মানুষকে কখন অবহেলা করতে নেই

মানুষকে কখন অবহেলা করতে নেই

কোনো এক গরীব ছেলে ভালবাসত একটা বড়লোক মেয়েকে।তাড়া দুজন একই কলেজে পড়ালেখা করত।ছেলেটা রেগুলা মেয়েটাকে ফল করত।
কিন্তু কখন ভালবাসার কথাটা মেয়েটাকে বলার সাহস পায়নি।যদি মেয়েটা ছেলেটাকে ফিরিয়ে দেয়।
ছেলেটার নাম ছিল অমিত,আর মেয়েটার নাম ছিল ফারিয়া।মেয়েটা বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে যখন যা বলে তাই করে।আর ছেলে একটা গরীব ঘরের ছেলে,অনেক কষ্ট করে নিজের লেখাপড়া চালায়।
দেখতে দেখতে এভাবে সাতটা মাস চলে গেল।অনেক বার বলার চেষ্টা করে অমিত তার ভালবাসার কথাটা,কিন্তু সামনে গিয়ে আর বলার সাহসটা পায়নি।
কিন্তু কাল অমিত কি যেন ভেবে ঠিক করল যা হবার হবে কাল ফারিয়াকে তার ভালবাসার কথাটা বলতেই হবে।
তাই অমিত ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি করেই চলে গেল কলেজে।গিয়ে উপেক্ষা করতে লাগল কখন ফারিয়া কলেজে আসবে।প্রায় বিশ মিনিট পর ফারিয়া কলেজে আসল।কিন্তু সমস্যা একটা ফারিয়ার সাথে তার বান্ধবীরাও।
তাই অমিত ফারিয়ার সামনে গিয়ে বলল……
–এই যে শুনুন!(অমিত)
–জ্বী বলুন?(ফারিয়া)
–আপনার সাথে না আমার কিছু কথা আছিল!
–হ্যা বলুন?
–এখানে বলা যাবে না,একটু ওই পাশে আসলে ভাল হত!
–আচ্ছা চলুন।
||
তারপর ফারিয়া তার বান্ধবীদের সামনে আগাতে বলে অমিত এর সাথে একটা নিরিবীলি গাছের নিচে গেল।তারপর ফারিয়া বলল…….
–হুম বলুন কি বলবেন?
–আসলে আমি না আপনাকে অনেক আগে থেকে ভালবাসি কিন্তু বলার সাহস পাইনি যদি ফিরিয়ে দেন।কিন্তু আমি আর না পেরে আজ বলে দিলাম।আমি সত্যি আপনাকে অনেক ভালবাসি!
(অমিত আর কিছু বলতে পারল না তার আগেই ফারিয়া বলতে শুরু করল)
–ওয়েট ওয়েট কি বললে আমাকে ভালবাস,,,হাহাহা।আ্ছা আমাকে ভালবাস তা বিয়ের পর আমাকে কি খাওয়াবে।দরলাম তোমার মাসিক বেতন হবে ২০০০০ তাও মনে হয় না,বললাম আর কি।
তুমি জান আমার প্রতি মাসে শপিং করতেই চলে যায় ২০-৩০ হাজার টাকা।
এখন বল গোমার সাথে কি আমার সম্পর্ক করা উচিত।তুমি এটা ভাবলে কিভাবে আমি তোমাকে ভালবাসব।
শুধু শুধু এত কষ্ট করে লাভ নেই,তার চেয়ে বরং তুমি আমাকে ভুলে তোমার লেভেলের কাওকে ভালবেসে বিয়ে করে নাও।
||
এটা বলেই মেয়েটা চলে গেল।আর ছেলেটা কাদঁতে কাদঁতে বাসায় চলে গেল।ছেলেটা হয়ত সেদিন এই আত্মহত্যা করত কিন্তু না তার বাবা মার মুখের দিকে তাকিয়ে তা করল না।
.
.
দশ বছর হয়ে গেল আজও ছেলেটা মেয়েটাকে ভুলতে পারেনি।এখন ছেলেটা মেয়েটার কথা ভেবে বিয়ে করেনি।
হঠাৎ একদিন ছেলেটা শপিং করতে কোনো এক শপিং মলে যায়।আর সেখানেই তাদের দুজনের দেখা।
দুজন দুজনকে দেখেই চিনতে পেরে যায়।
মেয়েটা ছেলেটাকে দেখেই তার সামনে এসে বলে।
–আরে তুমি,,,কেমন আছ,আশা করি ভালই আছ।তুমি জান আমি এখন বিবাহীতা।
আর আমার হাসবেন্ড কে জান নাম করা একজন ব্যাবসায়ী।
আর তার প্রতি মাসের ইনকাম কত জান দুই লাখ টাকা।তুমিত তা বুধয় চোখেও দেখছি।আর সে দেখতেও অনেক স্মার্ট।
ছেলেটা মেয়েটার কথা শুনে চোখে পানি গুলো টলটল করতে লাগল।কারন ওর কথায় না এত বছর পর তার ভালবাসার মানুষটাকে দেখতে পেল।
কিছু সমস পর কোথায় থেকে একটা লোক ফারিয়াকে নিতে আসল।সে আর কেও না ফারিয়ার হাসব্যান্ড।আর তখনই ড়ারিয়া তার হাসব্যান্ড এর সাথে অমিত এর পরিচয় করিয়ে দিতে যাবে,তখনই ড়ারিয়ার হাসব্যান্ড বলল…….
–আরে স্যার আপনি এখানে?ভালই হল অনেকদিন বললাম আমার মিসেস এর সাথে পরিচয় করাতে আপনাকে আজ তা সামনা সামনি হয়েই যাবে।স্যার এই হল আমার মিসেস, ফারিয়া।
ফারিয়া এই হল আমার স্যার,যার কথা বলছিলাম না তোমাকে।ওনার সাথেই আমার নতুন প্রজেক্ট পেয়েছি যা টোটাল দুই কোটি টাকার প্রোজেক্ট।
কিন্তু তোমাকে বলছিলাম না স্যার একটা মেয়েকে অনেক ভালবাসতেন।
কিন্তু ভাগ্যের কারনে তিনি থাকে পাননি।একারনে স্যার এখন বিয়ে করেন নি।
এখনকার দিনে কে এমন করে ভালবাসতে পারে বল!
(ফারিয়া তার হাসব্যান্ড এর মুখে এমন কথা শুনে একদম স্তব্ধ হয়ে গেল।কোনো কথাই তার মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না।শুধু দুচোখ বেয়ে চোখের সেই পানি গুলো ঝরতে লাগল।হয়ত ফারিয়া ভাবতে লাগল জীবনে অনেক বড় একটা ভুল করে ফেলেছি।)
জীবন খুব ছোট নয়,তাই নিজের উপর খুব বেশি গর্ববোধ করে অন্যকে ছুঁড়ে ফেল না।অন্যের ভালবাসার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে শেখ!

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত