আমাকে ছেঁড়ে দেও। কথা দিচ্ছি তোমাকে অনেক টাকা দিব। কিন্তু জেলে তা মানল না।শেষ এ তাকে পানিতে ফেলে দিল। এই গল্পটা শুনে অনেকের ই হয়তো কিছুটা হলেও শিক্ষা হয়েছে।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত